,

যারা উত্তরাধিকারকে বেচে বেচে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করে তারা সুউত্তরাধিকারী হতে পারে না—–সুলতানা কামাল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘যারা উত্তরাধিকারকে বেচে বেচে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করে তারা সুউত্তরাধিকারী হতে পারে না। আমরা সেই উত্তরাধিকারী হতে চাই যারা আমাদের একুশের চেতনা ও মহান মুক্তিযোদ্ধের চেতনাকে আরো সামনে নিয়ে যাবো। চেতনাকে বেচে নিজের স্বার্থ উদ্ধার করবো না।’ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল হবিগঞ্জ পৌরসভা আয়োজিত একুশে বই মেলার সমাপনী দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদেরকে জানতে হবে, জানতে হবে ইতিহাসকে, জীবনকে, ঐতিহ্যকে এবং সেটার সুযোগ করে দেয় ‘বই’।’ সুলতানা কামাল বলেন, ‘বই আমাদেরকে সামনে নিয়ে যাবে, বইয়ের জায়গা কেউ নিতে পারবে না। বইয়ের মাধ্যমেই আমরা আমাদের নিজেদেরকে জানবো।’ প্রধান অতিথি বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন, ‘একুশের চেতনা হচ্ছে নিজেকে চেনার চেতনা, নিজেকে খুঁেজ পাওয়ার চেতনা, নিজেকে উপলব্ধি করার চেতনা, কারন আমি যখন বলেছি যে, আমি আমার ভাষায় কথা বলবো, তখন আমি আমার পরিচয় প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছি। এইভাবে নিজের পরিচয়কে জানা, নিজের পরিচয়ের স্মীকৃতি চাওয়াই একুশের চেতনা। যে সেই চেতনার অধিকারী সে কখনোই সাম্প্রদায়িক হতে পারে না, অত্যাচারী হতে পারে না, সে কখোনো অন্যকে অসম্মান করতে জানে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদেরকে যদি আত্মসম্মান খুজে পেতে হয় এবং আত্মসম্মানকে যদি অপরের সম্মানের সাথে যুক্ত করতে পারি তখনই মনে করা যায় যে, আমরা একুশের চেতনাকে চিনলাম। সেখান থেকেই আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উত্তরিত হয়েছি।’ সুলতানা কামাল বইমেলা আয়োজনের জন্য হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রসহ সম্পৃক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানান। মেয়র মিজানুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন আমরা একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা সকলে মিলে জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বো-এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার। মহান শহীদ দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে হবিগঞ্জ পৌরসভা আয়োজিত ৩ দিনব্যাপী একুশে বই মেলা নানা অনুষ্ঠানাদি পালনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। পৌরভবন প্রাঙ্গনে আয়োজিত এ বইমেলার সমাপনী দিনের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পৌরসভার মেয়র মোঃ মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মর্জিনা আক্তার ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল। মূল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বৃন্দাবন সরকারী কলেজের বাংলা বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক দেওয়ান জামাল উদ্দিন চৌধুরী, আলোচনায় অংশ নেন কবি তাহমিনা বেগম গিনি, সহকারী অধ্যাপক নাসরিন হক, বৃন্দাবন সরকারী কলেজের সহকারী অধ্যাপক তানসেন আমীন ও সাহিত্যিক সিদ্দিকী হারুন। পৌর কাউন্সিলদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ জুনায়েদ মিয়া, গৌতম কুমার রায়, মোঃ আব্দুল আউয়াল মজনু, মোঃ আলমগীর। উপস্থাপনা করেন পৌর কাউন্সিলর শেখ মোঃ উম্মেদ আলী শামীম। প্রধান অতিথিকে হবিগঞ্জ পৌরসভার পক্ষ হতে সম্মননা পদক দেন মেয়র মিজানুর রহমান। বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় রচনা প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন বই ও পত্রিকার মোড়ক  উন্মোচনসহ নানা অনুষ্ঠান। আলোচনা সভার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ। চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় ক বিভাগে প্রথম হয়েছে নওরীশ শশী, খ বিভাগে অরন্ধুতি দে চৌধুরী অ্যাঞ্জেলা, গ বিভাগে কৌশিক দেব, ঘ বিভাগে তাসনিম তালুকদার প্রান্তি। রচনা প্রতিযোগিতায় ক গ্রুপে প্রথম হয়েছে নওরীন শশী ও খ গ্রুপে মিথিলা চৌধুরী।


     এই বিভাগের আরো খবর