,

বিবিয়ানায় সামিটের মাটি ভরাটের কাজ শেষ আবারো কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনে প্রভাবশালী মহল

এম.এ আহমদ আজাদ ॥ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার নিকটবর্তী নবীগঞ্জের বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্টে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সামিট পাওয়ারের সব কাজ শেষ পর্যায়ে। তারপরেও পাওয়ার প্ল্যান্টের ভূমি ভরাটে সামিট পাওয়ারের নাম ব্যবহার করে কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব আত্মসাত করছে একটি প্রভাবশালীমহল। অপরদিকে সামিট পাওয়ারের বালু ভরাটের কাজ শেষ হলেও তাদের সাব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিটকো পুরানো অনুমোদন নবায়নের তৎপরতা শুরু করেছে। বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙ্গন মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে এ আশঙ্কায় নদী তীরবর্তী মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। জানাযায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর বাজারের এক কি:মি: এর মাঝে অবস্থিত নবীগঞ্জের বিবিয়ানা ৯শ মেগাওয়াট পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প। এই প্ল্যান্টের ভূমি ভরাটে কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সামিট পাওয়ারের অনুমোদিত সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে। ভূমি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় পরিবেশ অধিদপ্তর, নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের অনাপত্তির প্রেক্ষিতে অবানিজ্যিক ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে ৬৯ লাখ ১০ হাজার ঘনফুট বালু/মাটি উত্তোলনের অনুমোদন দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সুত্র জানায়, সিটকো বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্টস্থল ভরাটে ব্যবহার করে এক কোটি ৩৮ লাখ ঘনফুট বালু। এছাড়া ব্যক্তিগত আরো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে অন্তত প্রায় কোটি ঘনফুট বালু বিক্রি করে। জেলা প্রশাসন ও নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ পেয়েছে প্রতি ঘনফুটে ২৫ পয়সা হিসেবে ৬৯ লাখ ১০ হাজার ঘনফুটে পেয়েছে প্রায় ৩৪ লাখ টাকা। অতিরিক্ত উত্তোলিত প্রায় দুই কোটি ২০ লাখ ঘনফুট বালুর রাজস্ব আত্মসাৎ করে সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিটকো। একটি বিশ্বস্থ সুত্র জানায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সামিট পাওয়ারের বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্টের মাটি ভরাটসহ সব কাজ শেষ হয়ে গেলেও তাদের সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিটকো পূর্বে অনুমোদন করা কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের অবানিজ্যিক চুক্তি নবায়ণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কোন আপত্তি ও ক্ষয়তির আশঙ্কা নেই উল্লেখ করে সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর সিটকোর পক্ষে নবায়ণের মতামত দিয়েছে। কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের ফলে নদী তীরবর্তী এলাকা ভাঙ্গন কবলে পড়বে বলে নবীগঞ্জের দূর্গাপুর গ্রামের তৈয়ব আলীর দায়ের করা হবিগঞ্জ জজ আদালতে একটি মামলা চলছে। সুত্র আরো জানায়, বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্পে সামিট পাওয়ারের মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়ে গেছে। সামিট পাওয়ারের চাহিদার তুলনায় ৪ গুণ বেশী বালু উত্তোলন করে সিটকো। ফলে কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে সিটকো। সামিট পাওয়ারের অনুমোদিত সাব-ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবার এই চুক্তি নবায়ণ করা অবৈধ। সরকারি রাজস্ব আতসাতের পায়তারা করছে তারা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিটকোর পরিচালক আজিজুল হকের ব্যক্তিগত মোবাইলে একাধিক বার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। সামিট পাওয়ারের বিবিয়ানা পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রকল্পের এরিয়া ম্যানেজার জহির উদ্দিন মোল্লা সমকালকে মোবাইল ফোনে জানান বিবিয়ানা প্ল্যান্টে সামিট পাওয়ারের মাটি ভরাটের কাজ শেষ। সিটকো কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের পুরানো চুক্তি কিভাবে নবায়ণ করছে তা তার জানা নেই।


     এই বিভাগের আরো খবর