,

সারাদেশে ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে নিহত ১৪, আহত ৬৩, ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত , জলোচ্ছ্বাস

সময় ডেস্ক :: অনেকটা ফণা নামিয়ে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। গতকাল ভোর ৬টায় ৬২ মিনিট থেকে ৮৮ কিলোমিটার গতিবেগে সাতক্ষীরা, যশোর, খুলনা অঞ্চলে আঘাত হানে ফণী। আগের দিন ফণীর আঘাতে ভারতের ওড়িশা রাজ্য লন্ডভন্ড হয়ে গেলেও বাংলাদেশে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেক কম। গত শুক্রবার রাত থেকে গতকাল রাত পর্যন্ত ঝড়ে ঘর-গাছ চাপা ও পানিতে ডুবে সারাদেশে প্রাণহানি ঘটেছে ১৪ জনের। আগের দিন ফণীর প্রভাবে ঝড় বৃষ্টি চলাকালে বজ্রপাতে ৮ জনের মৃত্যু হয়। এদিকে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে ফণীতে উপকূলীয় এলাকায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৬৩ জন। বিধ্বস্ত হয়েছে বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়ি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গতকাল পর্যন্ত সারাদেশে নৌ যোগাযোগ বন্ধ ছিল। বিঘ্ন ঘটে বিমান চলাচলেও। তবে আজ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সকালে আঘাত হানে ফণী। দুপুরের দিকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল অতিক্রম করে। ফরিদপুর-ঢাকা অঞ্চল এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে আরো উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপ আকার ধারণ করে ফণী। সন্ধ্যার পর আরো দুর্বল হয়ে ময়মনসিংহ বিভাগের উপর দিয়ে ভারতের আসামের দিকে চলে যায়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ফণীর প্রভাবে গতকাল সরাদেশে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্যের কারণে রোববারও বৃষ্টিপাত হবে। ফণীর প্রভাবে সাগর খুবই উত্তাল ছিল। তবে ফণী উপকূল অতিক্রম করায় মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এদিকে ফণীর প্রভাবে শুক্রবার রাত থেকে এ পর্যপ্ত ১৪ জনের মৃত্যু ও ১ জন নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় সহগ্রাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্থ হয়েছে। বরগুনার পাথরঘাটায় শুক্রবার বিকেলে বিষখালী নদীতে নৌকা ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়। নিহত শারমিন পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউপির মাঝের চরের সবুজ মিয়ার মেয়ে। শারমিন মা-বাবার সঙ্গে কাকচিড়া আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছিল। একই উপজেলায় কাঠের ঘর ধসে দাদি ও নাতি নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন নুরজাহান বেগম (৬০) ও তাঁর নাতি জাহিদুল (৮)। শুক্রবার রাত তিনটার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার চরদোয়ানি ইউনিয়নের বাঁধঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া, গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নে চোরামনকাটি গ্রামে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে শাহানুর বেগম (৩৫) নামে এক নারী নিহত হন। ভোলার সাত উপজেলায় বিধ্বস্থ হয়েছে প্রায় শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি। জেলার দক্ষিণ দিঘলদী এলাকায় ঘরচাপা পড়ে রাণী বেগম (৫৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর