,

করোনা থেকে বাঁচার গুজবে নবীগঞ্জে মাথা ন্যাড়ার হিড়িক

সলিল বরণ দাশ :  হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পৌর শহর থেকে গ্রাম, সর্বত্রই এখন হিড়িক পড়েছে মাথা ন্যাড়া করার। অনেকে মাথা ন্যাড়ার পর নানান ভঙ্গিতে ছবি তুলে তা আবার ছড়াচ্ছেন ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। অনেকে মনে করেন মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আক্রান্ত হবে না। তবে নবীগঞ্জের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে এটি গুজব।

যারা ন্যাড়া হচ্ছেন তাদের দাবি, বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাব কমাতে সরকারের নির্দেশে বেশিরভাগ মানুষ ঘরে অবস্থান করছেন। আর একই কারণে বর্তমানে সারা দেশের সব সেলুনও বন্ধ রয়েছে। এতে করে বেশিরভাগ মানুষ চুল ছোট করতে না পেরে ন্যাড়া হয়ে যাচ্ছেন।

তবে অনেকে আবার ভালো লাগা থেকেও ন্যাড়া হয়েছেন। আবার অনেকে পরিচিতজনের ন্যাড়া হওয়া দেখে উৎসাহিত হয়ে এই পথে হেঁটেছেন।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে নবীগঞ্জ পৌরসভা, ইনাতগঞ্জ, কাজিরবাজার, ইমামবাড়ি, শিবগঞ্জ,আউশকান্দি,গোপলারবাজার,চৌধুরীবাজার সহ উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে-গঞ্জে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক পড়েছে। বিশেষ করে তরুণ ও যুবকদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। তবে পিছিয়ে নেই শিশুরাও।

অভিভাবকরা সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে শিশুদের মাথাও ন্যাড়া করে দিচ্ছেন।
উপজেলার  পৌর এলাকার অন্তত ২০ জন মাথা ন্যাড়া করেছেন। তারা জানান, গরমের এমন সময়টাতে প্রতিবছরই দল বেঁধে একই বয়সের তরুণদের মাঝে মাথা ন্যাড়া হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। যদিও চলতি সময়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশে আমাদের ঘরে থাকতে হচ্ছে। আর সেলুনও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। তাই এমন পরিস্থিতিতে মাথা ন্যাড়া করেছেন তারা।

এদিকে উপজেলার শেরপুর রোডের এক সেলুন মালিক জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতেও বাড়ি গিয়ে চুল ছাঁটানোর জন্য দু-একজন ফোন দিচ্ছেন। পরিচিত মানুষ হলে বাড়িতে গিয়ে চুল কেটে দিয়ে আসছি। আর এজন্য একটু বেশি টাকা দিচ্ছেন তারা।

এ ব্যাপারে মেডিসিন ও শিশু বিশেষজ্ঞ নবীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ চম্পক কিশোর সাহা  বলেন, মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আসবে না এটা স্রেফ একটা গুজব ছাড়া আর কিছুই না। বরং মাথা ন্যাড়া করলে করোনা ছড়ানোর সংক্রমণ বেশী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাথা ন্যাড়া করতে হলে আরেক জনের সহযোগিতা নিতে হবে।
মাথা ন্যাড়া করলে করোনা আসবে না এটাকেগুজব হিসেবে আখ্যায়িত করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সামাদ  বলেন, এটার কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নাই। এ বিষয়ে কান না দেওয়ার জন্য তিনি যুবকদের আহ্বান জানান। এছাড়া চুলা নেড়া করার সময় কাঁচি ও ক্ষুর থেকে করুনা আক্রান্তের সম্ভবনা আছে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর