,

ধর্ষণের সার্টিফিকেট না থাকায় রুনার মামলার শুনানী হয়নি

জুয়েল চৌধুরী ॥ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের চানপুর গ্রামে ধর্ষণের শিকার গৃহবধু তার মেডিকেল সার্টিফিকের্ট বৃহস্পতিবারও আদালতে দাখিল করতে পারেনি। এ কারণে অভিযোগকারীর উপস্থিতিতে আগামী রবিবার শুনানীর দিন ধার্য্য করা হয়। গত সোমবার ধর্ষিতা রুনা আক্তার আদালতে কতিথ ধর্ষণের অভিযোগে আটক পরকিয়া প্রেমিকের বিরুদ্ধে দায়রা জজ আদালতে মামলা মামলা করলে আদালত মেডিকেল সার্টিফিকের্ট নিয়ে সংশ্লিষ্ঠ ডাক্তারকে স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ মতে গত বুধবার আদালতে হাজির হয়ে ওই ডাক্তার লিখিত জবাব দাখিল করে অব্যাহতি পান। বৃহস্পতিবার ধর্ষিতার সার্টিফিকের্ট দাখিল সাপেক্ষে শুনানীর জন্য আদালত দিন ধার্য্য করেন। কিন্তু গতকাল আদালতে সার্টিফিকের্ট দাখিল করতে না পারায় আগামী রবিবার শুনানীর দিন ধার্য্য করেন আদালত। উল্লেখ্য হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে গোপন অভিসারকালে প্রবাসির স্ত্রী রুনা আক্তার গত শুক্রবার দিবাগত রাতে পরকীয়া প্রেমিক সুতাং ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সোহাগসহ জনতার হাতে আটক হয়। পরের দিন রুনা ও সোহাগকে নিয়ে দিনভর নাটকের পর অবশেষে রুনার স্বামী সৌদি প্রবাসি আমির আলীর ভাই থানায় মামলা করে। মামলার পর পুলিশ সোহাগকে কারাগারে প্রেরণ করে। এরপর গত রবিবার দিনভর রুনা আদালতে আইনজীবিদের নিকট দ্বারস্থ হয় সোহাগের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করতে। কিন্তু ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্ট ছাড়া মামলা করা যাবে না মর্মে আইনজীবিরা তাকে পরামর্শ দিলে রুনা তাকে ধর্ষিতা প্রমাণ করতে কোর্ট স্টেশনের হবিগঞ্জ হসপিটাল লিমিটেডে ভর্তি হতে যায়। সেখান থেকে বলা হয়, সদর হাসপাতালে ভর্তি হতে। সে মোতাবেক গত সোমবার রুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি হতে যায়। সুত্র জানায়, হবিগঞ্জ হসপিটালের এক পরিচালককে সাথে নিয়ে হাসপাতালে তাকে মেডিকেল পরীক্ষা করানো হয়। সেই থেকে রুনাকে নিয়ে ওই পরিচালক সোহাগের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণ মামলা করান। মামলার প্রেক্ষিতে আদালত ধর্ষিতা রুনার সার্টিফিকের্ট দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু হাসপাতাল থেকে সার্টিফিকের্ট না দেয়ার অভিযোগ এনে রুনার আইনজীবি সদর হাসপাতালের আরএমওকে শোকজ করান। সুত্র আরো জানায়, ৩ বছর আগে চানপুর গ্রামের মৃত ইয়াকুব উল্লার পুত্র সৌদি প্রবাসি আমির আলী সদর উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের মৃত নানু মিয়ার কন্যা রুমানা আক্তার রুনাকে বিয়ে করে। বিয়ের ৭ দিনের মাথায় জীবিকার তাগিদে আমির আলী সৌদি আরবে চলে যায়। কিন্তু সে জানতো না বিয়ের আগে রুনার সাথে সুতাং ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার সোহাগের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আমির আলীর অনুপুস্থিতে সোহাগ ও রুনা তাদের প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকে। তারা প্রায় সময়ই একে অপরের সাথে গোপন অভিসারে মিলিত হত। বিষয়টি আমির আলীর পরিবারকে স্থানীয় লোকজন একাধিকবার জানালেও তারা বিশ্বাস করেননি। দিনে দিনে তাদের প্রেম গভীর থেকে গভীর হয়। আমির আলীর পরিবারের অগোচরে বাড়ি ছাড়াও বিভিন্নস্থানে গোপন অভিসারে মিলিত হত। রুনা চালাকির সাথে কেনাকাটার কথা বলে প্রায়ই সোহাগের সাথে দেখা করে আনন্দ ভ্রমনে যেত। আমির আলীর পরিবার থেকে রুনার পরিবারকে বারবার অবহিত করা হলেও তারা কর্ণপাত না করায় দিনে দিনে রুনার বেপরোয়া হয়ে উঠতে থাকে। এদিকে আমির আলীর পরিবারের লোকজন তাদেরকে হাতেনাতে ধরতে উৎপেতে থাকে। গত শুক্রবার গভীররাতে সোহাগ তার প্রেমিকা রুনার সাথে দেখা করতে আসে। এক পর্যায়ে তারা গোপন অভিসারে মিলিত হয়। এ সময় আমির আলীর পরিবারের লোকজন তাদেরকে হাতেনাতে আটক করে ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার কবির মিয়াকে খবর দেয়। তিনি এসে সদর থানায় খবর দিলে এএসআই আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সুত্র জানায়, রুনার সোহাগের আগেও বিভিন্ন যুবকের সাথে রুনার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে শায়েস্তাগঞ্জ কলেজে পড়ালেখার সময় সুতাং ভূমি অফিসের প্রসেস সার্ভেয়ার কতিথ ধর্ষণের অভিযোগে আটক সোহাগের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। এক পর্যায়ে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু রুনার পরিবার তার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে সোহাগের সাথে প্রেমের কথা গোপন রেখে সৌদি প্রবাসি আমির আলীর নিকট বিয়ে দেয়। কিন্তু আমির আলীকে সুন্দরী রুনা মন থেকে মেনে না নিয়ে কলেজ জীবনের প্রেমিক সোহাগের সাথে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের এ প্রেম গোপন অভিসারে রূপ নিলে জনতার হাতে ধরাশায়ী হয়। এরপর থেকেই রুনাকে ধর্ষণ করা হয়েছে মর্মে হবিগঞ্জ হসপিটালের এক পরিচালক ধর্ষণের মামলা করে বিষয়টি নিয়ে নাটক মঞ্চস্থ করে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। ৫ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে সে বাড়ি চলে যায়। ফলে গত ১ সপ্তাহ ধরে রুনা ও সোহাগের কতিথ প্রেম কাহিনী নিয়ে হবিগঞ্জের সর্বত্র তোলপাড় চলছে।


     এই বিভাগের আরো খবর