,

প্রতিকী ছবি

হবিগঞ্জে বন্যা নিয়ন্ত্রণে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন

সংবাদদাতা:: হবিগঞ্জে বন্যা নিয়ন্ত্রণে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে। দুই বছরের গবেষণায় এটি বেশ কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিতও হয়েছে। এরই মধ্যে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল সংক্রান্ত এবং নাগরিক সেবায় সেরা উদ্ভাবনের পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন এর উদ্ভাবক। গবেষণার শুরুতে প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে মাধবপুরের সোনাই নদীতে এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। ওই পদ্ধতি প্রয়োগের ফলে অধিকতর দুর্বল প্রতি বছরে ভাঙনের শিকার, যা দিনে দিনে শুধু মজবুত হয়েছে। এ ব্যাপারে উদ্ভাবক হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলামের দাবি, ‘জিওব্যাগে বালুভর্তি করে বাঁধের মাঝখানে ঢুকিয়ে দিলে এটি ১০০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকবে। বস্তাটি যদি সবসময় মাটি বা পানির নিচে থাকে তবে তাতে পচন ধরবে না।’ তিনি বলেন, ‘যেখানে প্রচলিত পদ্ধতিতে মাঝারি ধরনের টেকসই বাঁধ নির্মাণ করতে প্রতি মিটারে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়, সেখানে নতুন পদ্ধতিতে প্রতি মিটারে খরচ হবে মাত্র ৮ হাজার টাকা বা তার চেয়েও কম। এখানে দুটি সুবিধা। একদিকে টেকসই বাঁধ হচ্ছে। অন্যদিকে যেহেতু জিও ব্যাগে বালু ব্যবহার করা হচ্ছে, তাই নদী খনন করে তার বালু ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। এতে নদীও খনন হচ্ছে আবার বাঁধও শক্তিশালী। এর সঙ্গে নদী থেকে পানি অপসারণের একটি নতুন পদ্ধতি যুক্ত হচ্ছে।

জানা যায়, হবিগঞ্জে আবাদযোগ্য সমতল ভূমির পরিমাণ এক লাখ ৫৪ হাজার ৯৫৩ হেক্টর। ২২ লাখ জনসংখ্যার এই জেলায় খাদ্য চাহিদা পূরণে স্বল্প জমিতে অধিক ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে আধুনিক কৃষি পদ্ধতি ব্যবহার যেমন আবশ্যক, তেমনি ফসল যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে পদক্ষেপ গ্রহণও জরুরি। জেলায় ৪৬২.৩০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ২৫০ কিলোমিটার ডুবন্ত বাঁধ। প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এ বাঁধ সংস্কারে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি ক্রয় করে তা সংস্কার করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে স্থায়ী পদ্ধতি আবিষ্কার কাজ শুরু করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাওহীদুল ইসলাম।

পরীক্ষায় দেখা যায়, জিওব্যাগে যদি রোদের আল্টাভায়োলেটরে না লাগে তবে তা ১০০ বছরেও পচন ধরবে না। এটি পরিবেশের ক্ষতি করবে না। দিন দিন বাঁধ শক্ত হবে, ঘাসগুলোও সুন্দর হবে। ইঁদুরও এটি কাটতে পারবে না। কারণ এটি নরম সুতা দিয়ে তৈরি। ফলে দাঁত এবং মুখে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কায় ইঁদুর তা কাটবে না। এই পদ্ধতি দুই বছর আগে মাধবপুরের অধিকতর দুর্বল এবং প্রতি বছর ভাঙনের শিকার হওয়া সুতাং নদীর বাঁধে ব্যবহার করা হয়। এ সময়ের মধ্যে সেখানে বেশ কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে পদ্ধতিটি। যেখানে প্রতি বছর সংস্কার করতে হতো, সেখানে এবার লাগেনি। বরং বাঁধটি আরও শক্ত হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর