,

নবীগঞ্জে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রের মৃত্যু এলাকায় নানা গুঞ্জন ॥ মামলার প্রস্তুতি

রাকিল হোসেন ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের স্বস্তিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর ছাত্র ও সাইট্যা আলমপুর গ্রামের সাহাব উদ্দিনের পুত্র ইসলাম উদ্দিন (৯) নামের এক শিশু গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটস্থ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু ঘটেছে। তার মৃত্যু নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। মৃতের পরিবার দাবী করেছেন প্রায় দেড় মাস পুর্বে স্কুলে সহপাঠীর হামলায় আহত হন ইসলাম উদ্দিন। সে কারনেই তার মৃত্যু ঘটে। তবে অভিযুক্ত সহপাঠীর পরিবার দাবী করেছেন ভিন্ন কথা। তারা বলেন, দেড় মাস আগে এ দু’ শিশুর মধ্যে বাকযুদ্ধ হয়। এক পর্যায়ে হাতাতির ঘটনা ঘটে। এর থেকে সে স্বাভাবিক ভাবে স্কুলে আসা-যাওয়া করতো। তার মৃত্যু অন্য কোন কারনে বা অসুস্থ হয়ে মারা যেতে পারে। জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার সাটিয়া আলমপুর এলাকার সাহাব উদ্দিনের ছেলে ইসলাম উদ্দিন (৯) মা’য়ের সাথে নানা বাড়ি নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের ইসলামপুর (শৈলার পাড়) গ্রামে থেকে স্বস্তিপুর প্রাইমারী স্কুলে ৩য় শ্রেণীতে পড়ালেখা করে। এবং একই ইউনিয়নের চলিতাপুর গ্রামের রুহুল আমীনের ছেলে আদনান মিয়া (১০) স্বস্তিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র। বিগত ১৬ ফেব্র“য়ারী দুপুরে স্কুলে ওই দু’ছাত্রের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বাকবিতন্ডা এবং ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এ সময় ইসলাম উদ্দিন সিটকে দেয়ালে পড়ে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয়। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলে স্বাভাবিক ভাবে স্কুলে আসা যাওয়া করে। প্রায় ২/৩ দিন পুর্বে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে প্রথমে সিলেট নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তাকে রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে অবুঝ ওই শিশু ইসলাম উদ্দিন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার হামলাকারী শিশু আদনান ও তার পরিবারের লোকদের দায়ী করছেন। অপর দিকে এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত নিহত শিশু ইসলাম উদ্দিনের মৃত দেহ স্থানীয় ইউপি অফিসের সামনে অবস্থান করছে। চেয়ারম্যান বিষয়টি আপোষে নিঃস্পত্তি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সুত্রে জানাগেছে। মৃতের পরিবার জানান, ঘটনার পরে প্রাথমিক ভাবে সাময়ীক সুস্থতা বোধ করলেও কয়েকদিন পরপরই তার মাথায় ব্রেইনে সমস্যা প্রকট আকার ধারন করে। গত কয়েকদিন পূর্বে আশংকাজনক অবস্থায় সিলেট শহরের নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে সিলেট রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে ওই শিশুটি। তবে হামলাকারী শিশুর পরিবারের লোকজন দাবী করছেন নিহত শিশুর জিবদ্দশায় প্রায় ১০/১৫দিন পূর্বে ইসলাম উদ্দিনের সুন্নতি কাজ (খতনা) করানো হয়েছিল। ওই খতনার পর থেকেই সে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করতে পারে। নিহত স্কুল ছাত্র ইসলাম উদ্দিনের নানী মমতা বেগম এ প্রতিবেদক কে বলেন, “আমার নাতী ইসলাম উদ্দিন ছোট বেলা থেকেই আমার বাড়ী থেকে লেখাপড়া করে আসছিল হামলার ঘটনার দিন আমার নাতী স্কুলে গেলে সহপাঠী স্কুল ছাত্র আদনানের বেপরোয়া হামলায় গুরুতর আহত হয়ে সে মারা গেলেও আদনানের পিতা বা তার পরিবারের কেউই কোন খুজ নেয়নি। আমার নাতীর মৃত্যুর জন্য শিশু আদনানও তার অবিভাবক দায়ী। এ ব্যাপারে ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ধর্মজিৎ দাশ বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। প্রায় দেড়মাস পুর্বে স্কুলে দু’ বাচ্ছার মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল। এখন কি কারনে মারা গেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর