,

কেন ফেসবুক, সরকারকে আইডির তথ্য দেয় না

সময় ডেস্ক ॥ বিভিন্ন দেশের সরকারের অনুরোধ (ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য চেয়ে পাঠানো) সম্পর্কে মার্ক জাকারবার্গ বলেছেন, সরকারগুলো মাঝে-মধ্যে তাদের দৃষ্টিতে অবৈধ কন্টেন্ট আমাদের সরিয়ে ফেলতে বলে। কিন্তু সে অনুরোধ আমাদের কমিউনিটি মানদ- লঙ্ঘন করে না। আমরা এসব সরকারি আদেশ সংক্রান্ত তথ্য আমাদের ‘গ্লোবাল গভর্নমেন্ট রিকোয়েস্টস রিপোর্টে’ সন্নিবেশ করে থাকি। অপ্রয়োজনীয় বা সরকারি হস্তক্ষেপ থেকে আমাদের কমিউনিটিকে রক্ষা করতে আমরা লড়াই করি। জানা গেছে, যেসব দেশে ফেসবুকের অফিস বা অ্যাডমিন প্যানেল নেই সেসব দেশ থেকে সরকার কোনও আইডির বিপরীতে তথ্য চেয়ে পাঠালে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বেশিরভাগ সময়ই দেয় না। তবে অনুরোধের বিপরীতে যথার্থ কারণ পেলে সংশ্লিষ্ট আইডি ব্লক করে বা বন্ধ করে দেয় কিন্তু ব্যবহারকারীর কোনো তথ্য সরকারকে দেয় না। কারণ যে দেশে ফেসবুকের অফিস বা অ্যাডমিন প্যানেল রয়েছে সে দেশের আইন মেনেই ফেসবুক তার কার্যক্রম পরিচালনা করে। কারণ হিসেবে ফেসবুকের ভাষ্য, আমাদের কমিউনিটিকে রক্ষা করাই আমাদের কর্তব্য। তবে যেখানে অফিস রয়েছে সে দেশের সরকারের চাওয়া পাওয়া এবং অনুরোধকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে ফেসবুক। কোনো ব্যক্তির তথ্য চেয়ে পাঠালে সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর আইডি যদি ওই দেশের হয়ে থাকে তাহলে সেগুলো বন্ধ করতে পারে বা তথ্য দিতে পারে। আইপি সংশ্লিষ্ট দেশের না হলে ফেসবুক সেগুলোর বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। সব জায়গার মানুষকে শেয়ার করার ক্ষমতা দেওয়া এবং বিশ্বকে আরও বেশি উন্মুক্ত ও সংযুক্ত করে তোলাই ফেসবুকের লক্ষ্য। এমনটাই জানিয়েছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। সোমবার সর্বশেষ গ্লোবাল গভর্নমেন্ট রিকোয়েস্ট রিপোর্ট প্রকাশ সম্পর্কে নিজের ফেসবুক ওয়ালে দেওয়া স্ট্যাটাসে একথা জানান তিনি। ওই স্ট্যাটাসে তিনি ফেসবুকের কমিউনিটি শেয়ার নীতিমালা থেকে সরকারি অনুরোধের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। মার্ক জাকারবার্গ লিখেছেন, একটি আদর্শ বিশ্বে আমাদের ইচ্ছামতো সবকিছু স্বাধীন ও নিরাপদভাবে প্রকাশ করতে পারলে আমরা প্রত্যেকে শক্তিশালী বোধ করব। এক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রতিটি দেশে আইন রয়েছে যা জননিরাপত্তা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ রক্ষার্থে আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় শেয়ার করতে বাধা দেয়। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার বেশিরভাগের ইন্টারনেট সুবিধা না থাকায় ইচ্ছামতো যোগাযোগ করার মতো নিখুঁত কোনো মাধ্যম এখনও নেই উল্ল্যেখ করে তিনি বলেন, যদি ইন্টারনেট আর আইনি অধিকার থাকতো তারপরও হয়তো মানুষ হয়রানি, সহিংসতা, সন্ত্রাস বা স্রেফ অস্বস্তিকর সামাজিক পরিস্থিতির ভয়ে নিজেদেরকে সেন্সর করত। এ বিষয়ে তিনি আরও লিখেছেন, অনেকে বলে থাকেন, মানুষের মতপ্রকাশ সীমাবদ্ধ করার সরকারি আদেশ উপেক্ষা করা করা উচিত। যদি তাতে ওই দেশে ফেসবুককে ব্লকও করে দেওয়া হয়, আমি মনে করি না এটা সঠিক। আমি বিশ্বাস করি এসব দেশের লাখ লাখ মানুষ যারা প্রতিদিন বন্ধু-স্বজন ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য ফেসবুকের ওপর নির্ভর করেন তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। আমরা যদি আইনি কোনো সরকারি আদেশ উপেক্ষা করি আর এরপর আমাদের ব্লক করে দেওয়া হয়, তাহলে এত মানুষের কণ্ঠ শব্দহীন হয়ে যাবে। তাছাড়া সরকার যে কন্টেন্ট অবৈধ বলে বিশ্বাস করে তা এমনিতেই ব্লক করা দেওয়া হবে। বিষয়টা হলো বেশির ভাগ মানুষকে সর্বোচ্চ মতপ্রকাশের সুযোগ দেওয়া। বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট ডট ওআরজি চালুর সুফল উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, আমরা দেখেছি সংযুক্ত হওয়ার পর মানুষকে বিস্ময়কর সব জিনিস করতে। অনেক বছর পর দূরবর্তী স্বজনদের সঙ্গে মানুষ যোগাযোগ করেছে প্রথমবারের মতো। ছোট ব্যবসা মালিকরা অনলাইনে নতুন ক্রেতা খুঁজে পেয়েছে। সন্তান প্রত্যাশী মা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। জাকারবার্গ বলেন, প্রতিটি ইন্টারনেট সংযোগ গুরুত্বপূর্ণ। শেয়ার করার প্রতিটি সেবা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি আইন গুরুত্বপূর্ণ। আপনার নিরাপত্তা রক্ষার্থে প্রতিটি মাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন আমরা এসব তৈরি করি, আবিষ্কার করি। বেশির ভাগ মানুষকে সর্বোচ্চ মতপ্রকাশের সুযোগ দিতে লড়াই ফেসবুক লড়াই করছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।


     এই বিভাগের আরো খবর