,

নবীগঞ্জে ৯২টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গাপুজার ব্যাপক প্রস্তুতি, করোনায় পূজারী ও ভক্তবৃন্দের মাঝে উৎসবের আমেজ কম

উত্তম কুমার পাল হিমেল ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৮৪টি ও পৌরসভায় ৮টি মিলে মোট ৯২টি পূজা মন্ডপে বছর ঘুরে আবারো হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজার প্রস্তুতি ইতিমধ্যে জোরেশোরে শুরু হয়েছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির কারনে আনন্দময়ীর আগমনে ধনী-গরিব আবালবৃদ্ধ সকল পূজারী ও ভক্তবৃন্দের মাঝে যেন আনন্দের কমতি রয়েছে অনেকটা। আর কদিন পরেই বাঙ্গালী হিন্দুদের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজার আগমনী শোর সকলের মাঝে বিরাজ করছে। প্রতিটি পুজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ সম্পন্ন করার জন্য দিনরাত নিরবিছিন্নভাবে কাজ করছেন প্রতিমা তৈরীর কাজে নিয়োজিত প্রতিমা শিল্পীরা। আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যেই প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ করে রং তুলির আছড়ে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ শেষ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রতিমা শিল্পীরা। তারপর মন্ডপ সাজসজ্জার কাজ শেষ করলেই উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেন সবাই। তাই শারদীয় এ পুজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকল পুজারী ও ভক্তবৃন্দের মাঝে বিপুল আনন্দ ও উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। আনন্দ ও উৎসাহ উদ্দীপনা ঘাটতি নেই বিভিন্ন সংগঠন ও সামাজিক লোকজনের মাঝেও। এ আনন্দকে আরো পরিপূর্ন করে তোলতে প্রতিমা কারিগরগণ দিনরাত কাজ করে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। পুজা শুরুর আগেই শেষ করতে হবে তাদের কাজ। মুর্তির কাজ শেষ করেই রং তুলির আছড়ে শেষ প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। তবে বর্তমান সময়ে বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারনে এ বছর উৎসবের আমেজ অনেক কমে গেছে বলে জানিয়েছেন পুজারীবৃন্দ। তবে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পুজার আনন্দ ভাগাভাগি করবেন বলে জানিয়েছেন তারা। শাস্ত্রমতে জানাযায়, এ বছর দেবীর দোলায় আগমন ফল মড়ক এবং দেবীর গজে গমন করবেন ফল শষ্যপুর্ণা বসুন্ধরা। সমাজের সকল আসুরিক শক্তির বিনাশ সাধন করে সর্বত্র শান্তি স্থাপনের মুলমন্ত্রই হলো শারদীয় দুর্গাপুজার মুল উদ্দেশ্য। সারা দেশের ন্যায় এ বছর নবীগঞ্জ ১৩টি ইউনিয়নে ৮৪টি এবং পৌরসভায় ৮টি মন্ডপে সাড়ম্বরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রত্যেক পূজা মন্ডপের সেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ প্রশাসন আসন্ন শারদীয় দুর্গাপুজায় যথাযথভাবে শান্তি শৃঙ্খলা বজার রাখতে বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভাসহ ব্যাপক প্রস্তৃতি হাতে নিয়েছেন। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নবীগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি সুখেন্দু রায় বাবুল বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপুজা সুন্দর ও সুষ্টভাবে সম্পাদনের জন্য পুলিশ প্রশাসনসহ সকল শ্রেনীপেশার মানুষের সহযোগীতা কামনা করি। নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মহি উদ্দিন বলেন, শারদীয় দুর্গাপুজা সুন্দর ও সুষ্টভাবে পালনের জন্য সরকার ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুজা উপলক্ষ্যে সার্বক্ষনিকভাবে প্রশাসনিক ব্যবস্থার সহযোগীতা নিশ্চিত করা হবে। নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম বলেন, হিন্দু ধর্মবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা সুন্দর ও সুষ্টভাবে পালনে যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর। ধর্ম যার যার উৎসবের আনন্দ সবার এই শ্লোগানে আমরা সবাই উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করব। নবীগঞ্জ-বাহুবল আসনের এমপি গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ বলেন, দেশে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর। তাই হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজা পালনে সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা জানাই। আগামী ১৫ই অক্টোবর বৃহস্পতিবার ষষ্ঠীপুজার মধ্য দিয়ে নবীগঞ্জের সকল পুজা মন্ডগুলোতে ৫ দিন ব্যাপী শারদীয় দূর্গাপুজা শুরু হবে এবং সোমবার মহা দশমীবিহিত পুজার মাধ্যমে দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পুজা সম্পন্ন হবে। এ পূজাকে কেন্দ্র করে সারাদেশের ন্যায় নবীগঞ্জের সকল পুজারী ও ভক্তবৃন্দের মাঝে সর্বত্র যেন উৎসবের আমেজ প্রতিবছরই বিরাজ করে। কিন্তু বর্তমান বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরিস্থিতির কারনে উৎসবের আমেজ এ বছর অনেকটা কম। কিন্তু পুজারীদের বিশ্বাস অসুর বিনাশীনি দেবী দুর্গার আগমনে ধরনীতে অশুভ শক্তির বিনাশ সাধিত হয়ে শান্তি বিরাজ করবে।


     এই বিভাগের আরো খবর