,

হবিগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে পুকুর

হতাশ পরিবেশবাদীরা

জুনাইদ চৌধুরী : এক সময়কার পুকুরের শহর হবিগঞ্জ আজ তার ঐতিহ্য হারিয়ে পরিবেশগত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। বেশিদূর যেতে হবে না। কেবল গত ১০ বছরে হবিগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে অনেকগুলো পুকুর ও জলাশয়। সেখানে গড়ে উঠেছে অট্টালিকা, মার্কেট, ট্রাক স্ট্যান্ডসহ নানা ধরণের স্থাপনা। আবার কোনো কোনো জলাশয় ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। এমনকি পুকুর ভরাট করে খোদ পৌরসভাই মার্কেট নির্মাণের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে। সেজন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। আর সবকিছু ঘটছে সবার সামনে। দেশে পুকুর ও জলাশয় ভরাটের বিরুদ্ধে আইন থাকলেও সে আইন হবিগঞ্জে অচল। বিভিন্ন ব্যক্তির পাশাপাশি খোদ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হবিগঞ্জের ফুসফুসখ্যাত পুকুর ও জলাশয়গুলো ভরাট করেছে। এ ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপার একটি প্রতিনিধিদলের হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন পুকুর ও জলাশয় সরজমিনে পরিদর্শনে এ চিত্র উঠে এসেছে। বাপার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিলের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাপার আজীবন সদস্য ও সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল, হবিগঞ্জ বাপার সাধারণ সম্পাদক ও খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল, বাপা সদস্য ডা. আলী আহসান পিন্টু, পরিবেশকর্মী আবিদুর রহমান প্রমুখ। বাপার এ প্রতিনিধিদলটি শহরের বেশ কিছু পুকুর ও জলাশয় পরিদর্শন করে। এ ব্যাপারে বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, যেকোন শহরের পুকুর ও প্রাকৃতিক জলাশয় হচ্ছে ঐ শহরের বারিপাত অঞ্চল যা ভরাটের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ধরে রাখার ক্ষেত্রে এই জনাশয়সমূহ মুখ্য ভূমিকা পালন করে। যেকোন জলাশয়কে সংস্কার করলে অল্প খরচে দৃশ্যমান উন্নয়ন করা সম্ভব। পুকুর রক্ষায় হবিগঞ্জে ইতিপূর্বে বৃহৎ সামাজিক আন্দোলনের পরও রাজনৈতিক নেতৃত্বের এমন উদাসীন দৈন্য আমাকে হতাশ করেছে। যেসব পুকুর পুরোপুরি বা আংশিক ভরাট করা হয়েছে তা পুনঃখনন করতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যমান পুকুরগুলো রক্ষা করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাপার আজীবন সদস্য অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, হবিগঞ্জের অনেকগুলো পুকুরের সাথে আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য জড়িত। সেসব পুকুর ভরাট করে মেরে ফেলার অর্থ হলো আমরা আমাদের ঐতিহ্যকে গলা টিপে মেরে ফেলছি।


     এই বিভাগের আরো খবর