,

আশুরার গুরুত্ব

-:মোঃ আবু তাহের চৌধুরী:-

ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ঘটনা বহুল ও গুরুত্বপূর্ণ একটি দিনের নাম “আশুরা” উম্মতে মোহাম্মদিদের কাছে শহীদে কারবালা দিন হিসাবে এই দিনটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় পালনীয় দিন। তবে তার আগেও মহান আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার মাধ্যমে এই দিনটি কে আল্লাহ বিশেষত্ব দান করেছেন। সব গুলো ঘটনাকে পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এই দিনটিতে আল্লাহ অনেক ঘটনার জন্ম দিয়ে তিনি তাঁহার পছন্দেই আশুরা কে করেছেন মহিমান্বিত।
প্রিয়, পাঠক/পাঠিকা বৃন্দ ধৈর্যের সহিত অনুধাবন করলে, আমার সংগৃহিত আলোচনা থেকে মহরম
মাসের দশ তারিখ
আশুরা’র গুরুত্ব ও মহাত্ম বিষয়ে কিছুটা জানতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
আমি কারবালার ঘটনা আলোচনার আগে, তার পুর্বে প্রগৈতিহাসিক কালে কিংবা দুনিয়া সৃষ্টি লগ্ন থেকে আশুরা তারিখে কি কি ঘটনা ঘটেছিল তাহা একে একে দৃষ্টিপাত করছি।
১। আল্লাহ তায়ালা এই আশুরাতেই আসমান, জমিন, চাঁদ, সুরুজ, গ্রহ নক্ষত্র, পাহাড়, পর্বত, সাগর মহা সাগর সৃষ্টি করেছেন। শুধু তাই নয়, পৃথিবীতে সর্ব প্রথম রহমতের বৃষ্টি বর্ষণ করেন আল্লাহ।
২। পবিত্র আসমানী কিতাব “তাওরাত” নাজিল হয়েছিল।
৩। মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) হযরত মুসা (আঃ) ও হযরত ঈশা (আঃ) এই ৩ জন নবী গণের জন্ম হয়।
৪। ক্ষমতাধর জুলুম বাজ বাদশা ফেরাউন লোহিত সাগরে ধ্বংস হয়েছিল।
৫। হযরত নূহ (আঃ) এর জাহাজ চল্লিশ দিন পর পাহাড়ের কিনারে ভীড়েছিল।
৬। হযরত ইউনুস (আ;) যে দিন মাছের পেট থেকে বের হন।
৭। হযরত ইসা (আঃ) কে আল্লাহর ইচ্ছায় যে দিন আসমানে তুলে নেন।
৮। পৃথিবীর প্রথম মানব হযরত আদম (আঃ) কে বেহেশত থেকে যে দিন দুনিয়ায় প্রেরণ করেন, এমন কি দুনিয়াতে মা হাওয়ার সাথে আদম (আঃ) এর প্রথম সাক্ষাতটি ও ঘটেছিল।
৯। হযরত আইয়ুব (আঃ) রোগ মুক্ত হয়ে উঠেছিলেন।
১০। হযরত সুলেমান (আঃ) পুনরায় রাজত্ব লাভ করেন।
১১। হযরত ইয়াকুব (আঃ) এর সাথে তাঁহার পুত্র হযরত ইউসুফ (আঃ) এর পুনরায় মিলন হয়।
১২। আল্লাহ তায়ালা হযরত ইদ্রিস (আঃ) কে জীবিত করে তাঁহার ই ইচ্ছায় জান্নাতে উঠিয়ে নেন।
১৩। কোরআন হাদিস পর্যালোচনা করলে জানাযায় এই আশুরা দিবসেই আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন কিয়ামত সংঘটিত করবেন।
সর্ব শেষে একষট্রি হিজরীতে ইয়াজিদ বাহিনীর অস্ত্রাঘাতে ইমাম হোসাইন (রাঃ) এর পরিবারের নির্মম হত্যাকান্ডের দিন এই আশুরা। ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে বাওয়াত্তর জন সঙ্গী সহ প্রিয় নবীর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রাঃ) সাহাদত বরণ করে শহীদ হন। ইসলামের জন্য সত্যের পক্ষে অকাতরে রক্তের সাগর প্রবাহিত করে ইসলামি জীবন ব্যবস্থার লক্ষ্যে বীজ বপন করেছিলেন যারা, তাদের উৎস্বর্গীকৃত জীবন ইসলামের ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। সুতরাং হোসাইনি চেতনা বহণ করার মধ্যে রয়েছে ঈমানী শক্তির উপাদান। অতপর, আল্লাহর পছন্দনীয় অনেক ঘটনার ইতিহাসের অধিকারী আশুরার গুরুত্ব উপলব্দির মাধ্যমে আমরা আমাদের স্মরণে পালনে পবিত্র আশুরাকে আরো গৌরবৌজ্জ্বল ও মহিমান্বিত করে তুলতে পারি। আসুন অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী দশই মহরম আশুরা দিবসের গুরুত্ব উপলব্দির মাধ্যমে আমরা আমাদের স্মরণে পালনে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করি এবং এর মহতি চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে দ্বীনি সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলি।


     এই বিভাগের আরো খবর