,

লাখাইয়ে অপহরনের নামে শৈলেন সরকারের নাটক, ১৩ দিনপর উদ্ধার করেছে পুলিশ

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ শায়েস্তাগঞ্জের অলিপুরে প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে চাকুরী হারিয়ে জীবিকা নির্বাহের জন্য টমটম ক্রয় করতে পরিবারের সাথে নিখোঁজ ও অপহরনের নাটক করেছেন শৈলেন সরকার (২৭) নামের এক যুবক। নিখোঁজের ১৩ দিন পর শুক্রবার দিনগত রাতে ঢাকার গাজীপুর থেকে তাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া শৈলেন সরকার লাখাই উপজেলার আগাপুর গ্রামের লিল মোহন সরকারের ছেলে। অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর সার্কেল) মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, ১ সেপ্টেম্বর সকালে তার নিজ বাড়ি থেকে অলিপুর আরএফএল কোম্পানীতে কাজ করতে যায় শৈলেন। তারপর আর বাড়িতে ফিরেনি সে। তার ব্যবহৃত মোবাইলে কল করলে কোন সংযোগ পাওয়া যায়নি। ৮ সেপ্টেম্বর শৈলেনের মামা লাখাইয়ের আগাপুর গ্রামের শ্রীনন্দ সরকার শায়েস্তাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এর কাছে গিয়ে হাউমাউ করে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন তার আপন ভাগিনা একই গ্রামের শৈলেন সরকার নিখোঁজ হয়েছে। তার কোন সদ্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। ৩ সেপ্টেম্বর তার মোবাইলে কল করে সংযোগ পাওয়া গেলেও কোন কথা না বলে ফোন কলটি কেটে দেয়। পরবর্তীতে তিনি কোম্পানীতে শৈলেনের সাথে ১৩নং সেকশনে কর্মরত ময়মনসিংহের সাইদুর রহমানকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, ১ সেপ্টেম্বর শৈলেনকে দেখেছে। একই দিন কোম্পানীর সিকিউরিটি গার্ড স্বপন কুমার ঘোষও তাকে দেখেছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে তিনি শায়েস্তাগঞ্জ থানায় একটি জিডি এন্ডি করেন শৈলেনের মামা। পরবর্তীতে থানার অফিসার শৈলেনের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারের সিডিআর বিশ্লেষণ করে দেখতে পান তার ব্যবহৃত পুরনো নাম্বারটি সর্বশেষ গাজীপুরের গরগরিয়া বাজার নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত হয়েছে। এদিকে গত ১১ সেপ্টেম্বর একটি মোবাইল নাম্বার দিয়ে শৈলেনের শ^শুরের কাছে ফোন করে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে। উক্ত টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। এ বিষয়টি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, (বিপিএম-পিপিএম) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর সার্কেল) রবিউল ইসলাম অবগত করা হয়। তারা এ বিষয়টি অবগত হয়ে শৈলেনকে উদ্ধারের জন্য থানার অফিসার ইনচার্জ ও থানায় কর্মরত এসআই কাউছার মাহমুদ তোরন, পিএসআই মোঃ আবু হানিফকে দিক নির্দেশনা প্রদান করেন এবং ২ জন এসআইকে গাজীপুর জেলায় প্রেরণ করেন। তারা ১২ সেপ্টেম্বর গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার গরগরিয়া বাজারে নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে শৈলেনের মামা ও শ্বশুরসহ যান। সেখানে গিয়ে সেখানকার থানা পুলিশের সহায়তায় সিরিরচালা গ্রামের মিজানুর রহমানের বাড়িতে তার ভাড়া রুম থেকে শৈলেনকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করার পর পুলিশ পর্যালোচনা করে দেখেন তাকে কেউ অপহরণ করেনি বরং শৈলেন সরকার অপহৃত হওয়ার নাটক সাজিয়েছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানাযায়, গত ঈদুল আযহার সময় ছুটি নিয়ে বাড়িতে গিয়ে দেরি করে তার কর্মস্থলে যোগদান করেছিল যার কারণে শৈলেন চাকুরীচ্যুত হয়েছিল। সেই জন্য টমটম গাড়ি কিনতে চেয়েছিল। কিন্তু তার হাতে কোন টাকা ছিল না বলে সে অপহৃত হওয়ার নাটক সাজিয়েছিল যাতে করে তাদের দেয়া টাকা দিয়ে সে টমটম গাড়ি কিনতে পারে। শৈলেন সরকারকে তার পরিবারের জিম্মায় প্রদান করা হয়।


     এই বিভাগের আরো খবর