,

হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

সংবাদদাতা ॥ হবিগঞ্জের সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ সূত্রে প্রকাশ, হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সজিব আহমেদ হবিগঞ্জ জেলায় যোগদানের পর থেকে বিল, ভাউছার ও কোটেশনের মাধ্যমে সরকারী ভাবে টেন্ডার কল না করে ব্যাক্তিগত ভাবে নিজস্ব ঠিকাদার দিয়ে অসাধু ভাবে কাজের নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। গত ৬ই নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী একই ঠিকাদারকে বারবার টেন্ডার না দিতে নিষেধ করলেও ওই নির্বাহী প্রকৌশলী প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে কর্ণপাত না করে তার ব্যক্তিগত ঠিকাদার মোজাহের এন্টারপ্রাইজ ও ইউনুছ এন্ড ব্রাদার্স এবং আমিনুল হক এর নামে  টেন্ডার প্রদান করেন। যার ফলে তিনি উল্লেখিত ঠিকাদারদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মোজাহের এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আন্তঃমন্ত্রনালয়ে একাধিক অভিযোগসহ বিভিন্ন টিভি-চ্যানেলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গত ২০১৭-১৮ইং অর্থ বছরে নির্বাহী প্রকৌশলী বাস ভবনের কাজ পূর্ণাঙ্গ ভাবে সমাপ্ত হয়। উক্ত বাসার নির্মাণ মুল্য হিসেবে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয় দেখানো হয়। কিন্তু সম্প্রতি বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী নিজের বাণিজ্যের জন্য ওই বাসাকে রাজপ্রসাধে পরিনত করার লক্ষে টেন্ডার কল না করে লাখ-লাখ টাকা কোটেশনের মাধ্যমে লুটপাটের পায়তারা করিতেছেন এবং সরকারের ব্যয় সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনায় কোন অবস্থাতেই কাজের পূর্ব পরিকল্পনা ছাড়া কোন কাজ হাতে নেয়া যাবে না এ মর্মে সু-স্পষ্ট নির্দেশনা থাকলেও নিজের মনগড়া পরিকল্পনায় সরকারের লাখ-লাখ টাকার অপচয় করে কাজের উপর অতিরিক্ত কাজ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ওই বাসভবনে অহেতুক ভাবে অতিমুল্যবান ফিটিংস, যন্ত্রাংশ স্থাপন-প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে এমনকি তিনি সম্পূর্ণ ছাদের উপরে টাইলস স্থাপনসহ একটি রাজপ্রসাদে পরিণত করেছেন। নির্বাহী প্রকৌশলীর বাস ভবন এমনভাবে নির্মাণ করায় পুরো জেলায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকা এমনভাবে নির্বাহী প্রকৌশলীর বাস ভবনে ব্যায় করছেন যা দেখে রাজপ্রসাদকেও হার মানায়। শুধু তাই নয়, তিনি নিজস্ব বিলাসিতা নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে, হবিগঞ্জ জেলার প্রবেশদ্বার থেকে প্রতিটি রাস্তারই বেহাল দশা হলেও উন্নয়ন করার কোন পদপে নেই। হবিগঞ্জ টু নবীগঞ্জ, নবীগঞ্জ টু আউশকান্দি, মিরপুর টু শ্রীমঙ্গল রাস্তার অবস্থা খুবই ন্যাক্কারজনক এবং হবিগঞ্জ শহর রোড এলাকায় রাস্তা ভাঙ্গা থাকায় জনচলাচলে বাড়ছে দূর্ভোগ। বিভিন্ন উপজেলা থেকে রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্সসহ যান চলাচলে ঘটছে ব্যাঘাত। সওজের উন্নয়ন নিয়ে তৎপর না থাকলেও নিজ বাসভবনকে বিলাস বহুল অট্টালিকায় পরিনত করতে তিনি বেশ উদ্দ্যোগী। হবিগঞ্জ শহরের ২নং পুল এলাকায় তেঘরিয়া আবাসিক এলাকার জনসাধারনের প্রবেশ পথ দখল করে পুরনো সীমানা বাউন্ডারী রেখেই নতুন করে আবার বাউন্ডারী তৈরি করা হয়েছে। মেইন সড়কে রাস্তার ফুটপাত দখল করে দেয়াল দিয়ে তৈরি করছেন ফুলের বাগান। দেখলে মনে হয় আজীবন বসবাসের জন্য চুক্তি নিয়ে এসেছেন। তবে এটা অর্থ আত্মসাতের নব কৌশল বলে মনে করছেন সচেতনমহল। অনেক ফলজ ও কাঠ গাছ নিয়ম ভঙ্গ করে কেটে ফেলেছেন। ইতোমদ্যে তিনি দুর্নীতির দায়ে বান্দরবনে বদলীও হয়েছিলেন। সেখানেও এক বৎসরের বেশি দুর্নীতির কারণে স্থায়ীত্ব হয়নি। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করলে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, নির্বাহী প্রকৌশলী সজিব আহমদে যেখানে যান তিনি একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেন। যাতে করে কেউ দুর্নীতির প্রতিবাদ না করতে পারে। জেলার রাস্তাগুলো দায়সাড়া ভাবে রিপিয়ার কাজ করা হচ্ছে তাও আবার যে জায়গা ভাল সে স্থানেই আবার বিল বাউচার করে টাকা আত্মসাত করা হচ্ছে। সিডিউল অনুযায়ী সিলকোট এর পুরুত্ব ১২ মিঃ মিঃ থাকলেও কাজ হচ্ছে ৩/৪ মিঃমিঃ, তারও আবার কোথাও ২০ মিটার ৩ মিটার ৫০/৬০ মিটার দুর-দুর বিভিন্ন জায়গায় কার্পেটিং সিডিউল মোতাবেক ৫০ মিঃ মিঃ ধরা থাকলেও দায়সাড়া ভাবে মন চাইলে ১৫/২০ মিঃ মিঃ করা হচ্ছে, নতুবা কাপের্টিং না করেই ৩/৪ মিঃ মিঃ সিলকোট করা হচ্ছে। এভাবেই বর্তমান সরকারে সুনাম ক্ষুন্ন এবং রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমানে হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগে কোন অভিজ্ঞ/প্রকৃত ঠিকাদার কাজ না পাওয়ায় হতাশাগ্রস্থ হচ্ছেন। এই প্রকৌলীর ব্যবহারে প্রকৃত ঠিকাদারগণ সন্তুষ্ট নন। কারণ হিসেবে জেলার বাহিরের তাহার নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়া হচ্ছে এতে বঞ্চিত হচ্ছে স্থানীয় ঠিকাদাররা। আর এই সুবাধে লাভবান হ”েছন ভাগবাটোয়ারার মাধ্যমে নির্বাহী প্রকৌশলী সজিব আহমেদ। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপরে সুদৃষ্টি কামনা করছেন ঠিকারদার ও হবিগঞ্জ জেলাবাসী। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ শহরের তারেক হাবিব নামের এক সচেতন নাগরিক বাংলাদেশ দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর