,

দূর্ঘটনা নয়, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখানই মৃত্যুর কারণ

নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আলোচিত রিচি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের এসএসসি পরীক্ষার্থী মদিনাতুল কুবরা জেরিনের মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন হয়েছে। আটক করা হয়েছে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার মুল হোতা ঘাতক জাকির হোসেন (২৫)কে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ। ঘাতক জাকির হোসেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লোকড়া ইউনিয়নের ধল গ্রামের দিদার হোসেনের পুত্র। জানা যায়, ঘাতক জাকির হোসেন দীর্ঘ দিন ধরে তারই প্রতিবেশী আব্দুল হাইয়ের কন্যা ও রিচি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী জেরিনকে রাস্তাঘাটে একা পেয়ে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু জেরিন তার প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে ক্ষিপ্ত হয়ে নানা কৌশলে উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করে। এ নিয়ে স্থানীয় ভাবে জেরিন ও ঘাতক জাকির হোসেনের পরিবারে একাধিকবার মনোমালিন্যও হয়েছে। সম্প্রতি ঘাতক জাকির হোসেন জেরিনকে অপহরণের উদ্দেশ্যে গত শনিবার সকালে প্রতিদিনের মত জেরিন কোচিং এ যাবার উদ্দেশ্যে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকা সিএনজিতে উঠলে পূর্ব পরিকল্পীত ভাবে সিএনজি চালক নুর আলম ও তার বন্ধু হৃদয়কে নিয়ে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এ সময় পথের কিছুটা দুরে থাকা ঘাতক জাকির হোসেন সিএসজিতে উঠে। কিন্তু সিএনজিটি রিচি স্কুলের ১ম ও ২য় গেইটে না থামলে জেরিনের সন্দেহ হয়। এ সময় সে গাড়ি থেকে নামতে আত্মচিৎকার শুরু করলে ঘাতক জাকির হোসেন তার মুখ চেপে ধরে। পরে ধস্তা-ধস্তির এক পর্যায়ে জেরিন গাড়ি থেকে নামার চেষ্টা করলে নিচে পড়ে মাথায় গুরুতর আহত হয়। সিএনজিটি পালিয়ে পালিয়ে গেলেও স্থানীয়রা জেরিনকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমজি ওসমানি মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেরিনের মৃত্যু হয়। কিন্তু এ পরিকল্পীত হত্যাকান্ড বা দূর্ঘটনা কি না তা বুঝতে না পেরে জেরিনের স্বজনরা ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করেন। এদিকে, এ দূর্ঘটনার সাথে জড়িতের শস্তির দাবীতে আন্দোলনে নামে ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। হবিগঞ্জ সদর সার্কেলের পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলাম ও সদর থানার ওসি মোঃ মাসুক আলীর আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সাময়ীক সড়ে থাকে ছাত্র-ছাত্রীরা। এদিকে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করতে অভিযানে নামে পুলিশ। তদন্তে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দ্বায়ে গত মঙ্গলবার রাতে ঘাতক জাকির হোসেনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার এক পর্যায়ে সে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে গতকাল বুধবার ঘাতককে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে হাজির করা হলে সে স্বীকারোক্তি মুলক ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করে। জবানবন্দী শেষে তাকে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়। এ ব্যাপারে নিহতের পিতা আব্দুল হাই বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর