সময় ডেস্ক ॥ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামের ভূমিকা অনস্বীকার্য। ইসলামে কোনো বৈষম্য নেই। উঁচু-নীচ, বিশেষ-অবিশেষের নামে কোনো অসমতা ও শ্রেণীবিভেদও সমর্থন করে না। আর এ কারণেই ধর্ম হিসেবে একমাত্র ইসলাম মানবাধিকার, নাগরিক অধিকার, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিতে পেরেছে। সৃষ্টিগতভাবে সবাই শান্তিপ্রত্যাশী। জীবনাকাশে অশান্তির কালো মেঘের ঘনঘটা কেউ দেখতে চায় না, কিন্তু চাইলেই কি আর শান্তি মেলে? শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থার খোঁজে বিশ্ববাসী ব্যস্ত। সৃষ্টির শুরু থেকেই যুগে যুগে অনেকেই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন ও কর্মসূচি দিয়েছেন, কিন্তু তাদের সেসব প্রচেষ্টা মানবজীবনের সব ক্ষেত্রে বিস্তৃত ছিল না। যেমনটি ছিল হজরত রাসুলুল্লাহর [সা.] শান্তি মিশন। তিনি মানুষের সামগ্রিক জীবনের প্রতিটি ধাপে কীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়, সে চিন্তায় কর্মপদ্ধতি প্রদান করে গেছেন। সমকালীন মানুষসহ কিয়ামত অবধি আগত মানুষকে তিনি দিয়ে গেছেন কাক্সিক্ষত শান্তির সন্ধান। মানুষের সামনে উন্মোচিত করেছেন ইহলৌকিক ও পারলৌকিক শান্তির আলোকিত দিগন্ত। মানবজীবনে যেসব পথে অশান্তি আসতে পারে, তিনি সেগুলো বন্ধ করার জন্য চেষ্টা করেছেন। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন, অত্যাচার কেয়ামত দিবসে [অত্যাচারীর জন্য] অন্ধকার হয়ে দাঁড়াবে। তিনি আরো বলেন, প্রকৃত মুসলমান সে-ই, যার মুখ ও হাত থেকে অন্য মুসলমানরা নিরাপদে থাকে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, আর তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে ধারণ কর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হইও না। আর তোমরা তোমাদের ওপর আল্লাহর নিয়ামত স্মরণ কর। যখন তোমরা পরস্পরে শক্র ছিলে। তারপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ভালোবাসার সঞ্চার করে দিলেন। অতঃপর তার অনুগ্রহে তোমরা ভাই ভাই হয়ে গেলে। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তার আয়াতসমূহ বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা হেদায়াতপ্রাপ্ত হও। [আল ইমরান: ১০৩] এ আয়াতে আল্লাহতায়ালার রজ্জু বলতে কোরআন-সুন্নাহ তথা আল্লাহর দ্বীন ইসলামকে বোঝানো হয়েছে। সেই ইসলামকে বাস্তব জীবনে কার্যকর করার মাধ্যমে সব ধরনের গোমরাহীর অনল থেকে নিজেদের রক্ষা করে সমাজে শান্তিশৃঙ্কলা প্রতিষ্ঠা করে ভাই ভাই হিসেবে থাকার কথা বলা হয়েছে।