,

বছরে কোটি টাকা আদায়কারী প্রতিষ্টানে ১০ বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব গায়েব!

মাধবপুর প্রতিনিধি :: মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর জে সি (যোগেশ চন্দ্র) হাইস্কুল এন্ড কলেজ। এইচএসসি শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে সাথে প্রায় ২২শ শিক্ষার্থীর এ প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে এসএসসি, ভোকেশনাল এবং উন্মোক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র। বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের এ প্রতিষ্টানে রয়েছেন পর্যাপ্ত শিক্ষক মন্ডলী। শিক্ষাকার্যক্রমে পরিপূর্ণতা থাকলেও নেই বছরে প্রায় কোটি টাকা আদায়কারী প্রতিষ্টানের আয়-ব্যয়ের হিসাব। বিগত ১০ বছর যাবৎ লিপিবদ্ধ হয়নি ক্যাশ কলামনা বহি। গত ২০০৭সালের জুলাই থেকে ২০১৭ইং সাল পর্যন্ত প্রতিষ্টানটি কি পরিমান আয় করেছে, কোন খাতে ব্যয় হয়েছে তার কোন হিসাব আজো লিপিবদ্ধ হয়নি। হয়নি বাৎসরিক বাজেটও। ১৯২৪ইং সনে প্রতিষ্ঠিত উক্ত প্রতিষ্টানে অদ্যবদি যেসকল ব্যক্তিগন গর্ভনিং বডির সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন অতীতে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না উঠলেও অনিয়ম ও দুর্নীতিতে রেকর্ড গড়লেন অত্র প্রতিষ্টানের গর্ভনিং বডির বর্তমান সভাপতি সৈয়দ গিয়াসুল হোসাইন ফারুক। গর্ভনিং বডির সভাপতির স্বেচ্চাচারিতায় অত্র প্রতিষ্ঠানটি হয়ে পড়েছে দুর্নীতিগ্রস্ত। সাম্প্রতিক এক তদন্ত রিপোর্টে অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। গত বছরের আগষ্ট মাসে জগদীশপুর হাইস্কুল এন্ড কলেজের গর্ভনিং বডির সভাপতি নির্বাচনের লক্ষ্যে দাতা সদস্য মাসুদ খান, বর্তমান সভপতি সৈয়দ গিয়াসুল হোসাইন ফারুক ও শেখ মুজাহিদ বিন ইসলাম এই ৩জনের নাম উল্লেখ করে প্রতিষ্টান থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক  শিক্ষাবোর্ডে, সিলেটে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। ওই প্রস্তাবনাকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ দাখিল করা হয় শিক্ষাবোর্ডে। দাখিলকৃত অভিযোগের সত্যতা যাছাইয়ের জন্য হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর তদন্তভার দেওয়া হলেও পর্যায়ক্রমে তদন্তভার ন্যস্ত হয় সহকারী কমিশনার(ভূমি) মোঃ মতিউর রহমান খাঁনের এর উপর। তদন্তে প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য মাসুদ খাঁন ফৌজদারী মামলার আসামী, শেখ মুজাহিদ বিন ইসলামের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ তুলেন রাজাকার পুত্র হিসেবে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্টান সংশ্লিষ্ট কোন অনিয়ম, দূর্নীতির প্রমান পাননি তদন্ত কর্মকর্তা। অপরদিকে বর্তমান সভাপতি সৈয়দ গিয়াসুল হোসাইন ফারুকের বিরুদ্ধে অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিষ্ঠানে দপ্তরি নিয়োগ, কৃষি বিজ্ঞান বিষয়ে নিয়োগকৃত শিক্ষক মুসলেহ উদ্দিনকে গণিত বিষয় কাস করানোর সুযোগ করে দেওয়া এবং উক্ত প্রতিষ্টানের ক্যাশ কলমনা বহি খালি রেখে ১০ বছরের আয় ব্যয়ের হিসাব গায়েব করার প্রমান পেয়েছেন বলে ৩১.৪৬.৩৬৭১.০০১.০৫.০০৫.১৯-৩০৪ নং স্মারকে প্রেরিত তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করেন। অভিযোগ রয়েছে বাৎসরিক বিভিন্ন প্রকাশনী হতে প্রাপ্ত ডোনেশনের অর্থ আত্মসাৎ, নামে বেনামে, বিল, ভাউছার ব্যতিত প্রতিষ্টানের অর্থকড়ি লুঠপাটেরও। ১৮হাজার টাকা প্রাপ্য বেতন স্কেলের শিক্ষকদের অবৈধভাবে ২২হাজার টাকা স্কেলে ভবিষ্যত তহবিলে টাকা জমার ব্যবস্থাও করা হয়েছে উক্ত প্রতিষ্ঠানে। একটানা কয়েক বছর যাবৎ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আসনে বসে প্রতিষ্ঠানটিকে অনিয়ম ও দূর্নীতির আঁতুঘরে পরিনত করেছে বলে অভিভাবকদের অভিযোগ। গর্ভনিং বডির সভাপতি সৈয়দ গিয়াসুল হোসাইন ফারুকের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তদন্ত সর্ম্পকে কিছুই জানেন না। উল্লেখিত সময়ে তিনি সভাপতি ছিলেন না বলে তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকর করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন জানান-একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ কলামনা বহি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। সকল আয় ব্যয়ের হিসাব অবশ্যই স্পষ্টভাবে বহিতে লিপিবব্ধ করতে হবে। ক্যাশ কলামনা বহি অলিখিত থাকলে এখানে অনিয়ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। এ ব্যাপারে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আধ্যাপক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস জানান-তদন্ত রিপোর্ট এখনো আমাদের কাছে এসে পৌছায় নি। তদন্ত রিপোর্টে সঠিকভাবে অনিয়ম দুর্নীতির বিষয় লিপিবদ্ধ হলে দুর্নীতিগ্রস্থের রিরুদ্ধে যথাযথ প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর