,

জমানো ‘কষ্ট’ উগরে দিলেন গেইল

সময় ডেস্ক ॥ স্পিন বলটা ব্যাটসম্যানের পায়ে লাগতেই আউটের আবেদন করলেন গেইল। আম্পায়ার না করে দিতেই কেঁদে ফেললেন। নিকছ মজা বলেই মনে হলো। মাঠে থাকা আম্পায়ারও হেসে দিলেন। ব্যাপারটা ওখানেই শেষ। কিন্তু তার পরেই দক্ষিণ আফ্রিকার এনজানজি সুপার লিগকে বিদায় বলে দিলেন গেইল। সংবাদ সম্মেলন জমানো কষ্ট দিলেন উগরে। এনজানজি সুপার লিগে ক্রিস গেইল ছয় ম্যাচ খেলে ১০১ রান করেছেন।তার দল জোঝি স্টার্স জয় পায়নি এক ম্যাচেও। তাসউইন স্পার্টানসের বিপক্ষে জয়ের কাছে গিয়েও হারে গেইলরা। এরপর সংবাদ সম্মেলনে গেইল দুঃখের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘হয় কী, যখনই দুই-তিন ম্যাচে রান পাই না,  তখনই ক্রিস গেইল দলের জন্য বোঝা হয়ে যায়।’ তার ক্ষোভটা যে দক্ষিণ আফ্রিকান ফ্র্যাঞ্চাইজির ওপর বুঝতে বাকি থাকে না। পরেই গেইল নিজেকে সংযত করেন। বলেন, ‘আমি শুধু এই দলের কথাই বলছি না। এতো বছর ধরে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলছি। বিষয়টি আমি অনেকবার খেয়াল করে দেখেছি। দুই, তিন কিংবা চার ম্যাচে রান করতে না পারলেই ক্রিস গেইল দলের বোঝা হয়ে যায়। একজন ক্রিকেটারের দিকে আঙুল তোলা হয়। এরপর নিজের কারণে দলের মধ্যে অনেক দ্বন্দ্ব লেগে যাওয়ার সাক্ষী হতে হবে আপনাকে। আমি ক্রিকেট খেলে ঠিক সম্মান পাচ্ছি না। এতো বছরের অর্জন মানুষ মনে রাখেনি। ক্রিকেট খেলে আমি সম্মান পাই না।’
ক্রিকেট মাঠের গেইল ব্যাট হাতে গম্ভীর কিন্তু বিনোদনদায়ী। বিশেষ ইনিংস খেলে বিশেষ উদযাপন দেখান। ফিল্ডিংয়ে আবার নানানভাবে বিনোদন দেন গেইল। কিন্তু তার মধ্যেও জমানো অনেক কথা ছিল, ‘খেলোয়াড়, ম্যানেজমেন্ট, হেড অব ম্যানেজমেন্ট, বোর্ড মেম্বার সবার কথাই বলছি। ক্রিস গেইল কখনই কারো কাছ থেকে সম্মান পায়নি। গেইল একবার খারাপ করলেই তার ক্যারিয়ার শেষ। সে সবচেয়ে খারাপ ক্রিকেটার। তার কোন ভালো দিকই নেই। এই ব্যাপারগুলোও আমি খুব সাধারণভাবে নেয়। এগুলোর মধ্যেই তো বেঁচে আছি।’
স্পার্টানসের বিপক্ষে ১৪ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ১২২ রান তোলে গেইলের দল। কিন্তু শেষ ২৯ বলে ১৩ রান তুলতেই তারা ৭ উইকেট হারিয়ে বসে। ম্যাচটাও হারে জোঝি স্টার্স। গেইল এ নিয়ে বলেন, ‘ম্যাচটা দেখতেও দৃষ্টিকটু লেগেছে। দলের সবাই অনেক কষ্ট পেয়েছেন। তবে আমি নিজের কষ্টের কথা বলছি। গত বছর এই লিগে খেলে অনেক আনন্দ পেয়েছি। এবার খেলতে চাইনি এখানে। কিন্তু গত বছরের জয়ের ধারা ধরে রাখতে, ড্রেসিংরুমের দারুণ পরিবেশ উপভোগ করতে খেলতে এসেছিলাম। আমি অর্থের জন্য খেলতে আসিনি। এমনকি টাকা-কড়ি নিয়ে আলাপ-আলোচনাও করিনি। আমি আগেই বলেছিলাম পুরো ?টুর্নামেন্ট খেলতে পারবো না। শুধু চেয়েছিলাম, এই দলের সঙ্গে আরও কিছু মুহূর্ত কাটাতে। সেজন্যই নতুন করে চুক্তি করেছিলাম।’
গেইল জানান, সাধারণত এই সময়টা তিনি বিশ্রাম নেন। তাই তিনি চলে যাচ্ছেন। আবার এমএসএলে ফিরবেন কি-না এমন প্রশ্নে গেইল রসিকতা করে বলেন, ‘না, আর কখনই না।’ এরপর বলেন, ‘আমার আসলে একটু বিশ্রাম দরকার। বছরের বাকি সময়টা বিশ্রাম নেব। এতো বছর ধরে অনেক ক্রিকেট খেলেছি। তাই জানি, নতুন টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুতি নিতে হলে আমার কী দরকার। মানসিক দিকটা আমার কাছে তেমন একটা গুরুত্ব পায় না। কিন্তু শরীরটার কথাও তো ভাবতে হয়। শরীরের দিকটা ভালো গেলে, আমি যতদূর সম্ভব ক্রিকেট চালিয়ে যেতে চাই।’
গেইলের অনেক কষ্ট কিংবা ক্ষোভ ঝাড়ার মধ্যে শেষ কথাটাই হয়তো তার ভক্তদের আশা দেখাচ্ছে। গেইল খেলে যেতে চান। যতদিন শরীরে কুলায়!


     এই বিভাগের আরো খবর