,

খোলা মাঠে চলছে শিক্ষা কার্যক্রমদেড়’শ স্কুলভবন ঝুঁকিপূর্ণ পরিত্যক্ত প্রায় শতাদিক

এম এ আই সজিব ॥ বানিয়াচং উপজেলার হারুনী সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়। ক্লাস রুম না থাকায় বাহিরে বসে দুই শিপটে পাঠদান করা হয়। ঝড়-বৃষ্টি হলে আসতে মানা কিংবা আসলেও ছুটি। অন্যদিনে প্রচন্ড গরম পড়ায় গাছের ছায়ার নিচে বসার জন্য ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে চলে হুড়োহুড়ি।অনেক সময় এ নিয়ে ঝগড়াও হয় তাদের মধ্যে। শুধু এই স্কুলটিই নয়, জেলার প্রায় দেড় শতাদিক প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর এই চিত্র। এসব স্কুলের ভবনে ফাটল ও নির্মাণজনিত ক্রটি দেখা দেওয়ায় এবং সময়মতো সংস্কার না করায় ইতিমধ্যে ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে, স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ভেঙে পড়ায় এমন পরিস্থিতিতে আগামী পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ভাল ফলাফল নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক এবং অভিভাবকগণ। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ৮টি উপজেলায় ১ হাজার ২৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে জড়াজীর্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে, ১৫৮ টি। এরমধ্যে হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ১০টি, নবীগঞ্জ উপজেলায় ১২টি, চুনারুঘাট উপজেলায় ৩৭টি, মাধবপুর উপজেলায় ৩৪টি, বানিয়াচং উপজেলায় ১৮টি, লাখাই উপজেলায় ১১টি, বাহুবল উপজেলায় ২৬টি এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ১০টি। এরমধ্যে বিভিন্ন কারণে সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে প্রায় শতাদিক ভবন। এর ফলে, শিক্ষার্থীদের বিকল্প ব্যবস্থায় পাঠদান করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাজ্জাদ হোসেন। অনেক স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের খোলা মাঠে কিংবা বারান্দায় বসে ক্লাস করতে দেখা গেছে। এখন প্রচন্ড গরম হওয়ায় বাহিরে ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে কোমল-মতি ছাত্র-ছাত্রীদের। এখন, যেমন প্রচন্ড গরম পড়েছে তেমনি ঝড়, বৃষ্টির দিন থাকায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষকরা। বৃষ্টির সময় ক্লাস নিতে না পেরে বাধ্য হয়েই ছুটি দিতে হচ্ছে। ফলে কোমল-মতি ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। বাহুবল উপজেলার আব্দাপটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাজিয়া খাতুন জানান, ২০১৩ সালে আমাদের স্কুলের ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলেও এখন পর্যন্ত মেরামতের কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে রোদ, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখা করাতে হয়। অনেক সময় বৃষ্টি আসলেই ছুটি দিতে হয়। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শামছুন্নাহার জানান, ঝড় আসলে যেকোনও সময় ভবন ভেঙে আমাদের উপর পড়তে পারে এমন আশঙ্কা নিয়েই পাঠদান করতে হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো: সাজ্জাত হোসেন জানান, পরিত্যক্ত ভবন সংস্কার ও পুননির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ১৫৮টি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে ১৪টি বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। যা এলজিইডি বাস্তায়ন করছে। পর্যায়ক্রমে অন্যগুলোও সংস্কার করা হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।


     এই বিভাগের আরো খবর