,

হবিগঞ্জে ময়নাতদন্তে বিড়ম্বনা, জনসাধারণের ভোগান্তি চরমে

মোঃ জুনাইদ চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জ জেলার একমাত্র হাসপাতাল হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল। এটি ছাড়া জেলার অন্য উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ময়না তদন্তের ব্যবস্থা না থাকায় লাশ নিয়ে স্বজনদের দুর্ভোগের শেষ নেই। অনেক সময় ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন কাফন করতে গিয়ে লাশ নিয়ে দু’তিন দিন টানাহেঁচড়া করতে হয়।এতে স্বজনদের, বিশেষ করে দরিদ্র প্রকৃতির স্বজনদের সবকিছু ম্যানেজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। গতকাল হবিগঞ্জ শহরের গার্ণিংপার্ক থেকে সবুজ দাশ (২২) নামের এক এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে অষ্টগ্রাম উপজেলার ছন্দরগাজি হাটি গ্রামের শ্রী হরিদাশের পুত্র। এসআই আব্দুর রহিম দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেন। কিন্তু গতকাল দুপুর ২ টায় এ প্রতিবেদন লেখা অবধি আরএমও না আসায় ময়নাতদন্ত হয়নি। ফলে তার স্বজনদের ভোগান্তি পেতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য একটি লাশ কাটা ঘর নির্মাণ করা হয় এবং সেখানে হাসপাতালের একটি মেডিকেল টিমের মাধ্যমে পুলিশ মামলাভুক্ত লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। যার কারণে ৯ উপজেলার লোকজনকে ময়নাতদন্তের জন্য একমাত্র সদর হাসপাতালে প্রতিনিয়ত ছুটে আসতে হয়। সাধারণত কোন মৃত্যুকে অস্বাভাবিক মনে করা হলে পুলিশ প্রথমে সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর হতে ক্রম মর্যাদাসম্পন্ন এমন একজনকে ঘটনাস্থলে প্রেরণ করেন। যিনি লাশ সম্পর্কে খবর সংগ্রহ করে লাশ মর্গে পাঠিয়ে দেন। বিভিন্ন উপজেলা কিংবা ইউনিয়ন থেকে লাশ মর্গে আনার জন্য নেই পর্যাপ্ত যানবাহন। ফলে লাশের ওয়ারিশদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে টাকা দিয়ে জেলা সদরের মর্গে লাশ আনতে হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, হাসপাতালে পুলিশ মামলাভুক্ত যেমন সড়ক দুর্ঘটনা, খুন, আত্মহত্যা এ জাতীয় মৃত্যুর ঘটনায় লাশের ময়নাতদন্ত করতে হয়। দূর-দূরান্ত থেকে নিহতের আত্মীয়স্বজনকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ধরনা দিয়ে বসে থাকতে হয়। আরো জানা যায়, দূরত্ব যতই হোক অফিস সময়ে বিকাল ৫টার মধ্যে লাশ হাসপাতালের মর্গে পৌঁছতে না পারলে পরদিন অফিস সময়ের জন্য আবার অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় গ্রাম থেকে থানা, থানা থেকে জেলা সদরে হাসপাতাল মর্গে এবং অফিস সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে করতে দু’দিনও লেগে যায়। এসব কারণে আত্মীয়স্বজনদের দুর্ভোগের আর সীমা থাকে না। ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মৃত যুবকের বাড়ি হবিগঞ্জের পাশের জেলা হওয়ায় লাশ আনা নেয়ার জন্য ৫০/৬০ কিলোমিটার পথও অতিক্রম করতে হবে।এর জন্য ৫-৬ হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়ে গেছে। আর লাশ পঁচেও যাবে। এতে অর্থ ব্যয় এবং যন্ত্রণার পরিমাণ আরও বেশি হবে। এ বিষয়ে হাসপাতালের আরএমও শামীমা আরাকে কল দিলে তিনি রিসিভ করেন নি।


     এই বিভাগের আরো খবর