,

কিডনির সমস্যায় ভুগছেন? এই ওষুধগুলোতে সংযমী হোন

সময় ডেস্ক : মানুষের দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের একটি হলো কিডনি। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, খাদ্যাভ্যাস, দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগসহ (যেমন রক্তচাপ, বহুমূত্র ইত্যাদি) নানা কারণে কিডনিজনিত জটিল রোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এরই মধ্যে যাঁরা কিডনিজনিত জটিল রোগে ভুগছেন, তাঁরা ওষুধ খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। কারণ, অন্যের জন্য সাধারণ ওষুধও তাঁদের জন্য মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে একজন কিডনি রোগীর যেসব সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে, তা হলো:
১. যতটা সম্ভব, কম ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। কারণ, বেশির ভাগ ওষুধ শরীর থেকে বের করার কাজটি করে কিডনি। কম ওষুধ সেবনে কিডনির ওপর চাপ কম পড়ে।
২. সাধারণ সর্দি, কাশি, পেটব্যথার জন্য যেসব ওষুধ পাওয়া যায়, তা খাওয়ার ব্যাপারে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।
৩. সাধারণ সমস্যার জন্য প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া পদ্ধতি এবং প্রতিরোধব্যবস্থা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
৪. যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন (যেমন রক্তচাপ, বহুমূত্র, শ্বাসকষ্ট) রোগে ভুগছেন, তাঁরা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী কোন ওষুধ খেতে পারবেন, তা জেনে নেবেন।
৫. যে ওষুধগুলো কিডনির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে, সেসব ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
১. ব্যথার ওষুধ : ব্যথার ওষুধ কিডনির রক্ত সরবরাহ কমায়, তাই সব ধরনের ব্যথার ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. চর্বি কমানোর ওষুধ : কিডনিজনিত জটিল রোগে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের চর্বি কমানোর ওষুধ খাওয়ার ব্যাপারে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ, চর্বি কমানোর ওষুধ কিডনির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এ ক্ষেত্রে চর্বি কমানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতি যেমন শসা, সবুজ শাকসবজি খাওয়া, কম চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস, প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম, হাঁটার অভ্যাস করতে হবে এবং ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩. গ্যাসের ওষুধ : বুক জ্বালাপোড়া বা গ্যাসের সমস্যা সর্বজনীন সমস্যার মধ্যে অন্যতম। এই সমস্যার সমাধান হিসেবে যে অ্যান্টাসিড বা ম্যাগনেশিয়াম-সংযুক্ত ওষুধ পাওয়া যায়, তা খাওয়া যাবে না। কারণ, তাতে শরীরে খনিজ লবণের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। এ জন্য কম মসলাজাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সঠিক সময়ে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
৪. কোষ্ঠকাঠিন্য : খুব সাধারণ একটা সমস্যা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য। এর সমাধান হিসেবে বেশি বেশি শাকসবজিজাতীয় খাবার খেতে হবে। প্রয়োজন হলে ইসবগুল এবং বাজারে যে সিরাপ পাওয়া যায়, তা খাওয়া যাবে। তবে ম্যাগনেশিয়াম-সংযুক্ত ওষুধ এবং বেশি পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. ঘুমের সমস্যা : ঘুমের সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাওয়া যাবে। তবে যতটা সম্ভব, ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, বেশি ঘুমের ওষুধ সেবনে কিডনি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৬. অ্যান্টিবায়োটিক : যাঁরা কিডনিজনিত জটিল রোগে ভুগছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতাও বেড়ে যায়। সেসব ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। কারণ, বেশির ভাগ অ্যান্টিবায়োটিকেরই কিডনির ওপর প্রভাব আছে। কোনো কোনোটির ডোজ বা মাত্রা পরিবর্তনের দরকার হয়।
ওষুধ যেমন জীবন রক্ষা করতে পারে, তেমনি ক্ষতিরও কারণ হতে পারে। কোনো ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করবেন না। আপনার যদি কিডনির জটিলতা থাকে, তাহলে ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই বিষয়টি চিকিৎসককে অবহিত করবেন।


     এই বিভাগের আরো খবর