,

‘মহাদেব’র সন্ধানে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে নিখোঁজ স্মৃতি, লাশ উদ্ধার

জুয়েল চৌধুরী ॥ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেবাদিদেব ‘মহাদেব’ এর সন্ধানে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে নিখোঁজ হওয়া স্মৃতি রাণী কর্মকার (৩৫) এর লাশ মিললো হবিগঞ্জ শহরের খোয়াই নদীতে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে হবিগঞ্জ সদর থানার একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে খোয়াই নদীর কিবরিয়া ব্রীজের নিচ থেকে তার ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে। পরে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। স্মৃতি রাণী কর্মকার লাখাই উপজেলার পূর্ব বুল্লা গ্রামের রোহি দাশ কর্মকারের স্ত্রী। লাখাই থানার ওসি সাইদুর রহমান মৃতের পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে বানিয়াচং উপজেলার মার্কুলি গ্রামের জিতেন্দ্র কর্মকারের কন্যা স্মৃতি রাণীকে বিয়ে হয় রোহি দাশের। তাদের এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। ছেলে প্রতিবন্ধী। সম্প্রতি স্মৃতি রাণী আবারও অন্তস্বত্তা হলে তার গর্ভে যে সন্তান আসে তাকে সে তাদের দেবাদিব ‘মহাদেব’ বলে আখ্যা দেয় এবং স্বামীসহ পরিবারের লোকজনদের বলে তার গর্ভে মহাদেব জন্ম নেবে সে জন্য তাকে একটি উপাসনালয় বানিয়ে দিতে। কিন্তু বিষয়টি তারা হাসি ঠাট্টা করে উড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া রোহি দাশের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় সে নতুন ঘর বানিয়ে দিতে পারেনি। রোহি দাশ একটি ওয়ার্কশপের শ্রমিক। এদিকে ধীরে ধীরে তার পেটের সন্তানকে মহাদেব আখ্যা দিতে দিতে মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তিনমাস পূর্বে সে ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয় এবং তার স্বামীকে বলে তার পুত্র আসলে মহাদেব। পুনরায় ঘর বানিয়ে দিতে বলে। তার পূজা করা হবে। কিন্তু বিষয়টি আমলে নেয়নি রোহি দাশ ও তার পরিবার। একটা সময় সে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে। গত ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে তার তিনমাসের পুত্র সন্তানকে জা’র কাছে দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে কোথাও না পেয়ে লাখাই থানায় জিডি করে। এক পর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন হাসপাতাল মর্গে তার লাশ সনাক্ত করেন। এদিকে এ বিষয়টি গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে নানা ধরণের মুখরোচক আলোচনা শুরু হয়েছে। ওসি আরও জানান, যদিও এ বিষয়টি আমরা আমলে নিচ্ছি না। মৃত্যুর কারণ জানতে লাশের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রয়োজন। আজ বুধবার লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। রিপোর্ট এলে বিস্তারিত কারণ জানা যাবে।


     এই বিভাগের আরো খবর