,

পকেটে প্যারাসিটামল নিয়ে চলতে হয় ১দিন গাড়ি চড়লে তিন দিন গায়ে ব্যাথা নবীগঞ্জের পাকা সড়কগুলোর বেহালদশা ॥ সর্বত্র মরণফাঁদ

এম.এ আহমদ আজাদ ॥ “পকেটে প্যারাসিটামল নিয়ে চলতে হয়, একদিন গাড়ি চালালে তিন দিন যায় গায়ের ব্যাথায়” আর গাড়ির অসুখ আয় ক্ষণে ক্ষনে”এখন কোন কাম নাই তার লাগি গাড়ি চালাই, নাইলেনো উপাস মরতে অইবো আমরা হকলতারে”একথা গুলো বলেন, আউশকান্দি-আমুকোনা-বেতাপুর ভায়া সিট ফরিদপুর সড়কের অটোরিক্সা চালক বকুল মিয়া। এসড়কের এমনই অবস্থা ভেঙ্গে চুরমার এসব দেখলে মনে হয় পল্লী গ্রামের মেঠোপথ। তবুও পেটের তাগিদে গাড়ি চালান অটোরিক্সা চালক বকুল। তিনি বলেন প্রতিদিন গাড়ি ঝাকুনিতে শরীরের ব্যাথা যায় না তাই প্যারাসিটামল সাথে রাখতে হয়। একই অবস্থা নবীগঞ্জ শহর সহ উপজেলার অধিকাংশ পাকা সড়ক গুলোর চিত্র। এখন যানবাহন চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। এসব সড়কের কার্পেটিং উঠে মেঠো পথে রুপান্তর হয়েছে। আর কিছু দূর দূর বড় গর্তের সৃষ্টি বর্ষার পানি জমে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ফলে এসব সড়কের মধ্যে প্রতিদিনই নানা রকম দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। এসব সড়ক মেরামতে কর্তৃপক্ষের কোন দৃষ্টি নেই। স্থানীয় সংসদ সদস্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন সড়ক মেরামতের জন্য ডিওএ লেটারের মাধ্যমে সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রনালয়কে জানালেও কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। ফলে তীব্র হতাশ দুর্ভোগে শিকার নবীগঞ্জের পাঁচ লক্ষ মানুষ। অচিরেই এসব সড়ক মেরাতম করা না হলে জনরোষে পড়তে হতে পারে জনপ্রতিনিধিদের। শহরের পৌর এলাকার অধিকাংশ সড়কের বেহালদশা। শহরের শুভেচ্ছা কমিউনিটি সেন্টারের সামন থেকে ধরে ওসমানি সড়ক.বানিয়াচং-নবীগঞ্জ সড়ক, সালামতপুর টু শেরপুর সড়কের অংশ, শিবপাশা সড়ক, আনমনু-নোয়াপাড়া সড়ক, গয়াহরি সড়ক, দত্তগ্রাম সড়ক মেরামত করা জরুরী প্রয়োজন। শহরের রিক্সা চালক আব্দুল কাদির বলেন এসব সড়ক দিয়ে রিক্সা চালাতে ইচ্ছা হয় না। কিছু দুর দুরই শুধুই ভাঙ্গা তাই তারাতারি মেরামত করা দরকার। নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজার-আমুকোনা, বেতাপুর-ভায়া সিট ফরিদপুর সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়াতে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। সড়কটি দেখলে মনে হবে না এটা পাকা সড়ক ছিল। সড়কের মধ্যে বর্ষা মওসুমে ভারি যানবাহন চলাচলের ফলে কিছু অংশ জনসাধারনের চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ব্যক্তি উদ্যোগে মেরামত করে জনসাধারণ চলাচল করছেন। জনগুরুত্বপূর্ন ঐ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ২০/২৫ টি গ্রামে কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা চলাচল করেন। একই অবস্থা আউশকান্দি বাজার টু উত্তর দৌলতপুর সড়কের বেহাল দশা। ঐ সড়কের যাত্রী ছাত্রনেতা শিহাব আহমদ জানান আমাদের সড়কটি বিভিন্ন জায়গায় ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে তাতে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে পুকুরের মতো লাগের। সেখানে মাছ চাষ করা যাবে। তাই এসড়কটি অচিরেই মেরামত করা না হলে বড় ধরনের দূর্ঘটনা আশংকা রয়েছে। ইনাতগঞ্জ-বান্দের বাজার-সৈয়দপুর সড়কের চিত্র বেহাল। বান্দের বাজারের ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক শাহেন শাহ লিমন বলেন,আমাদের বাজারের মধ্যে সড়কটি দেখলে মনে হয় এখানে কোন পাকা সড়ক ছিল না। সব কিছু ভেঙ্গে মেঠোপথে রুপান্ত হয়েছে। সব সব সময় পানি আর কাদা জমে থাকে তাই জনসাধারণ ও ব্যবসায়ীদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বার বার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষন করে কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া আউশকান্দি ইউপি বাজার সৈয়দপুর-আজলপুর-মংলাপুর, ইসলামপুর সড়ক, বনগাও- ইসলামপুর সড়ক, দীঘলবাক ইউপির দূর্গাপুর, বনকাদিপুর, কুমারখাদা, হুসেনপুর, সড়ক, দেবপাড়ার ইউপির গোপলার বাজার টু গোরারাই বাজার সড়ক, রুস্তমপুর টু ধর্মনগর সড়ক, রুস্তুমপুর টুলপ্লাজা টু গোপলার বাজার-ভায়া বাংলাবাজার সড়ক, ইনাতগঞ্জ-কাজীরবাজার সড়ক, গজনাইপুর জনতার বাজার টু আথানগিরি সড়ক, কায়স্থগ্রাম সড়ক, বান্দের বাজার ভায়া বোরহানপুর টু কুর্শি সড়ক, নবীগঞ্জ-সাকোয়া সড়ক, আউশকান্দি-আমুকোনা ভায়া সিট ফরিদপুর সড়ক, সঈদপুর-আজলপুর সড়ক, ইসলামপুর-শেরপুর সড়ক, কুর্শি-গোপলারবাজার সড়ক, কাজিগঞ্জ-মার্কুলী এসব সড়কের বেশির ভাগ অংশে কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তে সৃষ্টি হয়েছে। এতে সড়ক গুলো এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সংস্কারের অভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ সড়কের বেহাল অবস্থায় এতো করুন কখন যেন দেখার মতো কেউ নেই…?। এসব সড়কের দৃশ্য নিয়ে প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দূর্ভোগের ছবি ও নানা রকম স্ট্যাটাস প্রকাশ হচ্ছে। এসব সড়কগুলো সংস্কার না হওয়ায় উপজেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এসব স্থানীয় ও আঞ্চলিক এই সড়কগুলোতে সংস্কার কাজ না বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে বর্ষার পানি জমে ঝিলে পরিণত হয়েছে। গাড়ি চালক ও যাত্রী সাধারণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। এতে করে প্রায় দিনই কোন না কোনস্থানে সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে। এসব সড়কের ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দুর রহমান বলেন আমরা উপরের কোন বরাদ্ধ না পাওয়ার ফলে মেরামত করতে পারছি না। এসব গুরুত্ব পূর্ন সড়ক মেরামত করা জরুরী প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। স্থানীয় সংসদ সদস্য এম,এ মুনিম চৌধুরী বাবু বলেন এসব সড়কের বেশির ভাগ সংস্কার করার জন্য এলজিইডির উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে ডিওএ লেটার পাঠিয়েছেন জানান। অচিরেই উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সংস্কার করা হবে তার বিশ্বাস।


     এই বিভাগের আরো খবর