,

নবীগঞ্জের গয়াহরি শ্রী শ্রী গবিন্দ জিউড় আখড়ার সেবাইতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ায় এসিল্যান্ডের কাছে সেবাইত ও গ্রামবাসীর লিখিত জবাব

স্টাফ রিপোর্টার :: নবীগঞ্জ উপজেলার গয়াহরি শ্রী শ্রী গবিন্দ জিউড় দেবোত্তর সম্পত্তি সেবাইত হরিদাস মোহন্ত বেআইনীভাবে শ্রেনী পরিবর্তন, ব্যক্তিগত ভাবে লীজ ও বন্ধক দিয়ে ভোগ করার বিষয়ে তার বিরুদ্ধে গত ২৫ এপ্রিল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কাছে অভিযোগ দেয়া হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে ১৮৭ জন লোক মিলে গত বুধবার নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমির) নিকট লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। লিখিত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রকাশ- ওই আখড়ার সম্পত্তি রুপক দাশের পিতা রবীন্দ্র দাশ এর নামে ১৮ শতক এবং তার কাকা ভাগ্যেশর দাশ এর নামে ১৮ শতক ভূমি রেকর্ডসহ মোট ৩৬ শতাংশ ভূমি রেকর্ড করেন। সেবাইত হরিদাস মোহন্ত সম্প্রতি ওই আখড়ার মন্দির কমিটির লোকদের নিয়ে এক সভার আহবান করেন। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, রেকর্ড সংশোধনের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করার। এ বিষয় নিয়ে রুপক দাশের জেঠাতা ভাই উৎপল দাশ আখড়ায় এসে সেবাইতকে প্রাননাশের হুমকি দেয় এবং সে আখড়ার বিভিন্ন জিনিসপত্র জোরপূর্বক নিয়ে যায়। এমনকি গত ফান্ডুন মাসে আখড়া কমিটিসহ গ্রামবাসীর উদ্দ্যোগে গবিন্দ জিউড় আখড়ায় কৃর্তন অনুষ্টিত হয়। ওই কৃর্তন শেষে ১ বস্তা চাউল অতিরিক্ত রয়ে যায়। ওই চাউল  উৎফল দাশ কাউকে না বলে লুকিয়ে নিয়ে যায়। বিষয়টি সেবাইত আখড়া কমিটির লোকজনকে এবং স্থানীয় কাউন্সিলর পানেশ চন্দ্র দেবকে অবহিত করেন। কাউন্সিলর বিষয়টি নিস্পত্তি করতে স্থানীয় ৫ জন মুরব্বিকে উৎফল দাশের বাড়িতে পাঠান। কিন্তু উৎফল দাশ গ্রামের মুরব্বিগনের কথা না শুনে উল্টো সেবাইতের উপর অত্যাচার চালায়। সেবাইত কোন উপায় না পেয়ে নবীগঞ্জ থানায় জিডি করেন। সেবাইত হরিদাশ মোহন্ত কমিটির লোকদের সাথে নিয়ে শ্রী শ্রী গবিন্দ জিউড় আখড়ার উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছেন। তার উপর অভিযোগ দেয়া হয়েছে আখড়ার দেবোত্তর সম্পত্তির শ্রেনী পরবর্তন ও মাটি বিক্রি করে তিনি টাকা আত্মসাত করছেন। তাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। কয়েকশত বছর পূর্ব থেকে যারা এই মন্দিরের মোহন্ত হয়েছেন তারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গা থেকে এসেছেন। তারা তাদের পিতৃ সম্পত্তি বিক্রি করে ওই আখড়ার বিভিন্ন মোহন্তগন পিতৃ সম্পত্তি বিক্রি করে নিঃস্ব টাকা দিয়ে অধিকাংশ সম্পত্তি তাদের নিজ নামে ক্রয় করেছেন এবং উক্ত সম্পত্তি নিমাই চান মোহন্তের নামে এস.এ পর্চা দলিলাদি আছে। কিছু ভূমি নিমাই চান মোহন্ত পূষ্য পুত্র চৈতন্য চান মোহন্ত আখড়ার নামে বর্তমানে রেকর্ড করে দিয়েছেন। আখড়ার নামের কোন জায়গা বিক্রয় বা লিজ দেয়া হয় নাই। মন্দিরের অধিকাংশ সম্পত্তি নিমাই চান মোহন্তের নামে এস.এ রেকর্ড এবং তার পূষ্য পুত্র চৈতন্য চরণ মোহন্তের নামে রেকর্ড আছে। যার কাগজপত্র আছে নিমাই চান মোহন্ত এর ১ম পূষ্য পুত্র চৈতন্য চরণ মোহন্তের। চৈতন্য চরণ মোহন্ত ছিলেন অত্যান্ত দানশীল এবং বড় মনে মানুষ। চৈতন্য চরণ মোহন্ত মারা যাওয়ার কিছুদিন পূর্বে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ সঙ্গের এর নামে দুই কেদার জমি দান করে দিয়েছেন। নবীগঞ্জ সাবরেজিষ্টার অফিসে গিয়ে লিখিতভাবে দান করে দিয়েছেন এবং রুপক দাশের জেঠাতা ভাই জগদীশ দাশ, সুদীন দাশ গংরা ও চৈতন্য চরণ মোহন্তের নিকট হতে কিছু জায়গা ক্রয় করেছেন এবং অভিযোগকারী রুপক দাশ আখড়ার পুকুর লীজ নিয়ে এতে মাছ চাষ করিতেছে। সেবাইত হরিদাস মোহন্ত বর্তমানে তিনটি জমিকে একটি জমিতে পরিনত করেছেন। এই জমি তার পিতা চৈতন্য চরণ মোহন্তের নামে আছে। যার বর্তমান দাগ ৪০৮, ৪০৯, ৪৮১ এবং ওই জমিটি দেবোত্তর সম্পত্তি নয়। তিনি লিখিত বক্তব্য আরো বলেন- মন্দিরের উন্নয়নের স্বার্থে জমির মাটি কেটেছেন যার কারণে এখানে বছরে দুটি ফলন ফলানো যাবে। জবাবে তিনি তার গুরু পিতার নামের রেকর্ড এর পর্চার ফটোকপি, আখড়া কমিটির নেতৃবৃন্দসহ গ্রামবাসীর স্বাক্ষর এর ৬ কপি, বাদি রুপক দাশের পিতা ও কাকার নামে আখড়ার দেবোত্তর সম্পত্তির পর্চার ফটোকপি ২টি, শ্রী শ্রী গবিন্দ জিউড় আখড়ার নামে দলিলের ফটোকপি ১টি সংযুক্ত করে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কাছে জবাব দিয়েছেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আতাউল গনি ওসমানী ওই দিন তাদের শুনানী গ্রহন না করে পরবর্তী তারিখ দিয়েছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর