,

ফেইসবুকে পরিচয়, তরুণীকে বিদেশে পাচার অতপর বিয়ে ও সহযোগীদের নিয়ে ধর্ষণ !!

মানব পাচারকারী চক্রের মূল হোতা নবীগঞ্জের সোহেল গ্রেফতার

জাবেদ তালুকদার : চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত ধর্ষণ এবং মানবপাচার মামলার মূল হোতা সোহেল মিয়া (২৭) কে মৌলভীবাজার জেলার সদর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯ শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্প।
জানা যায়- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়া মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়ার (২৭) সঙ্গে তিন বছর আগে পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার ডেমরা গ্রামের রুকশিপাড়া এলাকার জনৈক তরুণীর (২২) পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে তাদের মধ্যে ভালোবাসার গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সোহেল ভালোবাসার দুর্বলতার সুযোগে সাতক্ষীরা জেলার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাশ্ববর্তী দেশের একটি শহরে নিয়ে যায় ওই তরুণীকে। এ সময় ওই তরুণীকে আটকে রেখে দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য করে সোহেল। পরে বিয়ে করে তাঁরা। এরপর আবারও সোহেলের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় গত ১২ মে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়ন দিয়ে পাশ্ববর্তী দেশে পাচার করা হয় ওই তরুণীকে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৯ শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল উক্ত মামলার এজাহারনামীয় প্রধান আসামী নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের বেতাপুর গ্রামের কিবরিয়া আহমদের পুত্র সোহেল মিয়া (২৭) কে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০ ঘটিকায় মৌলভীবাজার সদর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
র‌্যাব-৯ জানায়, ঘটনার বিবরণ ও আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, প্রায় ০৩ বছর পূর্বে ফেসবুকের মাধ্যমে ওই তরুনীর সাথে পরিচয় ও সর্ম্পক হয়। সম্পর্কের জেরে সোহেল সাতক্ষীরা জেলায় সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে গত ২০২১ সালের মার্চ মাসের দিকে পাশ্ববর্তী একটি শহরে নিয়ে যায় এবং সেখানে ওই তরুণীকে আটকে রেখে ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেহ ব্যবসা করায়। তরুণী অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়েই চলতি বছরের জানুয়ারী মাসের দিকে দেশে ফিরে আসে। এর কিছু দিন পর সোহেল দেশে ফিরে এসে তরুণীকে মিথ্যা আশ্বাস ও প্রলোভন দেখায়। এতে ওই তরুণী যুবকের প্রলোভনে পড়ে এবং সোহেল ও তার সহযোগীরা তিনবিঘা করিডোর দিয়ে তরুনীকে দহগ্রামে নিয়ে যায়, এরপর সোহেল এবং তার অন্যান্য সহযোগীরা ওই তরুনীকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে মানবপাচারকারীর মূল হোতা সোহেল ও তার সহযোগীরা তরুণীকে পাশ্ববর্তী দেশে পাচার করে দেয়। গত ১৫ মে পাশ্ববর্তী দেশের একটি শহর থেকে কৌশলে ওই তরুণী বাংলাদেশে ফিরে আসে।
এ ঘটনায় ওই তরুণী সোহেলকে প্রধান আসামিসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানায় ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামী সোহেল নিজের কৃতকর্মের বিষয়টি স্বীকার করে। ঘটনায় অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-৯ এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানায় র‌্যাব। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ সহ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতারকৃত আসামীকে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।


     এই বিভাগের আরো খবর