,

আপনার এবং বাচ্চার যে আনন্দ হতে পারে সারাজীবনের কান্নার কারন

সময় ডেস্ক : বাচ্চাদের আকাশে তুলে আবার কোলে নিলে এতে বাচ্চা এবং আমরা আনন্দ পাই। কিন্তু এই আনন্দই হতে পারে আপনার সারা জীবনের কান্নার কারন। দৈনিক হবিগঞ্জ সময়’র পাঠকদের জন্য একটি ঘটনা তুলে ধরা হল। ঘটনাটি পড়লে পরিস্কারভাবে বুঝতে পারবেন বাচ্চাদের আকাশে ছুড়ে দিয়ে তাকে আবার লুফে নেয়া হতে পারে আপনার বাচ্চার জীবনহানির কারন। রাজিব ও ময়না দম্পতির সংসারে প্রথম সন্তান আসল। মেয়ের নাম রাখা হল “ইরা”। অনেক ফুটফুটে মেয়ে। দেখতে অনেক মায়াবী। গালে নরম মাংস। যে কেউ দেখলেই আদর করতে চাইবে, গালের মাংস ধরে টানাটানি করবে। প্রথম সন্তান,যত্নের কোন ঘাটতি রইল না। সুস্থ্য স্বাভাবিকভাবেই বড় হতে লাগল সে। একদিন… মেয়ের বয়স পাঁচ মাস। শীতকাল তখন। উঠোনে মেয়েকে নিয়ে রোদ পোহাচ্ছে ময়না। সকালের রোদ বাচ্চার জন্য খুব উপকারী। বাচ্চাকে রোদে শুইয়ে রাখল। হঠাৎই সেখানে আসল পাশের ঘরের রবিন। ইরার চাচা হয় রবিন। এসেই ইরাকে কোলে নিল। আদর করতে লাগল। হাসানোর চেষ্টা করল। কিছুক্ষণ পর সে ইরাকে আকাশের দিকে ছেড়ে দিয়ে আবার বল ক্যাচ ধরার মত করে ধরছে। এতে যেন ইরা আরও খুশি হচ্ছে। ময়নাও দেখে হাসছে। মেয়ে হাসলে যেকোন মায়েরই ভালো লাগে। ময়নারও ভালো লাগছে। শুধু আর রবিন কেন! সবাই ই তো এভাবে খেলা করে বাচ্চাকে নিয়ে। রবিন আবার ইরাকে আকাশের দিকে ছেড়ে দিল। ঠিকঠাক মত ক্যাচও ধরল। কিন্তু একি হল? ইরা হাসছে না। চোখ বন্ধ করে আছে। রবিন ভয় পেয়ে গেল। ময়নাকে ডাক দিল। ময়না দৌড়ে এসে ইরাবতীকে কোলে নিল ইরাকে। নানান নামে ডাকতে শুরু করল। হাত দিয়ে চোখ খুলার চেষ্টা করল। কিন্তু না! ইরা চোখ খুলছে না। চিৎকার করে কেঁদে উঠল ময়না। বাড়ির সব মানুষ এসে ভীড় করল। সবাই সাধ্যমতো চেষ্টা করল ইরাকে জাগানোর। কেউ ই পারল না। উঠোনে শুয়ে গড়াগড়ি খেতে লাগল ময়না। তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল ইরাকে। ইমার্জেন্সিতে নেওয়ার পর ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলে দিলেন ইরা মারা গেছে। আর হাসবে না সে। চিরদিনের জন্য তার হাসি বন্ধ হয়ে গেছে। অজ্ঞান হয়ে যায় ময়না। একমাত্র মেয়েকে হারানোর ব্যাথা সে নিতে পারছে না। ঘরের পিছনে কবর দেওয়া হয় ইরাকে। মাঝে মাঝেই রাতে পাগলের মত আচরণ করে ময়না। মেয়ের কবরের কাছে দৌড়ে চলে যায়। বিড়বিড় করে কথা বলে! ইরাকে ভুলতে পারছে না। খাওয়া দাওয়া করছে না। শুকিয়ে যাচ্ছে। অগত্যা ময়নাকে নিয়ে শহরে পাড়ি জমায় রাজিব।
ব্যাখ্যা:-
বাচ্চাদের আকাশে তুলে আবার কোলে নিয়ে আমরা অনেক আনন্দ পাই। বাচ্চারাও পায়। কিন্তু বাচ্চাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ম্যাচিউর হতে অনেকদিন সময় লাগে। খুব সহজেই সেগুলো আঘাতপ্রাপ্ত হতে পারে। ইরাকে যখন বারবার উপরে তুলা হচ্ছিল তখন গ্রাভিটির এগেইনস্টে তাকে বারবার উপরে তোলায় তার ব্রেইনের সাথে মাথার খুলির হাড্ডির বারবার ধাক্কা লাগছিল। যেহেতু তার ব্রেইন টাও নরম আর মাথার হাড্ডিটাও নরম তাই হাড্ডির সাথে বারবার ধাক্কা লেগে তার ব্রেইনের ধমনী ছিড়ে যায়। ধমনী শিরাতে রক্ত চলাচল করে। ব্রেইনের ধমনী ছিড়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয় মাথার ভিতরে। রক্তে থাকে গ্লুকোজ। গ্লুকোজ না পেলে ব্রেইন ৪-৫ মিনিটের ভিতর মারা যায়। সাথে জীবন্ত মানুষটাও। রক্ত সব ধমনী দিয়ে বের হয়ে আল্টিমেটলি ব্রেইন ডেথ হয় ছোট্ট ইরার। (সংগৃহিত)
তাই এসব ব্যাপারে জানুন, সতর্ক হোন, নিজে বাঁচুন, আপনার প্রিয়জনকেও বাঁচান। আপনাদের এসব বিষয় জানাতে আমাদের সচেতনতামূলক এই কলাম।


     এই বিভাগের আরো খবর