,

নবীগঞ্জের গুজাখাইড় ও বানিয়াচংয়ের উমরপুরের বিরোধ সালিশে নিষ্পত্তি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার গুজাখাইড় ও বানিয়াচং উপজেলার উমরপুর গ্রামবাসীর মধ্যে হাওরের রাস্তা নিয়ে দীর্ঘ দিনের বিরোধ সালিশ বিচারে নিষ্পত্তি হয়েছে। বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তির নি:শ্বাস ফিরে এসেছে। জানা যায়, বিগত এপ্রিল মাসে নবীগঞ্জ উপজেলার গুজাখাইড় ও বানিয়াচং উপজেলার উমরপুর গ্রামের মধ্যে হাওরের বুরো ধান উঠানোর একটি রাস্তা নিয়ে বিরোধ চরম আকারে দেখা দেয়। উভয় গ্রামের শত শত মানুষ দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের শতাধিক লোক আহত হয়। পরবর্তীতে তা হাট বাজার রাস্তাঘাটে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। বানিয়াচং ও নবীগঞ্জ থানায় মামলা মোকদ্দমা হয়। নবীগঞ্জ-বানিয়াচং উপজেলা প্রশাসন পুলিশ ও জনপ্রতিনিধি এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যাক্তির্গ আপোষ মিমাংসার উদ্যোগ নেন। বিগত ৬/৭ মাস ধরে সালিশ প্রক্রিয়া চালালেও তা ব্যর্থ হয়। অবশেষে বিগত ১৫ দিন পূর্বে নবীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল গফুর চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, সাবেক কোষাধ্যক্ষ হেলাল আহমদ, ব্যবসায়ী আকিকুর রহমান, মশিউর রহমান লাভলু, যুবনেতা জসিমূল হক সোহেলকে সাথে নিয়ে বিষয়টি আপোষ মিমাংসার উদ্যোগ নেন। সালিশে উভয় গ্রামের পক্ষে সম্মতি দেয়া হয়। গতকাল সকাল ১০টায় উপজেলার বেতাপুর আছদ্দর মিয়ার বাড়ীর কাছে মাঠে এক বিশাল সালিশ বৈঠক হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরীর সঞ্চালনায় সালিশের শুরুতে সালিশ উপস্থাপনা করেন, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী। সালিশে বক্তব্য রাখেন, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, আ.ক.ম ফখরুল ইসলাম, মাসুম আহমদ জাবেদ। পরে গুজাখাইড় গ্রামের পক্ষে জবানবন্দী প্রদান করেন ইউপি মেম্বার জিল্লুর নুর, উমরপুর গ্রামের পক্ষে জবান বন্দী পেশ করেন কবির মিয়া। জবানবন্দী শেষে সভার সভাপতি আব্দুল মজিদ খান এমপি নবীগঞ্জ বাহুবল এলাকার সংসদ সদস্য এম.এ মুনিম চৌধুরী বাবু, নবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী, পৌর মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইমলাম চৌধুরী, উপজেলা ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ইজাজুর রহমান, ইউ.পি চেয়ারম্যান এড. মাসুম আহমদ জাবেদ, বানিয়াচং উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান কাশেম চৌধুরী, ইউ.পি নুরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই, আব্দুর রউফ, আ.ক.ম ফখরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টি নবীগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক শাহ আবুল খয়ের, নবীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল গফুর চৌধুরী ও নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী সমন্বয়ে বোর্ড ঘোষনা করেন। বোর্ড সর্বসম্মতিক্রমে উমরপুর গ্রামের মুরব্বীয়ানদের প্রথম দফায় সালিশ অমান্য করায় ও দ্বিতীয় দফায় গুজাখাইড় গ্রামের মুরব্বীয়ানগণ সালিশ অমান্য করায় পঞ্চায়েতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার নির্দেশনা দেয়া হয়। সালিশ বোর্ড গুজাখাইড় গ্রামকে উমরপুর গ্রামের আফসর মিয়ার চিকিৎসা বাবত ১ লক্ষ টাকা এবং উমরপুর গ্রামকে গুজাখাইড় গ্রামের আহত ও ক্ষতিগ্রস্থদের ৫০ হাজার টাকা প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিরোধীয় রাস্তা ৪ গ্রামের জন সাধারনের জন্যে উন্মুক্ত থাকবে রাস্তাঘাটে চলাচলে কোন বাধা আপত্তি করতে পারবেনা। হাওরের গো-চারন ভূমিতে গুজাখাইড়, উমরপুর, বেতাপুর কলাবাড়ী, সরিষপুর গ্রামের মানুষ জনকে গরু চড়াতে বাধা নিষেধ করা যাবেনা। ভবিষ্যতে নবীগঞ্জ বানিয়াচং সড়কে কিংবা বাজারে, রাস্তাঘাটে আক্রান্ত হলে প্রতিপক্ষের গ্রামকে ১ লাখ টাকা মুচলেকা আদায় সাপেক্ষে বিচার কাজে হাত দেয়া হবে। উভয় পক্ষ নিজ নিজ খরচে মামলা উঠাবে। সালিশ বিচারে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নবীগঞ্জ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ লিয়াকত আলী, বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোজাহিদ আহমদ, বিএনপি নেতা তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক শিহাব আহমদ চৌধুরী, সমাজ সেবক বজলুর রশীদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কাউন্সিলর রিজভী আহমদ খালেদ, কেন্দ্রীয় ছাত্র সমাজের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছাদিকুর রহমান তালুকদার, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল কাইয়ুম, ময়না মিয়া, আব্দুল মালিক, ছাত্রদল নেতা মোশাহিদ আলম মুরাদ, নবীগঞ্জ উপজেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি দুলাল চৌধুরী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টি নেতা মুরাদ আহমেদ প্রমূখ।


     এই বিভাগের আরো খবর