,

নবীগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধার সন্তানকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা অভিযোগ তদন্ত শুরু

উত্তম কুমার পাল হিমেল ॥ নবীগঞ্জে জন্তরী গ্রামের মুক্তিযুদ্ধা মৃত-গৌরাঙ্গ সরকারের পুত্র গোপাল সরকারকে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ তদন্ত শুরু করছে পুলিশ। এছাড়াও স্পর্শকাতর ঘটনা নিয়ে শংশয় বিদ্যমান রয়েছে মর্মে পুলিশের তরফ থেকে জিডির খবর পাওয়া গেছে। সোমবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে সহোদর রাখাল সরকার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। শ্মশান ঘাট নিয়ে বিরোধের জের হিসেবে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগকারী রাখাল সরকার ও এলাকাবাসীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা জাতীয় হিন্দু মহাজোট, মানবাধিকার কাউন্সিল, পুজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, মুক্তিযেযাদ্ধা সন্তান কমান্ড, নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অভিযুক্ত নজাফতের পরিবার তরফ থেকে আলোচিত ঘটনাকে ষড়যন্ত্র মূলক হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার ৭নং করগাঁও ইউনিয়নের জন্তরী গ্রামের মুক্তিযুদ্ধা গৌরাঙ্গ সরকারের পুত্র গোপাল সরকার নিজেদের শ্মশান রক্ষায় বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনায় ক্ষোব্ধ হন একই গ্রামের নজাফত মিয়া ও তার লোকজন। উল্লেখিত এলাকার একমাত্র শ্মশানের ভূমি ছেড়ে দেয়ার জন্য সনাতন ধর্মালম্বীদের হুমকি দেন। ওই ভূমি তাদের প্রয়োজন নেই মর্মে লিখিত দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন নজাফত। গত ২১ আগষ্ট রাত প্রায় ১২ ঘটিকায় নজাফত মিয়ার নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা ঘরের ভিতর প্রবেশ করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে গোপাল সরকারের শরীরে ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে গোপাল সরকারের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। বর্তমানে সে সিলেট ওসমানী মেডিকেল বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এনিয়ে অভিযোগকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। রহস্য উদঘাটন এবং সংশয় যুক্ত হওয়ায় পুলিশের তরফ থেকে জিডির খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি তদন্তক্রমে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা জাতীয় হিন্দু মহাজোট, মানবাধিকার কাউন্সিল, পুজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, নেতৃবৃন্দ পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান। নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আবদুল বাতেন খাঁন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগকারী রাখাল সরকার বলেন, অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য প্রাণ নাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। ওদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উল্লেখিত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজন এখন না খেয়ে আছে। বিষয়টি সুষ্ট তদন্ত ক্রমে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমুলক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহবান জানাই। উপজেলা মানবাধিকার কাউন্সিলের সাধারন সম্পাদক প্রভাষক উত্তম কুমার পাল হিমেল বলেন, শ্মশান নিয়ে লড়াই করতে গিয়ে গোপাল সরকার মৃত্যুর সাথে বর্তমানে পাঞ্জা লড়ছে। নজাফত বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে ওই পরিবার। হিন্দু মহাজোটের যুগ্ম সম্পাদক অমলেন্দু সুত্রধর, পিন্টু রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক জন্টু রায়, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক কালীপদ ভট্রাচার্য্য, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব রতœদ্বীপ দাস রাজু, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান অরবিন্দু দাশসহ নেতৃবৃন্দ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং নজাফত ও তার লোকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দাবী জানান। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান সাংবাদিক রাকিল হোসেন বলেন, স্বাধীন দেশে রাজাকার বাহিনীর তান্ডব সহ্য করা হবেনা। অবিলম্বে নজাফত ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান।


     এই বিভাগের আরো খবর