,

ভ্যাকসিন নিবন্ধনে বিশৃঙ্খলা

সময় ডেস্ক ॥ একজন মিডিয়া কর্মী। করোনা প্রতিরোধী টিকা পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন গত সপ্তাহে। তেজগাঁও এলাকার বাসিন্দা তিনি। তাই নাক, কান, গলা ইনস্টিটিউটকে টিকা নেয়ার কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। এই মিডিয়া কর্মী জানান, সব প্রক্রিয়া মেনে অনলাইনে নিবন্ধন আবেদন করেছি। আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে বলে অনলাইনে জানানোও হয়েছে। তারিখ দিয়েছে এক মাস পরে ১৮ই মার্চ। অন্যদিকে ফজলুর রহমান ও আলমগীর হোসেন করোনার টিকার জন্য সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অনলাইনে নিবন্ধন করেছেন। এখনো টিকা নেয়ার তারিখ জানিয়ে কোনো এসএমএস আসেনি। ফলে তারা অনিশ্চয়তার
মধ্যে আছেন। কবে তাদের টিকা দেয়ার তারিখ আসবে। এ জন্য তারা ঢাকার বাইরে বা অন্য কোথাও যেতেও পারছেন না। শুধু মুশফিক বা ফজলুর রহমান ও আলমগীর হোসেনই নন, শত শত মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করেও অনিশ্চয়তায় আছেন। কেউবা গুনছেন অপেক্ষার প্রহর। নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় জটিলতার কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন জনগণ। আছে কিছু বিশৃঙ্খলাও। যেমন অনেকে বিভিন্ন সিস্টেমে ভুল করে ক্যাটাগরি পরিবর্তন করেও নিবন্ধন করছেন। সরকার নির্ধারিত বয়স হয়নি এমন মানুষও ভুল করে অন্য পেশার ক্যাটাগরিতে ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করে ফেলছেন। এতে অন্য নিবন্ধনকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। যদিও আইসিটি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, সবকিছু হচ্ছে সার্ভারের মাধ্যমে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে। এখানে সমস্যা হওয়ার কথা না। সারা দেশে গণটিকা দান কর্মসূচি শুরুর পর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখিয়ে অন স্পটে নিবন্ধন করে অনেকে টিকা নিয়েছেন। পরে অন স্পট নিবন্ধন করা বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কোনো কেন্দ্রে ৩০০ জনের টিকা দেয়ার সক্ষমতা থাকলেও মানুষ ভিড় করছে ৪০০ থেকে ৫০০ জন। এদিকে টিকা গ্রহীতার সংখ্যা বাড়ায় অনেক নিবন্ধনকারী টিকা না নিয়ে ফেরত গেছেন বলেও জানা গেছে। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ, বিশেষ করে যাদের স্মার্টফোন নেই, তাদের জন্য টিকাদান কেন্দ্রে এসে নিবন্ধনের সুযোগ রেখেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র মতে, গতকাল বিকাল ৬টা ৫ মিনিট পর্যন্ত টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন ১৭ লাখ ৪৬ হাজারের কিছু বেশি। টিকা নিয়েছেন ৯ লাখের বেশি মানুষ: সারা দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরুর ৭ম দিনে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩৫৩ জন। এর মধ্যে ঢাকায় নিয়েছেন ২২ হাজার ৯৮২ জন। অন স্পট নিবন্ধন বন্ধের পর থেকেই টিকা নেয়ার সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে। এ পর্যন্ত টিকা নিয়েছেন ৯ লাখ ৬ হাজার ৩৩ জন। গতকাল সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এই তথ্য জানানো হয়। প্রথম দিন টিকা নিয়েছিলেন ৩১ হাজার ১৬০ জন। গত ২৭শে জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে গণটিকাদান শুরু হয় ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে। করোনায় আরো ৮ জনের মৃত্যু: গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরো ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮ হাজার ২৭৪ জনে। নতুন করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩২৬ জন। মোট শনাক্ত ৫ লাখ ৪০ হাজার ৫৯২ জনে দাঁড়িয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ৪৬২ জন এবং এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৮৭ হাজার ২২৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এতে আরো জানানো হয়, ২১০টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ২২৫টি নমুনা সংগ্রহ এবং ১২ হাজার ৯০০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩৮ লাখ ৪৮ হাজার ১১৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২ দশমিক ৫৩ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।


     এই বিভাগের আরো খবর