,

ডিসেম্বরে নবীগঞ্জে পৌর নির্বাচন

সম্ভাব্য প্রার্থীরা সরব

মতিউর রহমান মুন্না : আগামী ডিসেম্বরে পৌরসভার ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ওই সময়ে ভোট করার প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছে। নবীগঞ্জ পৌরসভাসহ প্রায় আড়াইশ’র মতো পৌরসভায় ভোট হতে পারে। এই লক্ষ্যে ইসি সচিবালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। এ ঘোষনার পর থেকেই নবীগঞ্জ পৌরসভায় আগাম মাঠে সরব মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। কেউ কেউ নীরবে জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকেই ভার্চুয়াল প্রচারণায় সরব। প্রার্থীদের কর্মী ও সর্মথকরা তাদের নেতার বিভিন্ন ছবিসহ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পোস্ট দিতে সক্রিয় রয়েছেন। এবারের নির্বাচনে সরকারী দল আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়নে প্রত্যাশী। এতে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। নবীগঞ্জ পৌরসভায় সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর। সে হিসেব অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। মিডিয়াতে এমন এ খবর শুনেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখনই মাঠে নেমে পড়েছেন। তবে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেতে অনেকেই দৌড়ঝাঁপ করছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারা জেলা-কেন্দ্রে নানা লবিং তদবির করছেন বলেও জানা গেছে। স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এবার আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক মেয়র অধ্যাপক আওয়ামীলীগ নেতা তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ মিলু, নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল। গেল নির্বাচনেও তারা নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। অবেশেষে নৌকার মাঝি হয়েছিলেন ৩ বারের নির্বাচিত মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী।  তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরীর সমর্থকরা বলছেন- একটানা ৩ বারের নির্বাচিত মেয়র তিনি ও সিনিয়র হিসেবে থাকেই দল মূল্যায়ন করবে। এ ছাড়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত যত উন্নয়ন হয়েছে তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরীর আমলেই। এবার নতুন চমক সাইফুল জাহান চৌধুরী। তিনি এবার প্রার্থী হবেন বলে বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সাইফুল জাহান চৌধুরী ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু এখন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী এমনকি দল তাকে মূল্যায়ন করবে বলেও আশাবাদী। অপরদিকে মোস্তাক আহমেদ মিলুর সমর্থকরা বলছেন- তিনি বঙ্গবন্ধুর আর্দশের একজন সক্রিয় নেতা। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে শুরু করে বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়ীত্বে রয়েছেন। এ হিসেবে দল তাকেই মনোনয়ন দেবে। গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল বর্তমান সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপির জামাতা। তার সমর্থকরা দাবী করছেন উপজেলা এবার দলীয় মনোনয়নে তিনি চমক দেখাতে পারেন বলেও মনে করেন তারা। এ ছাড়াও হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা তাতীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মালিক, বর্তমান পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১, জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবিলীগের ১ম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ৩ বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর এটিএম সালাম এর নামও শুনাযাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে। এছাড়াও মেয়র প্রার্থী হিসেবে নাম শুনা যাচ্ছে নবীগঞ্জ মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মাহবুবুল আলম সুমন। এমটাই প্রচার করছেন সমর্থকরা। তাদের দাবী মাহবুবুল আলম সুমন শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কাজ করছেন দীর্ঘদিন ধরে। অপরদিকে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। এখন পর্যন্ত বিএনপি থেকে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব ছাবির আহমেদ চৌধুরী। এ ছাড়া দল নির্বাচনে যাবে কিনা বা বিএনপিতে আর কোন প্রার্থী আছে কিনা তা জানা যায়নি। নির্বাচনী হাওয়া পুরোদমে শুরু না হলেও ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে চলছে প্রচারনা। অপরদিকে বসে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। স্ব স্ব ওয়ার্ডে চলছে গণসংযোগ। পুরাতন প্রার্থীর পাশাপাশি নতুন মুখও আসছে ৯টি ওয়ার্ডে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নবীগঞ্জ পৌরসভা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে টানা ৩ বার মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী। গেল নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে দায়ীত্ব পালন করছেন আলহাজ্ব ছাবির আহমেদ চৌধুরী।  নাগরিক অভিযোগঃ বৃহত্তর সিলেট বিভাগের মধ্যে এ এলাকাটি উল্লেখযোগ্য হলেও থেমে আছে অবকাঠামো উন্নয়ন। বঞ্চিত রয়েছে রাস্তাঘাটসহ নানান ধরনের সুযোগ-সুবিধা। প্রবাসী অধ্যুষিত এ এলাকায় বিশাল বিশাল অট্টালিকা নির্মান হলেও অবকাঠামো উন্নয়ন তেমন নেই বল্লেই চলে। এ ছাড়া ১ম শ্রেণীর খ্যাতাব প্রাপ্ত পৌরসভার নেই কোন নিজস্ব ভবন। ভাড়া করা ভবনেই চলছে কার্যক্রম। এছাড়া যানজটের সমস্যা নিত্যসঙ্গী। পৌর শহরের প্রধান রাস্তার মধ্যস্থান দখল করে রেখেছে অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড, সবজী দোকানসহ ফুটপাতের নানা ব্যবসায়ীরা। বারবার প্রশাসন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করলেও বহাল তবিয়তে থেকে যায় এসব অবৈধ দখলকারীরা। প্রায় ৩৩ হাজার মানুষের বসবাস এই পৌরসভায়। এর একমাত্র পৌর শহররের মূল রাস্তায় বাস, মিনি বাস, টেম্পু, সিএনজি অটোরিকশা থামিয়ে যাত্রী উঠা নামা করছেন দীর্ঘ সময় ধরে। যার ফলে সারা শহরে যানজট লেগে থাকে। এ পৌরসভার সাধারণ নাগরিকদের দূর্ভোগ পৌছে গেছে চরমে। যে যেভাবে পারে প্রধান সড়ক দখল করে গড়ে তুলছে দোকানপাঠ। এসব নাগরিক সমস্যা সমাধানে যারা কাজ করবে তাদেরকেই আগামীর মেয়র চান পৌরবাসী।


     এই বিভাগের আরো খবর