,

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাটির মসজিদ

সময় ডেস্ক ॥ মসজিদটির নাম গ্র্যান্ড মস্ক অব ডিজেনি। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাটির মসজিদ এটি। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির ডিজেনি শহরে এর অবস্থান। নির্মাণকাল সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য না থাকলেও ১২০০ শতাব্দী থেকে ১৩০০ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে এটি নির্মিত হয়েছে বলে বেশির ভাগের মত। তবে বর্তমানে যে কাঠামোটি দেখা যায় এটি নির্মাণ করা হয়েছে ১৯০৭ সালে। আর ইউনেস্কো মসজিদসহ এর চার পাশের ঐতিহাসিক স্থানগুলোকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করে ১৯৮৮ সালে। যতদূর জানা যায়, সুলতান কুনবরু ইসলাম কবুল করার পর তার প্রাসাদটি ভেঙে সেখানে এই মসজিদটি তৈরি করেন। মসজিদের পূর্ব দিকে নিজের বাসের জন্য তৈরি করেন অন্য একটি প্রাসাদ। তার পরবর্তী উত্তরাধিকারী মসজিদের দু’টি টাওয়ার নির্মাণ করেন এবং তার পরবর্তী উত্তরাধিকারী মসজিদটির চার পাশের দেয়াল নির্মাণ করেন। তবে ১৮২৮ সালের আগে মসজিদটি সম্পর্কে স্থানীয়রা ছাড়া বাইরের কেউ জানতেন না। সে বছর ফরাসি পর্যটক রেনে ওই এলাকা ভ্রমণ করেন। তিনি তার সফর শেষে লেখেন, ডিজেনি শহরে মাটির তৈরি একটি মসজিদ আছে। মসজিদটির দুই পাশে দু’টি দর্শনীয় কম উচ্চতার টাওয়ার রয়েছে। এরপর থেকে মসজিদটি সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকে। বানি নদীর তীরে অবস্থিত মসজিদটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে রোদে শুকানো মাটি। মসজিদটি ২৪৫ বাই ২৪৫ ফুট (৭৫ বাই ৭৫ মিটার) আয়তনবিশিষ্ট তিন ফুট উঁচু প্লাটফর্মের ওপর তৈরি। বর্ষাকালে বানি নদীর পানি থেকে এই প্লাটফরম মসজিদটিকে সুরা করে। শুধু নকশা নয়, তালগাছের কাঠ মসজিদের দেয়ালে এমনভাবে গেঁথে দেয়া হয়েছে, যাতে মাটির দেয়াল সহজে ধসে না যায়। মধ্যযুগে আফ্রিকার এই অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি শিক্ষা বিস্তারের প্রধান কেন্দ্র ছিল এই মসজিদ। হাজার হাজার শিক্ষার্থী তখন কুরআন শিক্ষার জন্য এই মসজিদে আসতেন। প্রতি বছর স্থানীয় মুসলমানেরা মসজিদটির সংস্কারকাজ করেন। তবে ২০০৬ সালের ২০ জানুয়ারি মসজিদের ছাদের একটি অংশ এবং ২০০৯ সালের ৫ নভেম্বর দক্ষিণ দিকের টাওয়ারের একটি অংশ ধসে পড়লে ‘দ্য আগা খান ট্রাস্ট কালচার’ নিজস্ব খরচে এটির সংস্কার করে।


     এই বিভাগের আরো খবর