,

বানিয়াচংয়ের দৌলতপুরে ও নবীগঞ্জের চৌকি গ্রামে সংঘর্ষে নিহত চয়নের ঘটনা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা হবে ওসি

জসিম তালুকদার ॥ নবীগঞ্জ পরিষদের উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী, অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আব্দুল বাতেন খান, নবীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বড় ভাকৈর ইউনিয়নের চৌকি ও বানিয়াচংয়ের দৌলতপুর গ্রাম পরিদর্শন করেছেন। এসময় তার সাথে ছিলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সাইফুল জাহান চৌধুরী, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু দাশ রানা, দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকার প্রকাশক ও বার্তা সম্পাদক সেলিম তালুকদার, ইউপি আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গৌতম দাশ প্রমূখ। নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে পৌছুলে শত শত জনতা চৌকি বাজারের অরবিন্দু দাশের দোকানের সামনে জড়ো হন। এ সময় স্থানীয় জনতা ঘটনার বিবরণ দেন। পরে তারা চয়ন দাশের বাড়ীতে চয়ন দাশের পিতা কুলেন্দ্র দাশ, পূত্র চম্পক দাশ, কন্যা চুমকি দাশকে দেখতে যান। তাদেরকে শান্তনা দেন। সমবেদনা প্রকাশ করেন। স্থানীয় লোকজনের উদ্দ্যেশে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী, অফিসার ইনচার্জ আব্দুল বাতেন খান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান সমর দাশ, এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইনাতগঞ্জ ফাড়ি ইনচার্জ ধর্মজিৎ সিংহ, আশিষ দাশ প্রমূখ। উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী বলেন, চয়ন দাশের মৃত্যু অস্বাভাবিক, তিনি অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বিধানে সহায়তার আশ্বাস দেন। বক্তাগন চয়নের ঘাতকদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান। ওসি আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার প্রতিশ্র“তি দেন এবং বলেন আসামী যতশক্তিশালিই হউক তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদানে তার আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকবে বলে আশ্বস্থ করেন। এছাড়া পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর গ্রামের মৃত: মোশারফ আলীর পুত্র সজিব মিয়াকে প্রধান আসামী করে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে প্রায় ৮০/৯০ জনকে অজ্ঞাত রেখে মামলা দায়ের করা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বানিয়াচং উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের সিরাজ মিয়ার পুত্র সম্ভল মিয়া নবীগঞ্জ উপজেলার চৌকি গ্রামের পিলু দাশের ফিশারীতে জোরপূর্ব মাছ ধরতে যায়। এতে পিলু দাশ বাধা দিলে সম্ভল মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তাকে প্রানে হত্যাসহ উচিত শিক্ষা দেয়ার হুমকি দেয়। এর জের ধরে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে দৌলতপুর গ্রামের মৃত চান মিযার পুত্র আবুল কালাম আজাদ ও মৃত সোলেমান মিযার পুত্র রব্বানী মিয়ার নেতৃত্বে প্রায় ৪০/৫০ লোক দেশীয় অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অরবিন্দু দাশের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায়। খবর পেযে পিলু দাশ ও চয়ন দাশ ঘটনা স্থলে গিয়ে তাদেরকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে উত্তেজিত লোকজন তাদের উপরও হামলা করে। এতে চয়ন দাশ গুরুতর আহত হন। এদের বাচাঁতে রতন দাশ এগিয়ে আসলে তার উপরও হামলা করা হয়। এক পর্যায়ে উভয় গ্রামের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় দৌলতপুর গ্রামের লোকজন চৌকি গ্রামের সমীরণ দাশের একটি মটর সাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে নবীগঞ্জের ইনাতগঞ্জ ও বানিয়াচং-এর মার্কুলী ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনা স্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে ঘটনার পরপরই আহত চয়ন দাশ (৩০) ও রতন দাশ টিক্কা (৩৫)কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তিকৃত চয়ন দাশের অবস্থার অবণতি ঘটলে গত শুক্রবার দুপুরে তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। ৩ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে গত শনিবার দুপুরে চয়ন দাশের মৃত্যু হয়। চয়ন দাশের মৃত্যুর খবরে এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চৌকি গ্রামের লোকজন জানান, তারা সংখ্যালঘু হওয়ার কারনে দৌলতপুর গ্রামের লোকজন অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের বাড়ি-ঘরে হামরা, ভাংচুর ও আহত করে। তাদের তান্ডবে রেহাই পায়নি শিব মন্দিরও। হামলাকারীরা উক্ত মন্দির ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষতি করেছে বলে জানা তারা।


     এই বিভাগের আরো খবর