,

প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষা দেওয়া হলো না ফারজানার নবীগঞ্জের দীঘলবাঁক গ্রামে সম্পন্ন হয়েছে বাল্য বিবাহ

রাকিল হোসেন ॥ নবীগঞ্জের পল্লীতে এক প্রবাসী বরের বাড়িতে এনে ফারজানা নামের এক শিশুর বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে গতকাল। সিলেটের ওসমানীনগরের রাইকদাড়া গ্রামের ফারজানা নামের ওই শিশুর আগামী ২০ নভেম্বর বাল্য বিয়ের তারিখ নির্ধারিত ছিল। জানা যায়, বিষয়টি জানার পর বিয়ের আয়োজনকারী বিমাতা ছালেখা বেগমকে তার বাড়ীতে গিয়ে বারংবার সতর্ক করেছিলেন বালাগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, মানবাধিকার কর্মী ও স্থানীয় এলাকাবাসী। কিন্তু কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে শিশু ফারাজানার বিমাতা স্থানীয় কিছু বখাটে ও স্বার্থান্বেশী মহলের প্ররোচনায় ৫ম শ্রেনীর সমাপনী পরীক্ষা দেওয়ার আগেই বিয়ের কাজ সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেন। আহনগতভাবে বাধার কারণে কনের বাড়ীতে বিয়ের অনুষ্টান করতে না পেরে গতকাল রবিবার প্রবাসী বর শাহাজাহানের বাড়ী নবীগঞ্জের দীঘলবাঁকে সম্পাদন হয়েছে ফারজানার বিয়ের কাজ। ফারজানা বেগম শুভ ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীরস্থ আব্দুছ ছোবহান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী। তার বাড়ী একই উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের জায়ফর পুর গ্রামে হলেও স্থায়ীভাবে বসবাস করছে দয়ামীর ইউনিয়নের রাইকদাড়া গ্রামে। তারা বাবার নাম আব্দুল বারী ও মাতা মিনারা বেগম। স্কুলের রেকর্ড অনুযায়ী তার জন্ম সন ১০ জানুয়ারী ২০০১ ইংরেজী, তবে ভূয়া জন্ম সনদে তার বয়স ১৮ দেখানো হয়েছে। ফারজানা আসন্ন প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষার্থী। স্থানীয় সূত্র জানায়, আগামী ২০ নভেম্বর ফারজানার বিয়ের তারিখ পাকাপোক্ত হয়। খবরটি জানাজানির পর ফারজানার বিয়ে বন্ধ করতে স্থানীয় প্রশাসন থেকে সৎ মা ছালেখা বেগম কে বারবার অবহিত করা হয়। কিন্তু ছালেখা বেগম এতে কর্নপাত করেননি। বিয়ের নির্ধারিত তারিখের আগে তার বাড়ী থেকে আনুষ্টানিকতা করে শিশু ফারজানাকে বিয়ে দিতে কয়েক দফা চেষ্টা করেন ছালেখা বেগম। কিন্তু সেখানকার সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো ফারজানার বিয়ে বন্ধে অত্যান্ত তৎপর ভূমিকা পালন কারায় সেখানে বিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় জেনে অবশেষে গতকাল প্রবাসী বর শাহাজাহানের বাড়ী নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাঁক ইউনিয়নের দীঘলবাঁক গ্রামে সম্পাদন হয়েছে ফারজানার বিয়ের কাজ। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাহমিদা ইয়াসমীন বর শাহজাহানের বাড়ীতে গিয়ে ফারজানার বিয়ের সত্যতা পান। এ সময় ভূয়া জন্ম সনদ সামনে তুলে ধরা হয়। এ ব্যপারে বালাগঞ্জ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ চন্দ্র মন্ডল বলেন, শীঘ্রই এদের বিরোদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দয়ামীর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মোশাহিদ বলেন শিশু কন্যার বাল্য বিয়ে দেওয়ার অপরাধে বিমাতা ও তার সহযোগীদের বিরোদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ১৩ নভেম্ভর এফিডেভিডের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়ে গেছে। তারা ১৮ বছরের একটি জন্ম সনদও প্রদর্শন করেছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর