,

প্রতিদিন মিলবে ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস রশিদপুর গ্যাস ক্ষেত্রে আরো ৩টি কূপ খনন করার প্রস্তুতি

বাহুবল প্রতিনিধি ॥ বাহুবল উপজেলার রশিদপুর গ্যাসক্ষেত্রে আরও ৩টি কূপ খনন করা হবে। ইতোমধ্যেই কূপ খননের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। আগামী ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে খনন কাজ শুরু হবে। বিশেষজ্ঞদের অভিমত ২০১৭ সালের শেষ দিকে নতুন কূপগুলো থেকে জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হবে। জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৯ আগস্ট রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের ৮নং কূপ থেকে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়। এতে প্রতিদিন ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। সব মিলিয়ে রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড থেকে বর্তমানে দৈনিক ৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। উল্লেখ্য, ৮নং কূপ খননের পর নতুন করে আর কোন কূপ এখানে খনন করা হয়নি। বর্তমানে যে তিনটি কূপ খননের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ চলছে, এখান থেকে ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া গেলে মোট গ্যাস প্রাপ্তির পরিমাণ ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হবে। সূত্র জানায়, বাহুবল উপজেলার রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডটি ১৯৬০ সালে প্রস্তুত করা হলেও ৭টি কূপ খননের মাধ্যমে ১৯৯৩ সাল থেকে গ্যাস উত্তোলন ও সেই সঙ্গে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু করে। পরে ওই গ্যাসফিল্ডের আওতাধীন এলাকায় থ্রি-ডি সাইসমিক জরিপ চালায় বাপেক্স। ৩২৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ত্রি-মাত্রিক ভূকম্পন জরিপ শেষে নতুন গ্যাস মজুদের সন্ধান মিলে। পরে খনন করা হয় ৮নং কূপ। ২০১৪ সালের ২৯ আগস্ট থেকে এই কূপ হতে প্রতিদিন ১৫ ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় গ্যাস কোম্পানি গ্যাজ প্রথম ২০১৪ সালের ৪ জুন সেখানে খনন কাজ শুরু করে এবং ২ মাস অতিক্রম হওয়ার আগেই তারা প্রায় ২৯শ’ মিটার গভীরে রিগ দিয়ে গ্যাস উত্তোলনে সক্ষম হয়। ওই খনন কাজে ব্যয় হয় প্রায় ১৬০ কোটি টাকা। কোন কূপ খনন করার পর যখন পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয় তখন গ্যাস না পাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। তবে গ্যাস পাওয়া যাওয়ায় নতুন আশাবাদ থেকে নতুন তিনটি কূপ খননের উদ্যোগ নেয়া হয়। রশিদপুর গ্যাস ফিল্ডের ডিজিএম এবং ১০ ও ১২ নং কূপ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ কে এম আলমগীর আজাদ জানান, ৯, ১০ ও ১২নং কূপ খননের জন্য ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হয়েছে। ৯নং কূপের জন্য ৩.৭২৫, ১০নং কূপের জন্য ১৩.৩০ একর ও ১২ নং কূপের জন্য ৬.৩০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। ২৬ আগস্ট হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসন ৯ ও ১০ নং কূপের অধিগ্রহণ ও দখল বুঝিয়ে দেন। ১২ নং কূপটি মৌলভীবাজার জেলা সদরের মির্জাপুর চা বাগানে হওয়ায় সেখানকার ভূমি অধিগ্রহণ করে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন। এব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের বক্তব্য হচ্ছে, রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় গ্যাস কোম্পানি গ্যাস প্রথম ৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে রিগ নিয়ে এসে কাজ শুরু করবে। ৩ হাজার মিটার পর্যন্ত রিগ দিয়ে অনুসন্ধান করা হবে। যদি ১২নং কূপে গ্যাস পাওয়া যায় তবে পরবর্তীতে ১১ নং কূপও খননের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। প্রকল্প পরিচালক বলেন, এ প্রকল্পের সফলতার পর আরও ৭ থেকে ৮টি কূপ খনন করা হতে পারে। ২০১৭ সালের শেষ নাগাদ জাতীয় গ্রিডে নতুন কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে। নতুন কূপগুলো বাহুবল উপজেলার পুঁটিজুরী, নবীগঞ্জ উপজেলার ভবানীপুর ও মৌলভীবাজর সদর উপজেলার মির্জাপুর চা বাগানে অবস্থিত। যা গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্ট থেকে ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমটির দূরে। এছাড়া গ্যাসক্ষেত্রটি দুটি জেলার ৩টি উপজেলায় বিস্তৃৃত।


     এই বিভাগের আরো খবর