,

শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে ও শিশুর নৈতিকতাবোধ সৃষ্টিতে স্যালুট প্রদান পদ্ধতি

গত ৩১/০৩/২০১৫ থেকে ২০/০৪/২০১৫ তারিখ পর্যন্ত নবীগঞ্জ উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০ জন প্রধান শিক্ষক নিয়ে ২১ (একুশ) দিন ব্যাপী লিডারশিপ প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছিল। সেই প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেছিলেন উপজেলা ইন্সট্রাক্টর মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে ৭ (সাত) দিন আমাদেরকে বিদ্যালয়ে কাজ করতে হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে সকল প্রশিক্ষণার্থীদেরকে৭ (সাত)টি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। আমার ৭(সাত)টি পরিকল্পনার মধ্যে ১(এক)টি পরিকল্পনা প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য তুলে ধরছি-যা আমার নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা থেকে উদ্ভাবিত। আমার বিদ্যালয়ে প্রতি বছর জানুয়ারী মাসে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তাদের স্বপ্নের বা লক্ষ্যের কথা জেনে নিই। যেখানে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, র‌্যাব অফিসার, আর্মি অফিসার, পুলিশ অফিসার, ব্যারিস্টার, এড্ভোকেট, শিক্ষক সহ আরো অনেক স্বপ্নের কথা শিশুরা অকপটে বলে। যা আমি একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে রাখি এবং স্বপ্নগুলোর মধ্যে প্রথমে একটি লক্ষ্যের কথা সবাই সমস্বরে বলে থাকে- তারা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে প্রকৃত মানুষ হবে। স্বপ্ন বা লক্ষ্যের বিষয়টি মাথায় রেখে আমি কর্মপরিকল্পনা-১ গ্রহণ করি। কর্মপরিকল্পনা-১। “উন্নত জীবনের স্বপ্ন দর্শনে বা লক্ষ্য পূরণে উদ্বুদ্ধ করার জন্য ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্যালুট প্রদান পদ্ধতি”। এ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় প্রতিদিন বিদ্যালয় ছুটির সময় ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে পর্যায়ক্রমে ৩ জন করে মোট ৬ জন শিক্ষার্থী দ্বারা ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরকে স্যালুট প্রদানের মাধ্যমে। যা আমি আমার বিদ্যালয়ে গত ১৫/০৪/২০১৫ খ্রিঃ থেকে এ প্রয়োগ শুরু করি । উক্ত পরিকল্পনা গ্রহণের উদ্দেশ্য হলো- ১) শিশুকে সুশৃঙ্খল জীবন যাপনে অভ্যস্ত করা। ২) শিশুর নিজের প্রতি সম্মানবোধ, শ্রদ্ধাবোধ ও দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা। ৩) শিশুর একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও স্নেহ বোধ জাগ্রত করা। ৪) শিশুরা যাতে নিজেকে সমাজ ও রাষ্ট্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক হিসেবে উপলব্ধি করতে শেখে। ৫) শিশুর সৃজনশীলতা বিকাশে সহায়তা করা। ৬) শিশুরা যাতে উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখতে আগ্রহী হয়। ৭) শিশু তার লক্ষ্য পূরণে যাতে নিষ্টাবান ও দৃঢ় থাকে। ৮) শিশুর লক্ষ্য পুরণে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করা। ৯) তাদের স্বপ্ন বা লক্ষ্যকে অন্য সবাই সম্মান বা শ্রদ্ধা জানাচ্ছে – তা উপলব্ধি করতে পারা। ১০) শিশুর মধ্যে স্বপ্ন বা লক্ষ্যটি যাতে যথাযথভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। ১১) শিশুকে প্রতিদিন তার স্বপ্ন বা লক্ষ্যের কথা স্মরন করিয়ে দেয়া। ১২) অন্য শিশুদের উন্নত স্বপ্ন দর্শনে বা লক্ষ্য নির্ধারনে উদ্বুদ্ধ করা। ১৩) শিশুর স্বপ্ন বা লক্ষ্য পুরণে অভিভাবকরা যাতে আগ্রহী ও মনোযোগী থাকে এবং তার গুরত্ব উপলব্ধি করতে পারে।প্রাথমিক
জাহাঙ্গীর বখ্ত চৌধুরী (তুহিন)
প্রধান শিক্ষক
শৈলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবীগঞ্জ।


     এই বিভাগের আরো খবর