,

খালেদা জিয়ার কৌশলের পাল্টা কৌশলে সরকার

সময় ডেস্ক ॥ বিএনপি ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে সরকারের ইমেজ নষ্ট করার চেষ্টা করছে বলে মনে করছে সরকার ও আওয়ামী লীগ। সরকারের ইমেজ নষ্ট করা ও সরকারের বিরুদ্ধে দেশে এবং বিদেশে প্রচারণা চালিয়ে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করছে। এই ইস্যুতে তারা আন্দোলনে নামার নতুন প্লট তৈরি করতে চাইছে। পাশাপাশি তারা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে না পারলেও যাতে সরকারকে বাধ্য করতে পারে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করার সিদ্ধান্ত নিতে ও ওই সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচন করাতে। এই জন্য তারা দেশে-বিদেশে সব জায়গায় প্রচারণা চালাচ্ছে। সরকারের কাছে এ ধরনের তথ্য রয়েছে। এ জন্য খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নানা কৌশলও ঠিক করছেন বলে গোয়েন্দাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছে সরকার। সেই কৌশল যাতে কোনোভাবেই তারা সফল করতে না পারে সে জন্য সরকারও বিএনপি, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সব পরিকল্পনা ও কৌশল ব্যর্থ করে দেওয়ার কৌশল ঠিক করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কঠোর হওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বিএনপি যাতে কোথাও কোনো সমাবেশ করতে না পারে, সরকার বিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড করতে না পারে সে জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নিতে বলেছেন। এ ধরনের কোনো চেষ্টা হলে উপরের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা না করে ও সময় নষ্ট না করে যেকোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের। সেই হিসেবে ২০১৯ সালের আগে কোনোভাবেই সরকার, আওয়ামী লীগ বিএনপির কোনো পরিকল্পনা সফল করতে দিবে না বলে ঠিক করেছে। সূত্র জানায়, সরকার এটাও মনে করছে বিএনপি তিন মাস জ্বালাও-পোড়াও করে দেশে পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ মেরে আন্দোলন সফর করতে না পেরে এখন নতুন কৌশল নিয়েছে। এই কৌশলের অংশ হিসেবে তারা বিদেশিদের হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডে জড়িত এখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই ধরনের কোনো প্রমাণ বের করতে পারেনি। বিএনপির এক নেতার ভাইকে রংপুরে জাপানি নাগরিক হত্যার ঘটনায় আটক করলেও অন্য কাউকে এই ঘটনায় দোষী চিহ্নিত করতে পারেনি। তবে সরকার আশাবাদী তারা সেটা বের করতে পারবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে, বিদেশি হত্যাকাণ্ড দেশি ও বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র। দুই বিদেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা বিএনপি-জামায়াতের জড়িত থাকার বিষয়টি মাথায় রেখে ও তাদের সন্দেহের তালিকায় রেখেই কাজ করছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া দেশের মানুষকে হত্যা করে সরকার পতন ঘটাতে না পারায় কৌশল পাল্টেছেন। তিনি এখন বিদেশিদের হত্যা করে সরকারের পতন ঘটাতে চান। ক্ষমতায় থাকাকালীন হাওয়া ভবনে বসে জঙ্গিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান এবং তাদের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। বেগম জিয়ার আমলে পুলিশি পাহারায় রাজশাহীতে জেএমবির জঙ্গিরা মহড়া দিয়েছে। সারা বাংলাদেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা করে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমরা এই ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত যে বিদেশিদের হত্যা করে দেশে এমন একটা অবস্থা তৈরির চেষ্টা চলছে যে, বাংলাদেশে বিদেশিদের বসবাস করার জন্য নিরাপদ নয়। সেটা করে সরকারের বিরুদ্ধে বিদেশিদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ এমন অভিযোগ এনে নতুন করে আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে। সেই সঙ্গে এই চেষ্টাও হচ্ছে এটাকে কাজে লাগিয়ে বিএনপি ও জামায়াত নতুন করে আন্দোলনের প্লট তৈরি করতে চাইছে। তারা চলতি বছরের শুরুতে তিন মাসের বেশি আন্দোলন করেছে। এতগুলো মানুষ হত্যা করেছে। জ্বালাউ-পোড়াও করেছে এর পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি করেছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে মারাÍক ক্ষতি করেছে। তাদের ওই আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে এখন তারা চেষ্টা করছে যাতে নতুন করে আন্দোলন করলে বিদেশিদের সহায়তা পাওয়া যায়। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, সরকার নিজেরা ২০১৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার জন্য এমন করছে। নিজেরা সব করে বিএনপির উপর দোষ চাপাতে চাইছে। সরকারের সঙ্গে জনগণ নেই। বিএনপির সঙ্গে আছে। এই কারণে সরকার ভীত। তারা মনে করে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সরকারি দল পরাজিত হবে। বিএনপি জোট ক্ষমতায় আসবে। এ জন্য সরকার এখন খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, বিএনপির মাঠের সফল নেতাদের সবাইকে দোষারোপ করছে। সবার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে কাবু করার চেষ্টা করছে। সরকার জনপ্রিয় হলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে সেটা প্রমাণ করুক। জনগণের রায়ের প্রতি সরকারের আস্থা নেই বলেই তারা ক্ষমতায় জোর করে থাকার চেষ্টা করছে। বিদেশিরা বার বার নিরাপত্তাহীনতার কথা বলার পরও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। তাদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করতে পারছে না। এটা সরকারের ব্যর্থতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা। বিদেশি হত্যায় বিএনপির কেউ জড়িত থাকলে সেটা প্রমাণ করা হোক। তাদের চিহ্নিত করা হোক। তারা বিএনপি জোটকে ঠেকানোর জন্য যত কৌশল করুক না কেন কোনো লাভ হবে না। আমরাও বসে থাকব না। খালেদা জিয়া নিজের জন্য বাড়ি ভাড়া নেননি অথচ বলা হচ্ছে তিনি বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন। তার ছোট পুত্রবধূর জন্য একটি বাড়ি ভাড়া করা হয়েছে।


     এই বিভাগের আরো খবর