,

শ্রীলংকায় ইস্টার সানডের দিন বোমা হামলায় নিহত ২৯০

সময় ডেস্ক ॥ শ্রীলংকায় ইস্টার সানডের দিন রোববার সকালে গির্জা, ফাইভস্টার হোটেলসহ কয়েকটি স্থানে একের পর এক বোমা হামলায় ২৯০ জন নিহতের ঘটনায় ‘ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত’ (এনটিজে) নামের স্থানীয় একটি চরমপন্থী ইসলামি সংগঠন দায়ী করেছে দেশটির সরকার। তাদের ভাষ্য, স্থানীয় এই গোষ্ঠী আন্তর্জাতিক এক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের সহায়তায় এ সিরিজ হামলা চালিয়েছে। দেশটির তদন্তকারীরাও এই গ্রুপটির বিষয়ে বিশেষভাবে তদন্ত করছে। শ্রীলংকার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, এনটিজে স্বল্প পরিচিত নতুন একটি গোষ্ঠী। এদের সম্পর্কে কিছুদিন আগেও তেমন একটা জানা ছিল না। তবে কিছুদিন আগে একটি বুদ্ধ ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় এনটিজে জড়িত ছিল বলে ধারণা করা হয়। এছাড়া ২০১৬ সালে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোর অভিযোগে গোষ্ঠীটির একজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যদিয়ে গ্রুপটি  প্রথম আলোচনায় আসে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রীলংকার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম  ও বিশ্লেষকদের ভাষ্য, ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত (এনটিজে) গ্রুপটি ইসলামপন্থী সন্ত্রাসী ধ্যানধারণা লালন করে। ২০১৪ সালে কাট্টাকুডি নামের একটি মুসলিম অধ্যুষিত শহরে গ্রুপটি গঠিত হয়। এর আগে বড় ধরনের কোনো হামলার ঘটনায় এদের নাম শোনা যায়নি। তবে এনটিজে ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপকে সমর্থন করে বলে জানা যাচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের শ্রীলংকা বিষয়ক পরিচালক অ্যালান কিনান বলেন, ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত সম্ভবত সেই গোষ্ঠী, যারা গত বছরের ‘ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ’ একটি ঘটনায় জড়িত ছিল। ডিসেম্বরে মারওয়ানেলা শহরে বুদ্ধের কয়েকটি মূর্তি ভাংচুর করা হয়েছিল। এরপর পুলিশ এমন কয়েক তরুণকে গ্রেফতার করে, যারা এক ধর্মপ্রচারকারীর ছাত্র ছিলেন বলে জানা যায়। এই ধর্মপ্রচারকারীর নাম গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছিল, রোববার সেটা বেরিয়েছে। রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানী কলম্বো ও তার আশপাশে গির্জা ও হোটেলে সবমিলিয়ে আটটি বিস্ফোরণে ২৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এসব হামলায় ৫শ’র বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ইস্টার সানডে উপলক্ষে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা রোববার সকালে গির্জায় প্রার্থনা করার সময় শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোর একটিসহ দেশটির তিনটি গির্জায় একযোগে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। প্রায় একই সময় কলম্বোর তিনটি পাঁচ তারকা হোটেল– শাংরি লা, সিনামন গ্র্যান্ড ও কিংসবুরিতেও বোমার বিস্ফোরণ হয়। সকালে ছয়টি স্থাপনায় হামলার কয়েক ঘণ্টা পর দুপুরে কলম্বোর দক্ষিণাঞ্চলের দেহিওয়ালা এলাকায় একটি হোটেলে সপ্তম বিস্ফোরণটি ঘটে। এরপর কলম্বোর উত্তরে ওরুগোদাওয়াত্তা এলাকায় আরেকটি বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে জামায়াত আল-তাওহীদ আল-ওয়াতানিয়া নামের একটি গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে রুশ সংবাদমাধ্যম তাস। তাস-এর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার আল আরাবিয়া টিভি চ্যানেল এক টুইট বার্তায় এ কথা জানায়। তবে জামায়াত আল তৌহিদ আল ওয়াতানিয়া নামের ওই গোষ্ঠী সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়টি চ্যানেলটি।


     এই বিভাগের আরো খবর