,

যুদ্ধাপরাধী কায়সারের মৃত্যুদণ্ড আপিলেও বহাল

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী হবিগঞ্জের সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে করা আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার আপিল বিভাগ এই রায় দেন। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের আপিল বিভাগের বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা এটি নবম মামলা। আজ রায়ের মাধ্যমে এর চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলো। এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর খালাস চেয়ে কায়সারের করা আপিলের ওপর রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ১৪ জানুয়ারি মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত। সেদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তাকে সহযোগিতা করেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেব নাথ। কায়সারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস.এম মো. শাহজাহান। তার সঙ্গে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমিন। এর আগে গত ৩০ অক্টোবর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের একই বেঞ্চে আসামিপরে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়।
২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় সৈয়দ কায়সারের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়ে আপিল আবেদন করা হয়। সৈয়দ কায়সারের পক্ষে এড. জয়নুল আবেদীন তুহিন আপিল আবেদনটি করেন। আপিলে খালাসের আরজিতে ৫৬ টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। ৫০ পৃষ্ঠার মূল আপিলের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি সংযুক্ত রয়েছে। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর কায়সারকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ এ রায় দেন। তার বিরুদ্ধে একাত্তরে ১৫২ জনকে হত্যা- গণহত্যা, দুই নারীকে ধর্ষণ, পাঁচজনকে আটক, অপহরণ, নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় এবং দুই শতাধিক বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন ও ষড়যন্ত্রের ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এসব অভিযোগের মধ্যে ১৪টিই প্রমাণিত হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের মধ্যে প্রথমবারের মতো অন্য অপরাধের পাশাপাশি ধর্ষণের দায়ে ফাঁসির দণ্ড পান কায়সার। সাঁওতাল নারী হীরামনি ও অপর নারী মাজেদাকে ধর্ষণের অপরাধ দুটি প্রমাণিত হয়। ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ম”ত্যুদণ্ডের সাজা বাতিল ও বেকসুর খালাসের আরজি জানিয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। এরশাদ সরকারের কৃষি প্রতিমন্ত্রী কায়সার ২০১৩ সালের ২১ মে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।


     এই বিভাগের আরো খবর