,

বাহুবলে ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বখাটেদের হামলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ফাঁকাগুলি সংঘর্ষে ছাত্রছাত্রী সহ অর্ধশতাধিক লোক আহত ॥ স্কুল ভাংচুর

নূরুল ইসলাম মনি ॥ ছাত্রীদের যৌন হয়রানীর প্রতিবাদে মানববন্ধনে বখাটেদের হামলার ঘটনার জের ধরে স্কুল ছাত্রছাত্রী সহ দুই গ্রামবাসীর ২ ঘন্টা স্থায়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ছাত্রছাত্রীসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে হাইস্কুলের অফিস কক্ষে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবন্দ আটকা পড়েন। দুই ঘন্টা আটকে থাকার পর পুলিশের সহায়তায় তারা উদ্ধার হন। এ সময় হাইস্কুলে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৪২ রাউণ্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করেছে। আহতদের বাহুবল ও সিলেট হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। প্রত্যদর্শীরা জানান, বাহুবল উপজেলার ফয়জাবাদ হাই স্কুলের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রীদের নিয়মিত যৌন হয়রানী করে স্থানীয় পূর্ব ভাদেশ্বর প্রকাশিত পুকুরপাড় গ্রামের কতিপয় বখাটে। এ বিষয়ে গত পরশু শনিবার বিদ্যালয়ে একটি সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও সমাধান হয়নি। এ প্রেক্ষিতে গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে ফয়জাবাদ হাই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের সামনে রাস্তায় মানববন্ধনের আয়োজন করে। মানববন্ধন চলাকালে বখাটেরা ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা চালায়। এ অবস্থায় স্থানীয় সুন্দ্রাটিকি গ্রামের লোকজন মানববন্ধনকারীদের পক্ষে অবস্থান নেয়। এতে সুন্দ্রাটিকি ও পূর্ব ভাদেশ্বর গ্রামবাসীর মাঝে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সকাল সোয়া ১০টার দিকে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষস্থলে স্কুলের মাঠে হওয়ায় অফিস কক্ষে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্দ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। ২ ঘন্টা সংঘর্ষ চলাকালে স্কুলের অফিস কক্ষ সহ বিভিন্ন শ্রেণী কক্ষে ভাংচুর চালানো হয়। আটকে পড়া শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির উপর হামলার চেষ্টা চালানো হয়। সংঘর্ষ চলাকালে বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই, এএসপি (সার্কেল) সাজ্জাদ ইবনে রায়হান, ভাদেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান মত্তাছির মিয়া সহ নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালান। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের আনে এবং অবরুদ্ধ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ম্যানেজিং কমিটির নেতৃবৃন্দকে উদ্ধার করে। সংঘর্ষে গুরুতর আহতদের মাঝে সুন্দ্রাটিকি গ্রামের প্রবাসী দোলন মিয়া (৩৫) কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল এবং ১০ম শ্রেণীর ছাত্র জাকির হোসেন, রুবেল, তফাজ্জুল, ইমাম, মুছাব্বির, রাশেল, আফজল, তুহিন, জায়েদ; ৯ম শ্রেণীর হালিমা, লিজা, নূরুল হক, রহিম ৮ম শ্রেণীর ফরিদা, তানজিনা, কাওসার, জুয়েল, রাজু, আলমগীর, ৭ম শ্রেণীর লুবনা, সুবর্ণা, হোসনা সহ বেশ কয়েকজনকে বাহুবল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোশাররফ হোসেন পিপিএম বলেন, সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৪২ রাউণ্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। বেলা ১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উভয় পক্ষে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড়ধরণের সংঘর্ষ বেঁধে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও নেতৃবৃন্দ অবস্থান করছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর