,

প্রেমের অপর নাম যখন ধর্ষণ!

কয়েকটি প্রেম অতপরঃ

চিরস্থায়ী জীবনসঙ্গী বা জীবনসঙ্গীনি বেছে নেয়ার জন্য একজন নারী ও একজন পুরুষ তাদের আবেগের বহিঃপ্রকাশের মাধ্যমে যখন কোনো ধরণের শারীরিক সম্পর্ক ছাড়া একে অপরকে জানার জন্য খুব নিকটে আসেন তখন তাকে প্রেম বলে। তবে কারো ধারণা “প্রেম একটি প্রবল আকর্ষণ। যদি কেউ দৃষ্টিকোণ হতে শ্রেষ্ঠ হিসেবে হয়ে উঠে এবং তাঁর প্রতি ভবিষ্যতে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের সৃষ্টি করার মনোবাসনা থাকে তাহলে তাকে প্রেম বলে।”এমন কি প্রেমের কিছু প্রকারও রয়েছে। যেমন, প্রথম দেখায় প্রেম, বন্ধুত্ব থেকে প্রেম, বিবাহোত্তর প্রেম, অপরিণত প্রেম, কর্মক্ষেত্রে প্রেম, মোবাইল প্রেম, ইন্টারনেটে প্রেম, ত্রিভুজ প্রেম, বহুভুজ প্রেম, ঘানি টানা প্রেম, অব্যক্ত প্রেম, সুপ্ত প্রেম, চুক্তিবদ্ধ প্রেম, অসাম্প্রদায়িক প্রেম, ভাড়াটে প্রেম, ঝগড়াটে প্রেম, ব্যর্থ প্রেম এবং পরকীয়া প্রেম ইত্যাদি। তবে এসব প্রেমের মধ্যে পরকীয়া প্রেমটাই সবার পরিচিত হয়ে উঠছে। যা বিয়ের পর স্বামী বা স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন পুরুষ বা মহিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলাকেই পরকীয়া প্রেম বলে আমরা অনেকেই জানি। আর সেই পরকীয়া প্রেমের জন্য ভাঙ্গছে বহু সুখের সংসার। আগেকার দিনে প্রেম বলতে আকাংখা, অপেক্ষা, র্ধৈয্য ও স্বপ্ন সাধনাকেই বুঝাতো। না ছিল কোন শারীরিক সম্পর্ক না ছিল অবৈধ মেলামেশা। কিন্তু বর্তমান সময়ের প্রেম এর সংজ্ঞার চিত্র ঠিক তার বিপরীত। বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী এবং নারী-পুরুষ যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলছেন তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কটাই যেন মূখ্য উদ্দেশ্য। এর ফলে একটি স্বপ্ন কুঁড়িতেই ঝড়ে পড়াসহ ঘটছে নানা কলঙ্কজনক ঘটনা। যার কারণে “চিরসত্য প্রেম” নামক শব্দটি আজ বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় মানুষ আঁড় চোঁখে দেখছে না। আর এই ধরণের প্রেমিক প্রেমিকাদের নিয়ন্ত্রনহীন চলাফেরার কারণে প্রকৃত প্রেমিক-প্রেমিকারা তাঁর পছন্দের মানুষটিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে ভয় পাচ্ছেন। এরকম বিতর্কিত প্রেমিক-প্রেমিকাদের অনেক সময়ই দেখা মিলে নামী-দামী কোন হোটেল বা পার্কে। এ রকম লাগামহীন চলাফেরার কারণেই অনেক যুবকের ব্লাকমেইলের শিকার হয়ে অনেক প্রেমিকারা বাধ্য হয়ে জড়িত হচ্ছেন শারীরিক সম্পর্কে। আবার কেউ কেউ প্রেমিক কর্তৃক বিয়ের প্রলোভনে বা জোর পূর্বক ধর্ষনের শিকার হয়ে হচ্ছেন ধর্ষিতা। এমনকি একতরফা প্রেম (সম্মতি ছাড়া) করে প্রেমিকার পক্ষ থেকে সাড়া না পেয়ে প্রতিশোধের নেশায় ধর্ষণ, এসিড ও কুপিয়ে মারার অহরহ ঘটনা ঘটছে। এরকম প্রেম নামের ব্যাধিতে ভুগছে তরুন-তরুনীরা। যার ফলে বেড়েই চলেছে ধর্ষণসহ নানান ধরনের দূর্ঘটনা। আজকাল বিভিন্ন পত্রিকা বা মোবাইলে ইন্টানেটে পাওয়া যায় অসংখ্য ধর্ষণের সংবাদ। “হোটেলে থেকে অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় প্রেমিক যুগল আটক, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রেমিকাকে ধর্ষণ করে প্রেমিক পলাতক, ধর্ষিতা প্রেমিকার সন্তান প্রসব, স্কুলে ক্লাস চলাকালীন সময়ে সন্তান প্রসব করেছে ছাত্রী, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর সন্তান প্রসব অতঃপর মৃত্যু। এছাড়া বেড়ানোর কথা বলে প্রেমিকাকে নির্জনস্থানে নিয়ে ধর্ষণ, ধর্ষিত কিশোরীর সন্তান প্রসব, এমন ও হয়েছে সন্তান কাঁদছে মায়ের জন্য আবার মা কাঁদছে পরকীয়া প্রেমিকের জন্য, বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণ করায় স্বামী-সন্তান রেখে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন, স্বামী-সন্তান রেখে প্রেমিকার হাত ধরে উধাও, অতঃপর ভয়ংকর পরিণতি” অতঃপর বিভিন্ন ধরণের শিরোনামের সংবাদ। এ যেন ‘প্রেমের অপর নাম ধর্ষণ’ নামে সমাজে পরিচিতি লাভ করছে। এ ধরণের সমস্যা থেকে উত্তোরনে প্রেমিক-প্রেমিকাদের সচেতন থাকা একান্ত আবশ্যক। পাশা-পাশি  সমাজের প্রতিটি অভিভাবদের নিজের সন্তানদের প্রতি নজর রাখতে হবে। তাদের সন্তানেরা কোথায় যাচ্ছে? কি করছে? কার সাথে মেলামেশা করছে। এ ব্যাপারে অভিভাবদের সচেতন ভূমিকার বিকল্প নেই। আমার লেখার বাহিরে অনেক ঘটনা ঘটছে। আমি বলবো সমাজের সকল শ্রেণী পেশার লোকজন যদি সচেতনতা কি? তাহা ভাল ভাবে বুঝতে পারি এবং সেই সচেতনতা আমাদের পারিবারিক জীবনে ও সামাজিক জীবনে ব্যয় করতে পারি। তাহা হলে কোন দিন আমাদের আদরের ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে পড়–য়া মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন অভিশপ্ত প্রেমের কাছে যাওয়া তো দুরের কথা সেই কলঙ্কযুক্ত প্রেমের নাম শুনলেই তারা একশত হাত নয়, বরং হাজারো হাত অতিক্রম করে মাইলের পর মাইল পথের দূরে থাকবে। আসুন আমরা সকল মিলে সমাজ  ও দেশ গঠনে সচেতন হই। পাশা-পাশি আমাদের দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সদা-সর্বদা কাজ করি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তৌফিক দান করুন, আমীন।

লেখক
মোঃ সুমন আলী খান
স্টাফ রিপোর্টার: দৈনিক হবিগঞ্জ সময়
বার্তা সম্পাদক: ইউরোবাংলাসিলেট (অনলাইন)


     এই বিভাগের আরো খবর