,

বানিয়াচংয়ে অন্তস্বত্তা দুই সন্তানের জননীর মৃত্যু নিয়ে ধু¤্রজাল

জুয়েল চৌধুরী ॥ বানিয়াচং উপজেলার আওয়াল মহল গ্রামে সুমনা বেগম (২৩) নামের দুই সন্তানের জননীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর পর হাসপাতাল থেকে লাশ রেখে পালিয়ে যায় স্বামী। তবে ওই নারীর মৃত্যু নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। তার স্বামীর পরিবার বলছে সে বিষপান করায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আবার মৃতের পরিবারের দাবি তাদের মেয়েকে যৌতুকের টাকার জন্য হত্যা করেছে স্বামী ও তার পরিবার। সুমনা নামের ওই নারী ৬ মাসের অন্তসত্তা ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের লোকজন। নিহতের চাচা আব্দুল হাই জানান, ৫/৬ বছর আগে নবীগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের আব্দুস সহিদের কন্যা সুমনাকে বিয়ে দেয়া হয় বানিয়াচং উপজেলার আওয়াল মহল গ্রামের মধু মিয়া মেম্বারের পুত্র আল আমিনের নিকট। বিয়ের পর তাদের দুই ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। নিহতের মা দিলারা বেগম জানান, সম্প্রতি আবারও অন্তসত্তা হয়ে পড়ে সুমনা। আল আমিন অনেকদিন ধরেই তার মেয়ের কাছে যৌতুক দাবি করে। টাকা না দেয়ায় তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় আল আমিন। হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, গত ১১ অক্টোবর রাতে তার স্বামী আল আমিন তাকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে। পরে সে লাশ ফেলে রেখে কৌশলে পালিয়ে যায়। গতকাল মঙলবার সকালে খবর পেয়ে সুমনার পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ছুটে আসেন। তারা হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, সুমনার সাথে তার স্বামী আল আমিনের ঝগড়া বিবাদ চলছিল। তাদের ধারণা, আল আমিন তাদের মেয়েকে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মর্গে প্রেরণ করে। নিহতের স্বামীর ভাই জানান, সুমনা পাউডার জাতীয় বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষাক্রান্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। তবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের খাতা তল্লাশী করে দেখা যায়, ওই নারীকে সিলেট রেফার্ড করা হয়েছিল। রাতে তার স্বামী তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে রহস্যজনক কারণে সে মারা গেলে তাকে আবারও হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বামী আল আমিন। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোল্লা ওবায়দুর রেজা জানান, নিহত সুমনা কি কারণে মারা গেছে ময়না তদন্ত রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে। তবে দিনভর নাটকের পর লাশ গরমের কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে। পরে সন্ধ্যার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়। বানিয়াচং থানার ওসি এমরান হোসেন বলেন, শুনেছি তিনি বিষপান করে আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে তাকে হত্যার অভিযোগ পরিবার থেকে পেলে ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


     এই বিভাগের আরো খবর