,

নবীগঞ্জে আলোচিত ৭৫ লাখ টাকার ঘটনায় গ্রামবাসীর নিন্দা শাহীনসহ মামলার আসামীদের গ্রেফতারের দাবী

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জের বাউসা ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামে হতদরিদ্র আব্দুর রেজ্জাকের বাড়ি থেকে ৭৫ লাখ টাকা ভর্তি ব্রিফকেস লুটের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন গহরপুর গ্রামবাসী। এছাড়া চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি  পুলিশের তদন্তকালে গ্রামবাসীর বরাত দিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাজু চৌধুরীর নাম জড়িয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় এর তীব্র সমালোচনা করেন গ্রামবাসী। গত সোমবার রাতে গহরপুর গ্রামে আব্দুর রাজ্জাকের বাড়িতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের বরাত দিয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল মন্নান আব্দুর রাজ্জাককে দিয়ে গ্রামবাসীকে জড়ো করে এক সভায় মিলিত হলে উপরোক্ত দাবী ও সমালোচনা করেন গ্রামবাসী। উক্ত বৈঠকে গ্রামের কয়েক শতাধিক লোকজন অংশ গ্রহন করেন। যুবকদের উপস্থিতিও ছিল লক্ষ্যনীয়। বৈঠকের শুরুতেই ইউপি মেম্বার আব্দুল মন্নান গ্রামবাসীর উদ্যোশে বলেন, সন্ধ্যা রাতে গহরপুর গ্রামে আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ি থেকে ব্রিফকেস লুটের ঘটনাটি এলাকার ভাবমুর্তি ক্ষুন্নের পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্ন উঠেছে। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুর রহমান উপজেলা পরিষদের গেল আইনশৃংখলা সভায় আলোচনা করে ঘটনার রহস্য উদঘাটনের দাবী জানিয়ে রেজুলেশন পাস করান। কিন্তু অদ্যাবধি পর্যন্ত ঘটনার সাথে জড়িত বাশডর দেবপাড়া গ্রামের সিএনজি চালক বদর ও গহরপুর গ্রামের আলাল এবং তিমিরপুর গ্রামের আব্দুল মালিক, ব্রিফকেসের মালিক ৭৪ লাখ টাকা দাবীদার কথিত হবিগঞ্জের শাহীনকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গ্রেফতার করতে পারেনি। সেই কারনে গ্রামবাসী সোচ্চার হলে ঘটনাটি নিয়ে আগামী আইনশৃংখলা মিটিংয়ে আলোচনার পাশাপাশি প্রয়োজনে ইউনিয়ন ব্যাপী সমাবেশ করার পরিকল্পনার অংশ হিসাবেই গহরপুর গ্রামবাসীদের নিয়ে উক্ত মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে। এর পরই গ্রামবাসী ঘটনার বিষয়টি নিয়ে তাদের মতামত ও বক্তব্য প্রদান করেন। তারা বলেন, চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি কখন কি ভাবে সংঘটিত হলো গ্রামবাসী জানেন না। এমনকি উক্ত লুটের ঘটনাটি রাজ্জাকের পাশের বাড়ির লোকজনও বলতে পারেন না। মাটির নীচ থেকে উপরোক্ত ৩ জন লোকের নেতৃত্বে একটি ব্রিফকেস নিয়ে যাবার ঘটনাটি আব্দুর রাজ্জাক চাপা দিয়ে রাখেন। ঘটনার দু’দিন পর তিনি ও গ্রামের যুবকরা শাহীনসহ আব্দুল মালিক, বদর ও আলাল মাটি কুড়ে উক্ত ব্রিফকেসটি নিয়ে গেছেন। এর কয়েকদিন পর নিজে বাচাঁর অজুহাত দেখিয়ে একটি বিশেষ রাজনৈতিক মহলের মদদে থানায় মালিক, আলাল, বদর ও উদ্দিন মিয়ার বিরুদ্ধে একটি দরকাস্থ দাখিল করেন। কিন্তু শাহীনের কাছ থেকে শুনে মুখে ৭৪ লাখ টাকা ভর্তি ব্রিফকেসের কথা বললেও মামলায় প্রায় আড়াই লাখ টাকা লুটের ঘটনা উল্লেখ করেন আব্দুর রাজ্জাক। ঘটনাটির সাথে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জাবেদুল আলম চৌধুরী সাজু’র সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে প্রশ্ন করলে গ্রামবাসী বলেন এ ঘটনার সময় গহরপুর গ্রামে সাজু চৌধুরীকে আব্দুর রাজ্জাকসহ কেউই দেখেন নি। এবং ডিবি পুলিশের কাছে গ্রামবাসীর বরাত দিয়ে সাজুর নাম প্রকাশের ঘটনাটি সম্পুর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। গ্রামবাসী বলেন ঘটনার সাথে সাজু চৌধুরীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি গ্রামবাসী জানেন না। তারা মনে করেন তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় কেউ যদি অপ্রচার করে তার দায়দায়িত্ব গ্রামবাসী নেবে না। গ্রামবাসী মামলায় উল্লেখিত আসামীদের গ্রেফতারের বিষয়ে সর্বাত্মক ভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহযোগিতা করবে। নিরাপরাধ লোককে অকারনে ফাসিয়ে কারো রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের সুযোগ গ্রামবাসী দিবে না। এ ছাড়া গহরপুর গ্রামবাসী ঘটনাটি রহস্যজনক বলেও উল্লেখ করেন। তবে কথিত গহরপুর গ্রামের জামায়াতা হবিগঞ্জে শাহীনকে গ্রেফতার করলে থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে বলে গ্রামবাসী মনে করেন। উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, হাজী আব্দুল কাদির, জে.কে হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও গহরপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল ছালাম, ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল মন্নান, হাজী আঙ্গুর মিয়া, যুবলীগ নেতা মহিবুর রহমান, আব্দুল করিম প্রমূখ।


     এই বিভাগের আরো খবর