,

সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে বৃটেনে শোকের ছায়া

মতিয়ার চৌধুরী, লন্ডন থেকে :: লন্ডনে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রী এবং আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে বৃটেনে বসবাসরত বাঙ্গালী কমিউনিটিতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার মৃত্যু সংবাদ লন্ডনে এসে পৌঁছালে অনেকেই কান্নায় ভেেেঙ্গ পড়েন। সৈয়দ আশরাফ শুধু দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে হাল ধরেননি, বৃটেনে বাঙ্গালীদের নিরাপদ আবাস গড়তে তার অবদান চিরস্মরনীয়। দলমত নির্বিশেষে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে লন্ডনের বাঙ্গালী কমিউনিটিতে প্রতিদিনই তার স্মরনে হচ্ছে দোয়া মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ অব্যাহত টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, জনবিগস শোক কার্তায় বলেন সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুতে বাংলাদেশের অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে লন্ডনের বাঙ্গালী কমিউনিটি হারিয়েছে তাদের আপনজনকে আমরা হারিয়েছি একজন অকৃত্রিম বন্ধুকে। জনবিগস আরো বলেন তিনি যখন প্রথম টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের ইউভার্স ফিল্ড ওয়ার্ড থেকে থেকে লেবার দলের হয়ে কাউন্সিল নির্বাচন করেন সৈয়দ আশরাফ ছিলেন তার ক্যাম্পেইন ম্যানেজার এবং সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মাধ্যমে লন্ডনের বাঙ্গালী কমিউনিটির সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। তিনি তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জারিয়েছেন। এছাড়া শোক প্রকাশ করেছেন অমর একুশে গানের রচয়িতা প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান মাহমুদ শরীফ, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলেিদগর উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি আলহাজ্ব শামসুদ্দিন খান, ইউকে আওয়ামীলীগেগর ভারপ্রাপ্ত সেরেক্রটারী কমিউনিটি নেতা নইমুদ্দিন রিয়াজ, যুক্তরাজ্য ঘাতক-দালাল নির্মুল কমিটি, যুদ্ধাপরাধা বিচারমঞ্চ, আলতার আলী ফাউন্ডেশন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা এডুকেশন ট্রাষ্ট, বাংলাদেশ সেন্টারসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে সাবেক কাউন্সিলার নূরুদ্দিন আহমদ, সাবেক কাউন্সিলার সোনাহর আলী, সাংবাদিক মতিয়ার চৌধুরী, মানবাধিকার কর্মি আনসার আহমদ উল্লাহ, আলতাব হোসাইন বাইস, মুহিবুর রহমান মুহিব প্রমুখ। গেল শুক্রবার বাদ জুমা ব্রিকলেন জামে মসজিদে সৈয়দ আশরাফ স্মরণে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের। এখানে উল্লেখ্য যে গেল ৩ জানূয়ারী সৈয়দ আশরাফ থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। (ইন্নালিল্লাহি .. রাজিউন) মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।

uk awamileag

১৯৭৫ সালে জাতির জনকে স্বপরিবারে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অন্যতিন জাতীয় নেতার সাথে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের পিতা বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকেও হত্যা করে। পিতার মৃত্যুর পর সৈয়দ আশরাফ যুক্তরাজ্যে এসে আশ্রয় নেয়, তখন বাংলাদেশে স্বাধীনতার পক্ষের লোকদের দুর্দিন প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর নাম মুখে উচ্চারণ করা যায়না, বৃটেনেও গোলাম আজম এবং যুদ্ধাাপরাধী চৌধুরী মইনুদ্দিনের নেতৃত্বে লন্ডনের শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কর্মকান্ড, তখন একটি চক্র সৈয়দ আশরাফকে লন্ডনেও হত্যার চেষ্টা চালায়। সে সময় লন্ডনে শুরু হয় বর্ণবাদীদের অত্যাচার, ১৯৭৬/৭৭ সালে লন্ডনে বসবারসত বাঙ্গালীদের এক দুঃসময়, একা কেউ ঘর থেকে বের হতনা, বর্ণবাদী সংগঠন ন্যাশনাল ফন্ট বাঙ্গালী দেখলেই গালিগালাজ এমনকি মারধর করতো, সেই ১৯৭৬ সালে আলতাব আলী নামের একজন বাঙ্গালী গার্মেন্টস শ্রমিককে বর্ণবাদীরা প্রকাশে খুন করে, সৈয়দ আশরাফ তখন লন্ডনের বাঙ্গালী যুবকদে নিয়ে লন্ডনে গড়ে তোলেন বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন,বাঙ্গালীদের প্রতিরোধের মুখে ন্যাশনাল ফন্টের রেসিটরা ইষ্টলন্ডন ত্যাগ করতে বাধ্যহয়। এখন আর ইষ্টলন্ডনে বর্ণবাদীদের অত্যাচার নেই, ইষ্টলন্ডনে বাঙ্গারীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তখন যদি সৈয়দ আশরাফ এবং তার বন্ধরা বর্ণবাদ প্রতিরোধে যদি এগিয়ে না আসতেন লন্ডনে বাঙ্গালীদের বসবাস সম্ভব হতোনা। এখানে শেষ নয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন এবং লন্ডনে নির্বাসিত জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যার্বন নিয়ে কাজ শুরু করেন সৈয়দ আশরাফ তখন লন্ডন থেকে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর সম্পাদনায় বজ্রকন্ঠ এবং বাংলার ডাক নামে দুটি পত্রিকা প্রকাশিত হয় পত্রিকা দুটির হাল ধরেন সৈয়দ আশরাফ, তখন তার সাথে কাজ করেন প্রয়াত হারিছ আলী, সোনাহর আলী, নুরুদ্দিন আহমদ প্রমুখ। সৈয়দ আশরাফের মৃত্যুতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল আওয়ামীল এবং দেশের অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে সেই সাথে লন্ডনের প্রবাসী বাঙ্গালীরা হারিয়ে তাদের এক অকৃত্রিম বন্ধুকে।


     এই বিভাগের আরো খবর