,

নবীগঞ্জে সিএনজি চালক হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রেমিকাসহ ৫ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের ॥ শ্রমিক ও মালিক সমিতির প্রতিবাদ সভা

এম.এ আহমদ আজাদ ॥ নবীগঞ্জের আম গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় এক সিএনজি চালকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গতকাল রাতে নবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। বেশির ভাগ মানুষের ধারণা এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড করে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। সুরতহাল রিপোটে একাধিক আঘাতের চিহৃ পাওয়ায় পুলিশ হত্য মামলা হিসাবে আমলে নিয়েছে। নিহত রোমনের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে রোমনের প্রেমিকাসহ ৫ জন কে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। রোমন হত্যা মামলার সন্দেহ ভাজন আসামী হিসাবে গ্রেফতার কৃত হাজেরা বেগম কে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে বিকালে নিহত রুমানের হত্যাকারীদের ফাঁসিরদাবি করে অটোরিক্সা মালিক ও শ্রমিক সমিতি প্রতিবাদ সভা করে আগামী ৭দিনের ভিতর মামলার রহস্য উদঘাটনসহ আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে আল্টিমেটাম, দিয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের বেতাপুর গ্রামের জামাল মিয়ার পুত্র রুমান মিয়া অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। গত শুক্রবার দুপুরে শংকরসেনা গ্রামের তৌলদ মিয়ার বাড়ির পাশে একটি আম গাছে কামিজ দিয়ে ঝুলানো অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে গোপলার বাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আরিফের নেতৃত্বে একদল পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। মামলার আসামীরা হলেন, রোমনের প্রেমিকা সুলতানা বেগম (২০) তার মা হাজেরা বেগম (৪৫) বাবা তৌলদ মিয়া (৫২) বোন বেদানা বেগম (২৩) ভাই শিমুল মিয়া (২০) সর্বসাং শংকরসেনা গজনাইপুর ইউনিয়ন উপজেলা নবীগঞ্জ জেলা হবিগঞ্জ। মামলার এজাহারে যা বলা হয়েছে ঃ মামলার বাদী জাহানারা বেগম বলেছেন তার ছেলে রুমান মিয়া পেশায় একজন সিএনজি চালিত অটো রিক্সা চালক ছিল। কিছু দিন পূর্বে ১নং বিবাদী সুলতানা বেগমের সহিত আমার ছেলে মৃত: রুমান মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়িয়া উঠে। মাঝে মধ্যে ১নং বিবাদী আমার ছেলে রুমান মিয়াকে তাঁহার মোবাইল ফোনে কল করিয়া তাঁহাদের বাড়িতে নিয়া যাইত। ঘটনার তারিখে মৃত: রুমান মিয়া, সিএনজি চালিত অটো রিক্সা রাত অনুমান ৯.৩০ ঘটিকার সময় মালিকের গেরেজে রাখিয়া আউশকান্দি বাজারে যায়। আউশকাান্দি বাজারে যাওয়ার পর স্বাক্ষী মাসুম মিয়ার সহিত দেখা হয়। ঐ সময় আমার ছেলের মোবাইল ফোনে কল আসিলে সে কলটি কাটিয়া দিয়া দ্রুত ফেক্সি লোডের দোকানে যায়। ফেক্সি লোডের দোকানে যাওয়ার পর হইতে তাহার কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায় নাই। পরদিন সকাল অনুমান ৮ ঘটিকার সময় লোকজনের নিকট হইতে জানিতে পারি আমার ছেলে রুমান মিয়ার লাশ ঘটনাস্থলে শংকরসেনা গ্রামে পাওয়া গিয়াছে। এই সংবাদ পাইয়া আমি সাথে সাথে কোন কোন স্বাক্ষী সহ ঘটনাস্থলে গিয়া বিবাদীগণের বসত বাড়ীর পশ্চিম দিকে পুকুরের পশ্চিম পাড়ের একটি আম গাছে আমার ছেলে রুমান মিয়ার লাশ ঐ আম গাছের একটি ডালে দুই পা দিয়া বসা অব¯’ায় এবং সামান্য একটু উপড়ে অন্য একটি ডালে ও লাশের গলায় একটি মেয়েদের কামিজ দিয়া পেছানো আছে। ঐ সময় বিবাদীগণের বসত ঘরটি তালা বন্ধ দেখা যায়। বেলা ১১ ঘটিকার সময় পুলিশ আসিয়া আমগাছ হইতে আমার ছেলে রুমান মিয়ার লাশ নিচে নামায়। লাশের সুরতহাল তৈরীর সময় দেখা যায় মৃত রুমান মিয়ার ঘাড়ের দিকে কালো জখম ডান পাশের উরুতে লাল চটকানো জখমের দাগ আছে। এছাড়া মৃত রুমান মিয়ার অন্ডকোষে ছোট ছোট ছিদ্র রক্তাক্ত জখম পাওয়া যায়। আশপাশের লোকজন জানায় বিবাদীগণ অজ্ঞাত বিবাদীগণকে নিয়া আমার ছেলেকে খুন করিয়া ভোর বেলা পলাইয়া যায়। আত্মগোপনে থাকা ২নং আসামী পলাইয়া যাইতে থাকিলে স্থানীয় জনগণ তাঁহাকে আটক করিয়া পুলিশে সোপর্দ করেন। বিবাদীগণ অজ্ঞাত বিবাদীগণকে সাথে নিয়া আমার ছেলেকে খুন করিয়া আম গাছে ঝুলাইয়া রাখিয়াছিল। নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল বাতেন খাঁনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন লাশের সুরতহালে একাধিক আঘাতের চিহৃ পাওয়ার কারনে হত্যা মামলা হিসাবে রের্কড করা হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর