এম এ মুহিত ॥ শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সুন্দর ভবিষ্যত গড়তে হলে জিপি-৫ এর উন্মাদনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অনৈতিক কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। আমরা চাই না শিক্ষকরা কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাক। শিক্ষার্থীদের গাইড বই কিনতে বাধ্য করা হোক। আমরা শিক্ষার্থীদের সঠিক পথে নিয়ে যেতে চাই। সেই পথ একটু কঠিন হলেও তাকে ভালোবাসতে হবে। কারণ সঠিক পথ কখনও বঞ্চনা করে না। গতকাল রোববার দুপুরে নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর কলেজে নতুন ভবন উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অপ্রতিরুদ্ধ গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। ভবিষ্যতে এই অগ্রগতি অব্যাহত রাখবে আজকের শিক্ষার্থীরা। তাই সরকার দক্ষতাসম্পন্ন পরবর্তী প্রজন্ম গড়তে চায়। সেজন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সবারই অনার্স পড়ার দরকার নেই। আমরা জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে চাই। সেজন্য তথ্য প্রযুক্তির শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বার্থে কারিগরী শিক্ষার দিকে সবাইকে আগ্রহী হতে হবে। ডা. দীপু মনি বলেন, বিএনপি সরকারের অজ্ঞতা ও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে গিয়েছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনা অনগ্রসর দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গেছেন। যারা এক সময় বাংলাদেশকে উপহাস করতো, তারাই এখন প্রশংসা করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে সাজাতে কাজ করছিলেন, তখন স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি তাকে হত্যা করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে পুনরায় পাকিস্তান বানানো। নতুন ভবনের উদ্বোধন শেষে মোনাজাতে অংশ নেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ২১ বছর দেশবাসী অন্ধকারে ছিল। দেশকে প্রতিষ্ঠা করা হয় দুর্নীতি আর অবিচারের ক্ষেত্র হিসেবে। পরবর্তীকালে ১৯৯৪ সালে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এলে শিক্ষার হার ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যায় দেশ। কমে যায় দুর্নীতি। কিন্তু বিএনপি পুনরায় ক্ষমতায় এসে দুঃশাসন আর দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে পিছিয়ে দেয়। তাই দেশের অগ্রগতির স্বার্থে নৌকা প্রতীকের বিকল্প নেই। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ডা. আব্দুল হাই চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও কলেজের ইংরেজি প্রভাষক মোশারফ আলী মিঠুর পরিচালনায় এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কলেজের অধ্যক্ষ তনুজ রায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি এড. মো. আবু জাহির, হবিগঞ্জ-১ আসনের এমপি গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি সৈয়দা জহুরা আলাউদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. মো. আলমগীর চৌধুরী, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভিসি ডাঃ মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন দিনারপুর কলেজ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ইমদাদুর রহমান মুকুল। শুরুতেই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওঃ আব্দুল হাসিম। গীতাপাঠ করেন প্রভাষক দোলন দেব। এর আগে ডা. দীপু মনি দিনারপুর কলেজ প্রাঙ্গণে পৌঁছালে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। সংবর্ধনা ও সুধী সমাবেশের শুরুতেই মন্ত্রীসহ বিশেষ অতিথিবৃন্দকে উত্তরীয় পড়ানো হয়। পরে শিক্ষামন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা, বৃক্ষ উপহার ও নিজের হাতে আঁকা ছবি তুলে দেয় কলেজের এক শিক্ষার্থী। সংবর্ধনা ও সুধী সমাবেশের আগে দিনারপুর কলেজের নব নির্মিত ভবনের উদ্বোধন ও অপর ভবনের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী।