,

লন্ডন-সিলেট সরাসরি ফ্লাইট চালু-বন্দর ফী বাতিল ও বিদেশী এয়ারলাইন্স গুলোকে সিলেট এয়ারপোর্ট ব্যবহারের দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি

মতিয়ার চৌধুরী, লন্ডন থেকে : লন্ডন-সিলেট রুটে বাংলাদেশ বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালু, বিমানবন্দর ব্যবহার কারীদের উপর থেকে ফী প্রতাহার ও সিলেট এম এ জি ওসমানী বিমান বন্দর থেকে বিদেশী এয়ারলাইন্স গুলোকে বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট চালুর দাবী জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছে ‘‘আমরা সিলেটবাসী” নামের একটি সংগঠন। গতকাল ২৭ জুলাই লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় গেল ২৫ জুলাই বাংলাদেশ সিলিভ এভিয়েশন এক নোটিশের মাধ্যমে জানিয়েছে যে এখন থেকে লন্ডন-সিলেট রুটে বিমান যাত্রীদের বাধ্যতামূলক ঢাকায় ব্যাগেজ ক্লেইম ও ইমিগ্রেশন সম্পুর্ণ করে নতুন করে বোডিংপাস নিয়ে ডমেষ্টিক ফ্লাইটে সিলেট যেতে হবে। ঢাকা হযরত শাহজালাল (র) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে আন্তর্জাতিক টার্মিনাল থেকে ডমেষ্টিক টার্মিনারের দূরত্ব একমাইল, দীর্ঘ ১০/১২ ঘণ্টা জার্নি করে অবার পায়ে হেটে মালমাল সহ যেতে হবে আভ্যন্তরীন টার্মিনালে, এতে হয়রানি এবং যাত্রী নিরাপত্তার ঝুকি রয়েছে। এছাড়া বয়স্ক এবং শিশুদের জন্যে কতখানি কষ্টকর তা কিন্তু বিমান সিভিল এভিয়েশন ভাবেননি। একই নিয়ম অনুসরন করতে হবে আসা- যাওয়ার ক্ষেত্রে। বিমান ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের এহেন অন্যায় সিদ্ধান্তে সিলেট বিভাগ সহ বৃটেনে বসবাসরত সর্বস্থরে প্রবাসীরা হতাশ হয়েছেন। স্মারকলিপিতে এর জন্যে ঢাকার একটি হোটেল ব্যবসায়িক গোষ্টী, বিমানের কিছূ সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও উচ্চপদস্থ আমলাদের দায়ী করে স্মারকলিপিতে বলা হয় প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পদে অধিষ্টিত কিছু সংখ্যক আমলা এজাতীয় সিদ্ধান্ত নেন তাদের নিজস্ব স্বার্থে। একটি মহল অত্যন্ত কৌশলে সিলেটী বিমানযাত্রীদের পুজি করে বছরের পর বছর ধরে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। লাভবান হচ্ছে বিমান ও সিভিল এভিয়েশনের কিছু সংখ্যক কর্মচারী ও ঢাকার উত্তরায় অবস্থিত কয়েকটি গেষ্ট হাউজের মালিক। অযথা ট্রানজিট যাত্রীদের এয়ারপোর্ট থেকে লাল-হলুদ টুকেন দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয় চিহ্নিত কয়েকটি গেষ্ট হাউজে। এতে লাভবান হন বিমানের কিছু কর্মচারী কর্মকতা ও গেষ্টহাউজ মালিকরা। অন্য দিকে জাতীয় পাতাকাবাহী বিমান প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা গচ্ছা দিচ্ছে। আর যাত্রীরা এসব গেষ্ট হাউজে কাঙ্খিকত সেবা নাপেয়ে বিমানের উপর আস্থা হারাচ্ছেন এবং সীমাহীন কষ্ট ও বিরম্বনার শিকার হচ্ছেন। সিলেট থেকে লন্ডনগামী ফ্লাইট চালু না করার একমাত্র কারণই হলো কতিপয় বিমানকর্মচারী ও উত্তরার কয়েকটি গেষ্ট হাউজের ব্যবসা। এই বিষয়টি বারবার কর্তৃপক্ষকে ভূক্তভোগীদের পক্ষ থেকে জানানো সত্বেও বিষয়টি কেউ আমলে না নিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে যাত্রী হয়রানি করা হচ্ছে। এছাড়া একটি অদৃশ্য কারনে বিভিন্ন অজুহাতে সিলেট থেকে ডাইরেক্ট ফ্লাইট চালু হচ্ছেনা। যদি সরাসরি সিলেট থেকে বিমান ফ্লাইট চালু হয় এই চক্রের ইনমাক বন্ধ হয়ে যাবে। আর এসব কারণেই বিদেশী এয়ারলাইন্স গুলোকেও সিলেট এম.এ. জি. আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয়া হচ্ছেনা। স্মারকলিপিতে বলা হয় গেল কয়েক বছর যাবত আমরা লক্ষ্য করে আসছি প্রথমে বলা হয়েছে, সিলেট বিমান বন্দরে উপযুক্ত রানওয়ে নেই, তার পর আসে ফ্লুয়িং সিষ্টেমের কথা, এসব কিছু সমাধান হওয়ার পর সিলেট থেকে ডিরেক্ট ফ্লাইট চালু হলেও উর্ধতন আমলারা আবার এটি বন্ধ করে দিল। আমলাদের ভেতর একটি শ্রেণী রয়েছে যারা জামাত-বিএনপির আমলে রিক্রুটেট, এরাই অনেক সময় নিজেদের ইচ্ছেমত এমন কিছু অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেন। যাতে সাধারন মানুষ বর্তমান সরকারে উপর বিরক্ত হয়। আর এই আমলাদের পেছনে রয়েছে দেশবিরোধী শক্তি। সাম্প্রতিক এই সিদ্ধান্ত এই দেশবিরোধী চক্রেরই সাজানো একটি ঘটনা বলে স্মারকলিপি প্রদানরাকারী বলেন। এতে নীরিহ যাত্রীরা পোহাবে ভোগান্তি অন্যদিকে বিরুধীদের সরকারের সমালোচনার পথ সহজ হবে। ভাবমূর্তি বিনষ্ট হবে সরকারের। স্মারক লিপিতে বলা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটর উন্নয়ের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক । এতে বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমেনের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টাও রয়েছে। অনেকেই মনে করেন একটি চক্র বর্তমান সরকারের ভাল দিকগুলো প্রশ্নবিদ্ধ করতে অত্যন্ত সুকৌশলে এমন একটি অঘটনমূলক কাজ করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটের উন্নয়নে সব সময় সোচ্চার এবং তার প্রচেষ্টায় সিলেট বিমান বন্দরের উন্নয়ন হচ্ছে, এসব বিবেচনায় সিলেট-লন্ডন ডিরেক্ট ফ্লাইট চালু করা এবং বিমানবন্দর ফি রহিত করতে তার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। সেই সাথে জামাত-বিএনপির রেখে যাওয়া আমলাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা ব্যবস্থা নেবারও দাবী জানানো হয়। এই কাজটি যে আমলার মাধ্যমে হয়েছে তিনি জামাতের এক নেতার নিকটাত্মীয় বলেও স্মারক লিপিতে উল্লেখ করা হয়। ব্যাপারেও খোজ-খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার দাবী জানান স্মারকলিপি প্রদানকারীরা। বিশ্বের কোন দেশেই বিমান বন্দর ব্যবহারকারীদের ফি দিতে হয়না। সম্প্রতি সিভিল এভিয়েন দেশের প্রতিটি বিমানবন্ধরে আভ্যন্তরীন যাত্রীদের বেলায় ২০০টাকা ও আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীদের ক্ষেত্রে ভাড়া উপর নির্ধারন করে সর্বোচ্চ বিশ ডলার পর্যন্ত বন্দর ব্যবহারের ফি নির্ধারন করেছে। এজাতীয় সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ তথা বিশ্বে এই প্রথম। এতে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশীদের মাঝে নেতিবাচক ধারনা তেরী হবে,অন্যন্য দেশের ট্রানজিট যাত্রীরা ঢাকা বিমানবন্দর ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হবে। সিভিল এভিয়েশনের এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশে বিদেশে ফুসে উঠছেন সর্বস্থরের প্রবাসী, ট্রাভেল এসোসিয়েশন আটাব, লন্ডন ভিত্তিক কয়েকটি সামাজিক সংগঠন, ইতোমধ্যেই বিমান বয়কটের ডাক দিয়েছে কয়েকটি সংগঠন, আর সরকার বিরোধীরা এটিকে লুফে নিয়ে একটি ইস্যু তৈরীর চেষ্টা করছে।


     এই বিভাগের আরো খবর