,

নবীগঞ্জে অপহরণ মামলার ভিকটিমকে মৌলভীবাজার থেকে উদ্ধার করে পুলিশ মামলাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট এলাকার অপহৃত কতিত ছালিক মিয়াকে ঘটনার ১২ দিন পর এবং মামলা দায়েরের ৪ দিনের মাথায় গতকাল বুধবার সকালে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ মৌলভীবাজার সদরের মোস্তফাপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত ছালিক মিয়া মৌলভীবাজরের জমুনিয়া এলাকার মৃত রিয়াজ উল্লার ছেলে। সে দীর্ঘদিন ধরে নবীগঞ্জের সদরঘাট এলাকায় বসবাস করে আসছিল। গত ২৫ এপ্রিল তার ভাই রফিক মিয়া বাদী হয়ে ছালিক মিয়াকে অপহরন করা হয়েছে অভিযোগ এনে পুর্ব দেবপাড়া গ্রামের আমির হোসেন সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলার পিছনে দিনারপুর এলাকার এক লন্ডনী ও তার সহযোগিদের হাত রয়েছে বলে গ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন। এদিকে মিথ্যা সাজানো অপহরণ মামলার প্রতিবাদে এবং এ ঘটনার মুল হোতা মামলাবাজ লন্ডন প্রবাসী আসাদ মিয়া, মোহাম্মদ আলী ও জাহাঙ্গীর মিয়াকে গ্রেফতারের দাবীতে ফুসে উঠেছে এলাকাবাসী। গতকাল বুধবার প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ দাবী জানানো হয়েছে। জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের সদরঘাট কবুলেশ্বর গ্রামের লন্ডন প্রবাসী আসাদ মিয়া, র‌্যাবের সোর্স দাবীদার মোহাম্মদ আলী ও জাহাঙ্গীর মিয়া গংদের সাথে গ্রামের পঞ্চায়েত পক্ষের লায়েক পতিত জায়গা নিয়ে বিরুধ সৃষ্টি দেখা দেয়। কিছুদিন পূর্বে লন্ডন প্রবাসী আসাদ মিয়া জোর পুর্বক গ্রামের পঞ্চায়েতী গোচারন ভূমি মালিকানা দাবী করে জবর দখল করে গৃহ নির্মানের চেষ্টা করলে গ্রামবাসী তাদের বাঁধা দেয়। এ নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এডঃ মাসুম আহমেদ জাবেদের মধ্যস্ততায় সালিশ বৈঠকে লন্ডন প্রবাসী ও তার সহযোগীরা পঞ্চায়েতী গোচারন ভূমি দখল ছেড়ে দেয়। এবং গ্রামবাসীকে জানায় সে ওই জায়গাতে আর দখলে যাবেনা। এক পর্যায়ে ওই সুচতুর লন্ডন প্রবাসী ও মোহাম্মদ আলী গ্রামের সাধারণ মানুষকে হয়রানী করতে গত ২০ এপ্রিল পঞ্চায়েত পক্ষের প্রায় ৩৩ জনকে আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা (এফ.আই.আর) করেন। এ খবর শুনে পুরো গ্রামবাসী হতবাক হয়ে পড়েন। গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে তুমুল উত্তেজনা। পরদিন ওই লন্ডন প্রবাসী আসাদ মিয়া তার জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ আদালতে ১০৭ ধারায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন এবং ওই দিনই রাতে লন্ডন প্রবাসী আসাদ মিয়া তার চাচাতো ভাইয়ের বাড়ির কাজের লোক রফিক মিয়াকে বাদী করে তার পাওয়ার টিলার গাড়ীর চালক ও বাড়ির কেয়ারটেকার ছালিক মিয়াকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ করে গ্রামের ৭ জনের বিরুদ্ধে অপর আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এসব সাজানো মামলায় হয়রানির শিকার হয়ে গ্রামবাসী স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে বিচার প্রার্থী হন। কিন্তু লন্ডনী আসাদ মিয়া ও মোহাম্মদ আলী গংরা গ্রামবাসীকে আল্টিমেটাম দেয় তাদের নিশ্চিহ্ন করে ছাড়বে। আর না হয় তাদের কে গ্রামের গোচারণ ভূমি ছেড়ে দিতে হবে। আর নিখোঁজ ছালিক কে ফিরিয়ে দিতে হবে। গ্রামের লোকজন মিথ্যা মামলায় আক্রান্ত হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে গ্রামবাসি জানতে পারেন নিখোঁজ ছালিক মিয়া মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর আঞ্চলিক ব্র্যাক অফিসের কেয়ারটেকার হিসাবে কাজ করছে। এ খবর পেয়ে তারা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এডঃ মাসুম আহমেদ জাবেদ কে সঙ্গে নিয়ে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ রুমেল আহমদ, ইউপি সদস্য মনসুর আহমদ ও মুশাহিদ আলমকে সঙ্গে নিয়ে অপহৃত ছালিককে ব্র্যাক অফিসে আটক করে নবীগঞ্জ থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) গৌর চন্দ মজুমদার একদল পুলিশ নিয়ে মৌলভীবাজার সদর থানার সহযোগিতায় ছালিক মিয়াকে উদ্ধার করে নবীগঞ্জ থানায় নিয়ে আসেন। উদ্ধারকৃত ছালিক মিয়াকে কোর্ট হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। এরপর থেকে লন্ডন প্রবাসী ও তার সাথীরা গাঁঢাকা দিয়েছে বলে স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে। এদিকে গতকাল গ্রামবাসি সদরঘাট ইমামগঞ্জ বাজারে লন্ডনী মামলাবাজ আসাদ মিয়া ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতারের দাবিতে প্রতিবাদ সভা করেছে। প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন অলিদুর রহমান, আমির হোসেন, মতলিব মিয়া, তাজুদ মিয়া, মজিদ মিয়া প্রমূখ।


     এই বিভাগের আরো খবর