,

নবীগঞ্জে পুলিশ শ্রমিক সংঘর্ষ রাবার ভুলেট নিক্ষেপ ॥ শহর রণক্ষেত্র ॥ পুলিশসহ আহত ১০ ॥ প্রতিবাদে প্রায় ৫ ঘন্টা যানচলাচল বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জে সিএনজি শ্রমিকদের সংর্ঘষ থামাতে গিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের সাথে পুলিশের হট্রগোল, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, গুলি ও ইটপাটকেলের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রবিবার বিকাল ৪টায় শহরের শেরপুর রোডস্থ এ ঘটনায় গোটা শহর রনক্ষেত্রে পরিনত হয়েছে। পুলিশ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ ইয়াওর মিয়া এবং শ্রমিক সুমন মিয়াকে আটকের ঘটনায় এ পরিস্থিত সৃষ্টি হয়েছে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুলিশসহ অনন্ত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ ৪ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা করেছে। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে নবীগঞ্জ উপজেলার আঞ্চলিক সকল সড়কের যানবাহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে শ্রমিক ইউনিয়ন এবং মিনিবাস মালিক সমিতির সুত্রে জানা গেছে। এছাড়া আটককৃত শ্রমিক নেতা ইয়াওর মিয়াসহ ২ জনকে শ্রমিকদের বাধার মুখে জে.কে হাইস্কুল পয়েন্টে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে শত শত শ্রমিকরা রাস্তায় রাস্তায় ব্যরিকেট তৈরী করে শহরের গুরুত্বপুর্ণ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানাযায়, গতকাল রবিবার সকালে উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের সৈয়দপুর বাজারে অনুষ্ঠিত একটি শালিস বৈঠকে নবীগঞ্জ কাজিরবাজার ষ্ট্যান্ডের সিএনজি শ্রমিক নেতা মাওঃ রফি উদ্দিন ধনাই, আল আমিন, কাজল মিয়াসহ কয়েক জন শ্রমিক নেতাকে মারধোর করা হয়েছে। তারা নবীগঞ্জে ফিরে এসে শ্রমিকদের ঘটনাটি জানালে ওই ষ্ট্যান্ডের সিএনজি শ্রমিকরা লাটিসোটা নিয়ে শেরপুর রোডস্থ সিএনজি ষ্ট্যান্ডে গিয়ে আউশকান্দি এলাকার সিএনজি শ্রমিকদের খোজাঁখুজি করলে ওই এলাকায় উত্তেজনা ও ত্রাসের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ লিয়াকত আলীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌছলে উত্তেজিত শ্রমিকরা দিকবেদিক ছুটাছুটি করে পালিয়ে যায়। এ সময় পুলিশের এসআই আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে কয়েক জন পুলিশ সদস্য শ্রমিক ইউনিয়ন নবীগঞ্জ আঞ্চলিক শাখার সভাপতি ইয়াওর মিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মা-হোটেলে সিএনজি শ্রমিকদের খোঁজতে যায়। এনিয়ে পুলিশ ও শ্রমিকনেতা ইয়াওর মিয়ার মধ্যে বাদানুবাদের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনর্চাজ মোঃ লিয়াকত আলীর মাথায় আঘাত করে। এ সময় তাঁর মাতায় হ্যালমেট থাকায় তিনি রক্ষা পান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশ লাটিচার্জ শুরু করে এবং শ্রমিক নেতা ইয়াওর মিয়া ও শ্রমিক সুমন মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে বিক্ষোব্ধ শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বোতল ও ইট দিয়ে ঢিল ছুড়লে পুলিশ ১১ রাউন্ড রাবার ভুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় শ্রমিকরা কিছুটা পিছু হটলে আটকৃতদের থানায় নিয়ে যাবার পথে জে.কে হাইস্কুল পয়েন্টে শ্রমিকদের বাধার মুখে তাদের ছেড় দেয় পুলিশ। ঘটনায় আহত শ্রমিক কংশু দাশ (৩০), কছরু মিয়া (২৫), তৌহিদুল হক (৪৫) ও জুয়েল মিয়া (২২) কে সিলেট প্রেরন করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে মুহুর্তের মধ্যেই শত শত শ্রমিক উপজেলার সকল আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ গাড়ী দিয়ে ব্যরিকেড তৈরি করে বন্ধ করে দেয়। এবং উত্তেজিত শ্রমিকরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। উক্ত ঘটনায় শহরের ব্যবসায়ী, পথচারীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে। গাড়ী চলাচল না করায় যাত্রীদের দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য এম.এ মুনিম চৌধুরী বাবু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী, নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ, পৌর মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার সাজিদুর রহমান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সাইফুল জাহান চৌধুরীর মধ্যস্থতায় শ্রমিক নেতা ইয়াওর মিয়া, মালিক সমিতির সভাপতি বজলুর রশীদ ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম সুমনকে নিয়ে জে.কে হাইস্কুলে সমঝোতার বৈঠক বসে এবং আগামী ০৩ মার্চ রবিবার সকাল ১০টায় উপজেলা অডিটোরিয়ামে স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় পুলিশ প্রশাসন ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর