,

বাইরে দাড়িয়ে থাকতে হয় শিক্ষার্থীদেরবক্তারপুর আবুল খায়ের উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণি কক্ষ সংকট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শ্রেণিকক্ষের অভাবে ছাত্রছাত্রীরা ঠিকভাবে ক্লাস করতে পারছে না বক্তারপুর আবুল খায়ের উচ্চ বিদ্যালয়ে। প্রতিটি ক্লাসেই ছাত্রছাত্রী বেশি হওয়ায় যারা আগে রুমে প্রবেশ করে তারা ক্লাস করতে পারছে আর পরে আসা শিক্ষার্থীদের বাইরে দাড়িয়ে থাকতে হয়। স্কুলটি বানিয়াচং উপজেলায় হলেও নবীগঞ্জ উপজেলার একেবারে সন্নিকটে হওয়ায় দুই এলাকার ছাত্রছাত্রীরাই এখানে ভর্তি হয়। অন্যদিকে এলাকার আশে পাশে আর কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় এই স্কুলটিই এলাকার একমাত্র ভরসা। ছাত্রছাত্রীরা জানায়, শ্রেণিকক্ষে স্থান সংকুলান না হওয়ায় তাদেরকে প্রতিদিনই বাইরে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। ভেতরে যারা ক্লাস করছে তাদের ক্লাস শেষ হলে বাকীরা ক্লাশে ঢুকে। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ জানান, শ্রেণি কক্ষের অভাবে এমনটি হচ্ছে। বিদ্যালয়ে বর্তমানে অনুমোদিত শিক্ষকের সংখ্যা ১৫ জন, এর মধ্যে ১৩ জন কর্মরত আছেন এবং ২ টি পদ (একজন ইংরেজী এবং একজন শরীরচর্চা শিক্ষক) শূণ্য আছে। তিনি জানান, এই বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১ হাজার ৩৬৪ জন। ছাত্রসংখ্যা প্রতি শ্রেণিতে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত হওয়ার শ্রেণি কার্যক্রম ঠিকভাবে চালানো সম্ভব হয় না। শ্রেণিকক্ষ বাড়ানোর জন্য উর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখা হলেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে তিনটি শাখায় ৪০৫ জন, ৭ম শ্রেণিতে দুইটি শাখায় ২৮৫ জন, ৮ম শ্রেণিতে দুইটি শাখায় ২৭৭ জন, ৯ম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ও মানবিক শাখায় ২২৭ জন, ১০ম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ও মানবিক শাখায় ১৬৬ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। ৭ম, ৮ম, ৯ম ও ১০ম শ্রেণিতে একটি করে চারটি শাখা খোলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী গ্রামের সংখ্যা বেশী হওয়ায় এবং এখানে অন্য কোন বিদ্যালয় না থাকায় এবং ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, অনুপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীর হাজিরা বাড়ানোর চাপ দিলে শ্রেণিকক্ষে ছাত্র-ছাত্রীর বসার স্থান দেয়া সম্ভব হবে না। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ থাকলে বিদ্যালয় প্রদত্ত বেতনে শিক্ষক নিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালানো যেত বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। আবুল খায়ের উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০টি শ্রেণিকক্ষ, ১টি শিক্ষক মিলনায়তন, ১টি লাইব্রেরি কক্ষ ও একটি বিজ্ঞানাগার আছে। বিদ্যুতের অভাবে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণি কার্যক্রম চালানো সম্ভব হচ্ছে না। সংসদ সদস্য এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এর প্রচেষ্ঠায় বিদ্যুতের খুটি স্থাপন হলেও তার টানা এবং সংযোগ এখনও বাকী আছে। জানা যায়, চলতি বছর বিদ্যালয়ে কলেজ শাখা চালু করার উদ্দেশ্যে যাবতীয় কাগজ পত্রসহ সিলেট শিক্ষা বোর্ডে আবেদন করা হয়েছে এবং কলেজ শাখার জন্য তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি ৯০ ফুট লম্বা ঘর নির্মাণ এর কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এই ঘর নির্মাণে স্থানীয় জনসাধারণের সাহায্য এবং বিদ্যালয়ের তহবিল হতে অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। মাটি ভরাটের জন্য সংসদ সদস্যও ১ লাখ টাকার অনুদান দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। উল্লেখ্য, মাত্র ৪১ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে বক্তারপুর আবুল খায়ের উচ্চ বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু করে ১৯৮৯ সালের ১ জানুয়ারী। ১৯৯৪ সালে নিম্ন মাধ্যমিক, ১৯৯৫ সালে ৯ম শ্রেণি, ১৯৯৬ সালে ১০ম শ্রেণি, এবং ১৯৯৭ সালে এসএসসি পরিক্ষার অনুমতি লাভ করে। তাছাড়া ১৯৯৫ সালে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে এবং ১৯৯৭ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয় হিসাবে এমপিও ভুক্ত হয়।


     এই বিভাগের আরো খবর