,

কোমরের ব্যথার ঔষধের বদলে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট খেয়ে ধর্ষণ

জুয়েল চৌধুরী ॥ লাখাইয়ে চাঞ্চল্যকর শিশু ধর্ষনের ঘটনায় ধর্ষককে আটক করছে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে প্রেরন করলে ১৬৪ ধারা জবানবন্দীতে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে ধর্ষক। এ ঘটনা নিয়ে জেলা জুড়ে সর্বত্র  তোলপাড় চলছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে লাখাই থানার পুলিশ জুডিসিয়াল ম্যাসিস্ট্রেট তাহমিনা বেগমের আদালতে প্রেরন করলে দীর্ঘ ১ ঘন্টা ব্যাপী স্বীকারোক্তি  মূলক জবানবন্দীতে ধর্ষনের ঘটনা স্বীকার করে লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। এর আগে শুক্রবার ভোর রাতে লাখাই থানার এসআই রকিবুল হাসান ও আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদর উপজেলার রিচি গ্রামের তার বিয়াই (ছেলের শশুর) বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গোয়াল ঘর  থেকে তাকে গ্রেফতার করে। আটককৃত ধর্ষক জহুর আলী (৮০) ওরফে জোরা মিয়া লাখাই উপজেলার ভাদিকারা গ্রামের মৃত আলী  আকবরের পুত্র। উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সন্ধায় ভাদিকারা গ্রামের একটি ধানের খলায় ওই গ্রামের মোঃ আলমগীর মিয়ার কন্যা ভাদিকারা আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী (১১) কে ধর্ষন করে রক্তাক্ত  করে পালিয়ে যাবার সময় স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে উত্তম-মধ্যম দিয়ে বামৈ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে ধর্ষক সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এবং বিষয়টি রফা-দফার চেষ্টা করে স্থানীয় মাতব্বররা। কিন্তু  ধর্ষিতার মা হুসনা বেগম আপোষের প্রস্তাব প্রত্যাান করেন। পরে মমুর্ষ অবস্থায় ওই ছাত্রীকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন ডাঃ মেহেদি হাসান। এ ঘটনাটি নিয়ে পুলিশ প্রশাসন ধর্ষককে গ্রেফতারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। লাখাই থানার ওসি মোঃ এমরান হোসেন জানান, কোন অভিযোগ না পেয়েও সাংবাদিকদের মুখ থেকে বিষয়টি শুনে পুলিশ তৎপর হয় এবং ওই দিন  রাতেই ধর্ষককে আটক করা হয়।  সুত্র জানায়, ধর্ষক জোরা মিয়া সংসার জিবনে মোট ৪ টি বিয়ে করেছে। তার সংসার জিবনে অসংখ্য ছেলে-মেয়ে ও নাতি-নাতনি রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কোমরের ব্যথার ঔষুধ আনতে জোরা মিয়া স্থানীয় বাজারের এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে যান। কিন্তু ওই চিকিৎসক মজা করতে গিয়ে ব্যথার ঔষধের বদলে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট দেয় এবং বলে  ‘নানা গরুর গরম দুধের সাথে এই ওষুধ খেলে ভাল কাজ হবে’। পরে জোরা মিয়া বাড়িতে এসে গরুর দুধ দিয়ে এই ট্যাবলেট খেলে ১ ঘন্টা তার শারিরিক উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এক পর্যাকে সে পুকড়ে ৩ ঘন্টা পরে থাকলে তাতেও তার সমস্যা সমাধান না হলে সন্ধার দিকে মাঠে ধানের খলায় গিয়ে ওই শিশুকে একা পেয়ে ধর্ষন করে। ওই শিশুর মায়ের অভিযোগ ধর্ষন করার পর স্থানীয় মাতব্বরা বিষয়টি রফা-দফার চেষ্টা করেছে এবং হাসাপাতালে আসতে বিভিন্ন বাধা ও হুমকি প্রদর্শন করেছে। যার ফলে বৃহস্পতিবার রাত ১২ টায় তারা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। সচেতন মহল জানান, হবিগঞ্জ জেলায় আনাচে-কানাচে ব্যাঙ্গের ছাতার মত অসংখ্য হারাবাল সেন্টার গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন চটকধারী বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গ্রাম-গঞ্জের সহজ-সরল মানুষকে যৌন উত্তেজকের ঔধুষ সেবনের কথা বলে লাখ-লাখ টাকা হারাচ্ছে। আর তাদের খপ্পরে পড়ে এই ওষুধ সেবন করে ধর্ষনের মত বড় ধরনের ঘটনা ঘটছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ওই ছাত্রীর পিতা মোঃ আলমগীর বাদী হয়ে লাখাই থানায় ধর্ষনের মামলা দায়ের করেন। সন্ধায় ঘটনার কথা স্বীকার করার পর ধর্ষককে কারাগারে প্রেরন করা হয়।


     এই বিভাগের আরো খবর