,

পল্লী বিদ্যুতের নতুন সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান শায়েস্তাগঞ্জে আ’লীগ নেতাদের হামলায় কর্মকর্তা-কর্মচারী আহত

শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তরে আওয়ামীলীগ নেতাদের হামলায় নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। জানাযায়, গত ২৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির শায়েস্তাগঞ্জ সদর দপ্তর কার্যালয়ে কর্মকর্তা কর্মচারী ও ঠিকাদারদের উপর আওয়মীলীগ নেতা কর্মীরা মারধোর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ঘটনাটি হপবিস বিদ্যুতের নতুন লাইন সংযোগ দিতে দেরী হওয়ায় বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকতা-কর্মচারী সহ ঠিকাদারদের উপর হামলায় ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা হলেন হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (হপবিস) শায়েস্তাগঞ্জ সদর দপ্তর কার্যালয়ের রিটেইনার ইঞ্জিনিয়ার ডি.এম রায়হানুল ইসলাম (৪৬), প্রকল্প শাখার প্রকৌশলী আমজাদুর রহমান শিপন (৪৮), স্টোর কিপার মুর্শেদুল আলম (৬২) ও ঠিকাদার আবুল কালাম (৫০)। তাদের মধ্যে আবুল কালাম ও মুর্শেদুল আলম কে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করার পর কোন আরোগ্য না হওয়ায় দুজন কে গত কাল সোমবার ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে কিন্তু ষ্টোর কিপার মুর্শেদুল আলম মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। হপবিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাযায়, গত ২৩ নভেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের ও ব্যকস সভাপতি মোঃ সালেক মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর মাসুদুজ্জামান মাসুকের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২২ জন স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মী হপবিস এর শায়েস্তাগঞ্জ সদর দপ্তর কার্যালয়ে যান। তারা জেনারেল ম্যানেজার আলহাজ্জ মোঃ রেজাউল হক এর কক্ষে প্রবেশ করে শায়েস্তাগঞ্জ পৌর-এলাকার বিদ্যুতের নতুন সংযোগের কাজ শেষ করতে দেরী হওয়ায় কারণ জানতে চান আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা। হপবিস জেনারেল ম্যানেজার এসময় আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীকে জানান, এটি প্রকল্পের কাজ। এই কাজ কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রন করা হয়। জেনারেল ম্যানেজার এ কথা বলার পর আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা রায়হানুল ইসলাম, আমজাদুর রহমান শিপন, মুর্শেদুল আলম ও ঠিকাদার আবুল কালাম সহ ৫/৬ জনকে এলোপাতারি ভাবে কিল-ঘুষি সহ লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। প্রায় ২০ মিনিট ধরে তান্ডব চালিয়ে ফিরে আসেন আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনা হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সি.সি ক্যামেরায় ধরা পরে। হপবিস জেনারেল ম্যানেজার আলহাজ্জ মোঃ রেজাউল হক অভিযোগ করেন, গত ২৩ নভেম্বর শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের ও ব্যকস সভাপতি মোঃ সালেক মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর মাসুদুজ্জামান মাসুক সহ ২০ থেকে ২২ জন লোক এসে তার কাছে জানতে চান, শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার বিদ্যুতের নতুন সংযোগের কাজ কবে শেষ হবে। জেনারেল ম্যানেজার এই কাজ কেন্দ্র থেকে নিয়ন্ত্রন করার কথা জানালে, আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে হপবিস সদর দপ্তরের ভিতরে প্রবেশ করে কর্মকতা-কর্মচারী ও ঠিকাদারদের উপর কিল-ঘুষি এবং এলোপাতারি ভাবে মারধোর করেন এবং হপবিসের সামনে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের জায়গা জোর পূর্বক দখল করে দোকান বসিয়ে ব্যবসা করে টাকা উপার্জন করছে স্থানীয় আ’লীগ নেতারা। এতে হপবিসের সামনে ভূমি দখল করায় সদর দপ্তরের কার্যক্রম বিঘœ ও সৌন্দর্য নষ্ঠ হচ্ছে। বিষয়টি জেনারেল ম্যানেজার, হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও হবিগঞ্জ-লাখাই আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্জ এড. মোঃ আবু জাহির কে জানিয়েছেন। এদিকে শায়েস্তাগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ সালেক মিয়া দাবী করেন, তিনি বা তার লোকজন পল্লী বিদ্যুতের কাউকে মারধোর করেন নি। উত্তেজিত জনতা মারধোর করেছে। কারন দেড় বছর আগে হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মোঃ আবু জাহির শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার ১৬ কিলোমিটার এলাকায় বিদ্যুতের নতুন সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নেন। কিন্তু বিদ্যুৎ অফিসে এ কাজ নিয়ে টালবাহানা করছে দীর্ঘদিন যাবত। এই কারণে স্থানীয় লোকজন হপবিসে হামলা চালিয়েছে। এ বিষয়টি সমাধান করার জন্য হবিগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল দায়ীত্ব নিয়েছেন কিন্তু হপবিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান শালিসে না গিয়ে উচ্চ পর্যায়ে আইনের প্রতি এগিয়ে যাচ্ছেন এবং গতকাল সোমবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিদ্যুতের প্রকল্পের নতুন সংযোগের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।


     এই বিভাগের আরো খবর